করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের দাপটে সারাদেশে এখন সক্রিয় রোগীর সংখ্যা দুই লাখেরও বেশি। করোনা শুরুর পর থেকে এক বছর ১০ মাসের মধ্যে বর্তমান আক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো সোমবারের (৩১ জানুয়ারি) বুলেটিনে জানা যায়, দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ লাখ ৯৮ হাজার ৮৩৩ জন।
আর করোনা শুরুর পর থেকে এই পর্যন্ত ২৮ হাজার ৩৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১৫ লাখ ৬৮ হাজার ২১৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছে।
এই হিসাবে দেশে বর্তমানে সক্রিয়ভাবে করোনা রোগীর সংখ্যা ২ লাখ ২ হাজার ২২৬ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে করোনায় সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। আর উপসর্গবিহীন আক্রান্তরা এই হিসাবের মধ্যে আসেইনি।
২০২১ সালের মাঝামাঝিতে যখন করোনার ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণে দেশের স্বাস্থ্যখাতে বিপর্যস্ত অবস্থা তৈরি হয়েছিল, তখনও সক্রিয়ভাবে করোনা রোগীর সংখ্যা দুই লাখ ছাড়ায়নি। ডেল্টার ধাক্কা সামলে করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল গত বছরের শেষ ভাগে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বরও করোনায় সংক্রমিত সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ৩৬৬ জন। ৩১ ডিসেম্বরের পর মাত্র এক মাসের মাথায় সোমবার (৩১ জানুয়ারি) ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কারণে করোনায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৬০ জন।
এসব রোগীদের মধ্যে সারাদেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন ৩ হাজার ৪৩ জন।
০২১ সালের পুরো ডিসেম্বরজুড়ে করোনায় দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ২০০ থেকে ৩০০ জন। আর শনাক্তের হার নেমে এসেছিল ২ শতাংশের নিচে।
কিন্তু বিশ্বময় করোনার অতি সংক্রামক নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের বিস্তার শুরুর পর জানুয়ারির শুরু থেকে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা আবারও বাড়তে থাকে।
জানুয়ারির প্রথম দিনও যেখানে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল চারশর নিচে, সেখানে বর্তমানে তা ১৫ হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার হচ্ছে ৩০ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সোমবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ১৩ হাজার ৫০১ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এই সময়ের মধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩১ জনের। আর করোনা থেকে সেরে উঠেছেন ২ হাজার ৫৬৮ জন।
তাদের হিসাবে দিনে ১৩ হাজারের বেশি আক্রান্ত হচ্ছে অথচ দিনে সুস্থ হয়ে উঠছে মাত্র আড়াই হাজার জন। সোমবার নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৭৭ শতাংশে। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ।
যে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে ২০ জন পুরুষ, ১১ জন নারী। তাদের মধ্যে ১৬ জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। বাকিদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের দুই জন, রাজশাহী বিভাগের একজন, খুলনা বিভাগের পাঁচ জন, সিলেট বিভাগের একজন, রংপুর বিভাগের তিন জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন তিন জন।
আর বয়সের হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ২০ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, পাঁচ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, দুই জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, একজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর, দুই জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছর এবং একজনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল।
সূত্র : রাইজিংবিডি