টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কৃষক ও মুদি দোকানদার মেছের আলীর মামলার আসামীরা তাদের অপকর্ম ধামাচাপা দিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশের হুমকিও দিচ্ছেন।
এসবের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন মির্জাপুরের সিংজুরী গ্রামের মৃত্তিকা বিজ্ঞানী, কৃষিবিদ দুলাল মিয়া। এরপর থেকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে দুলাল মিয়া বলেন, উপজেলার সিংজুরী গ্রামে আশুতোশ সরকার, গৌড় সরকার, নুরুল ইসলামসহ গ্রামের একাধিক ব্যক্তি একটি সংঘবদ্ধ চক্র গড়ে তুলেছেন। যার বিস্তার ও পরিধি সমগ্র দেশব্যাপী। চক্রটি অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে সাংগঠনিক এজেন্ডাতে পরিণত করে মেছের আলীর জমি বেআইনীভাবে রতন বিশ্বাসকে দখল বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
এ বিষয়ে মেছের আলী ক্রয়সূত্রে লিখিত দলিলমূলে ২৭ বছর ভোগদখলরত অবস্থায় গত ৪ মার্চ ১৪৪ ধারা মামলা করায় আদালত কর্তৃক দখলাবস্থা বজায় রাখার আদেশ হলে ২৪ শে মার্চে রতন বিশ্বাস হুমকির একটা মিথ্যা মামলা দায়ের করে।
এছাড়াও মেছের আলী ভুমি বিষয়ে ঘোষণামূলক মামলা করলে গৌড় সরকার গং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার সহকারে মন্দিরে সমাবেশ করে নিজ সামাজিক মসজিদে ঈদের নামাজ, কোরবানি নিষিদ্ধ করে তার মুদি দোকান বন্ধ করাসহ এক ঘরা করে। অতঃপর বাচ্চু মিয়া, বাদশা মিয়াকে দিয়ে নামজারীতে আপত্তি করিয়ে মেছের আলীর জমিতে,গৃহে দুই দফায় চুরি, চাঁদাদাবি করে ।
এ ব্যাপারে মেছের আলী থানায় অভিযোগ করেছেন। নালিশীসহ বেনালিশী ভূমিতে মোট পাঁচবার তদন্ত হলে প্রতিটি তদন্তে মেছের আলীর দাবি ও অভিযোগের সত্যতা মিলে। ভূমি বিষয়ক কর্মকর্তার তিনটি তদন্ত প্রতিবেদন, আদালতের আদেশ মেছের আলীর পক্ষে। ২৮ শে অক্টোবর ঘোষণামূলক মামলায় বাদিপক্ষে মেছের আলীর দীর্ঘকাল ভোগদখল বিদ্যমান মর্মে নালিশী ভূমিতে স্থিতিবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ হয়।
তিনি আরো বলেন, গত ৭ মে গৌড় সরকার গং এর দ্বারা ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে মেছের আলী স্বপরিবারে আমার বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার কারণে সন্ত্রাসীরা নিজ সমাজে আমারও ঈদের নামাজ, কুরবানী নিষিদ্ধ করে। আমাকে হুমকি দিচ্ছে, গুম, হত্যা, চাকরিচ্যুতি, ডিমোশন, পোস্ট ব্লক ইত্যাদি।
সন্ত্রাসী চক্রটি আদালতের আদেশ, থানার নোটিশ অমান্য করে প্রতিনিয়ত ধারাবাহিকভাবে বহুমুখী অপরাধ করছে। সর্বশেষ ১১ ই ডিসেম্বর নিজ জমিতে কাজকরাকালীন সময়ে মেছের আলীসহ কয়েকজনের উপর সন্ত্রাসী হামলা করলে মেছের আলীর ছোট ছেলে সুকুর আলী মারাত্মকভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়।
গৌড় সরকার গং মিথ্যাচার করে হয়রানী করার জন্য ষড়যন্ত্র করলে মেছের আলী নিরুপায় হয়ে এসব অপকর্মের প্রতিকার চেয়ে গত ১৫ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার মহাপরিচালকের বরারর একটি লিখিত আবেদন করেছে।
৫ টি পত্রিকায় সন্ত্রাসীদের অপকর্ম ও আইন বিরুধী আচরণের সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় চক্রটি গত ২২ ডিসেম্বর সিংজুরী নাট মন্দিরের সামনে একটি মানববন্ধন করে এবং হিন্দু, বৌদ্ধ, ঐক্য খ্রিস্টান পরিষদের ইউনিয়ন সভাপতি পরিচয়ে গৌড় সরকার নেতৃত্ত্ব দেন।
মানববন্ধনে দুলাল মিয়া এবং মেছের আলী ও শুকুর আলীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য দেয়া হয়। তারা নিরীহ সংখ্যালঘু ও গৃহবধু শব্দগুলো অসৎ ও নোংরা কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে যা তাদের পূর্বপরিকল্পনা।
তিনি আরও বলেন, আদি হতে অদ্য পর্যন্ত আমার পরিবারের কাছে সকল ধর্মের, সকল পেশার ব্যক্তি, পরিবার নিরাপদ। যারা মিথ্যাচার করছেন, আমাদের পরিবার নিয়ে মিথ্যা, মানহানিকর, অগ্রহণযোগ্য বিবৃতি দিয়েছেন তারাও আমাদের পরিবারের কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধ হতে শুরু করে এ যাবত নিরাপদ আশ্রয় পেয়েছেন। এ চক্রের হাত থেকে এলাকাকে রক্ষা করার জন্য তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
কামরুল হাসান
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি