পারিবারিক,ব্যক্তিগত, বন্ধুদের সাথে মান অভিমান সহ নানা সমস্যায় স্বনামধ্য উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের বিদ্যাপিঠ সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গত ২০২১ সালে ১০১ জন শিক্ষার্থী আত্মাহত্যা করেছেন বলে বেসরকারি সংস্থা ‘‘আচল ফাউন্ডেশন’’ তুলে ধরেছে।
২০২০ সালে দেশে ৪২ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছিল বলে রেকর্ড করেছিল বেসরকারি সংস্থা ‘আঁচল ফাউন্ডেশন’। শনিবার (২৯ জানুয়ারী) সমীক্ষা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। ২০২১ সালের জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক, অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে পাওয়া তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে সংস্থাটি।
তথ্য সূত্রে জানা যায় আত্মহত্যা করাদের মধ্যে ২৪ দশমিক ৭৫ শতাংশই বিভিন্ন ধরনের সম্পর্কের অবনতির কারণে করেছেন। পারিবারিক সমস্যার কারণে, যা ১৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে ১৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ, পড়াশোনা-সংক্রান্ত কারণে ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ, আর্থিক সমস্যায় ৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ, মাদকাসক্ত হয়ে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং অন্যান্য কারণে ২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন।
গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার যে সংখ্যা জানিয়েছে আঁচল ফাউন্ডেশন তার মধ্যে ৬২ জনই সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। মেডিক্যাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন,প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ জন এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন।
১০১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯ জনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের, এরপরই আছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় জন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ জন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চার জন।
সংস্থাটিরে হিসাবে, ২০১৮ সালে ১১ এবং ২০১৭ সালে ১৯ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছিলেন।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তের পর থেকে ১৫ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। সে সময় মানসিক চাপে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যায়। সে বছর দেশে ৫০ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছিল, যার ৪২ জন ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
সমীক্ষার জরিপের তথ্য তুলে ধরে আঁচল ফাউন্ডেশনের গবেষকরা জানান, গত এক বছরে যারা আত্মহত্যা করেছেন তাদের মধ্যে ডিসেম্বরে সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটেছে। এই মাসে গড়ে ১৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ আত্মহত্যা করেছে যা সংখ্যায় ১৫ জন। সবচেয়ে কম এপ্রিলে, যা ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ বা ২ জন।
দেখা গেছে, গ্রীষ্মকালের চেয়ে শীতকালে আত্মহত্যার হার বেশি। স্নাতক তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার তুলনামূলক বেশি, যা শতকরা হিসাবে ৩৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
আবুল কাশেম রুমন
সিলেট প্রতিনিধি
Discussion about this post