শিক্ষার্থীদের দাবি ও প্রস্তাব গুরুত্ব সহকরে শুনেছি কি ভাবে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা যায় একই সাথে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সার্বিক পরিবেশ কী ভাবে সুন্দর রাখা যায় এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকটি প্রস্তাব করেছেন শিক্ষার্থীরা। আমরা তাদের প্রস্তাব গুরুত্ব সহকারে শুনেছি। আমাদের ভালো আলোচনা হয়েছে বলে জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তাদের দাবির মধ্যে অধিকাংশ দাবিই পূরণ হয়েছে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, যে দাবিগুলো এখনও পূরণ হয়নি আমরা আশাকরি খুব শীঘ্রই ওই দাবি গুলোরও সমাধান দিতে পারবো। তাছাড়া শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য হিসেবে ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে নিজ দায়িত্ব পালন করে যেতে পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এমন একটি দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার ইশফাকুল হোসেন।
উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে টানা কর্মসূচির মধ্যে শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রীর বিশ্ববিদ্যালয় সফরের দিকে তাকিয়ে ছিল শিক্ষার্থীরা। মন্ত্রী সেখানে কথা বললেন দুই পক্ষের সঙ্গেই।
প্রথমে মন্ত্রী যান শিক্ষার্থীদের কাছে। তাদের দাবির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না দিয়ে বললেন, উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়টি রাষ্ট্রপতির (আচার্য) কাছে তুলবেন। অন্যান্য দাবি পূরণ করা হবে পর্যায়ক্রমে।
এরপর মন্ত্রী যান উপাচার্যের কার্যালয়ে। শিক্ষকদের সঙ্গে দীপু মনির বৈঠকে যোগ দিতে নিজ বাস ভবন থেকে ২৬ দিন পর বের হয়ে সেখানে যান উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। সেখানে সংক্ষিপ্ত বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে এবার কিছু বলেন নি দীপু মনি। প্রায় ১৫ মিনিটের আলোচনা শেষে উপাচার্যের বক্তব্যও পাওয়া যায়নি। পরে কথা বলেন রেজিস্ট্রার ইশফাকুল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘মন্ত্রী আলোচনায় শিক্ষকদের প্রতি ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি উপাচার্যকে তার দায়িত্ব চালিয়ে যেতে বলেছেন।
কোষাধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ‘মন্ত্রী বলেছেন, উপাচার্যের বিষয়ে শিক্ষার্থীরা যেসব অভিযোগ তুলেছে তার তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত শেষে রাষ্ট্রপতিই (আচার্য) সব সিদ্ধান্ত দেবেন। ক্যাম্পাসের অচলাবস্থা দ্রুত নিরসন করতে শিক্ষামন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন এমন একটি কথাও জানান আনোয়ারুল।
বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সব ঘটনার জন্য শিক্ষার্থীসহ সবার কাছে উপাচার্যকে দুঃখ প্রকাশ করার জন্য বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী, জানান অধ্যাপক আনোয়ারুল।
এর আগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দুপুরে সার্কিট হাউজে আলোচনায় বসেন মন্ত্রী। বৈঠক শেষে তিনি জানান, রাষ্ট্রপতিই (আচার্য) উপাচার্যের নিয়োগ বা অপসারণের সিদ্ধান্ত দেন। এ কারণে শাবি উপাচার্যের অপসারণ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সব বক্তব্য রাষ্ট্রপতিকেই অবহিত করবেন। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, ‘তাদের (শিক্ষার্থী) যা যা বক্তব্য আছে, পুরো ঘটনা সম্পর্কে তাদের কী বলার আছে, তা সব বর্ণনা করেছে। তাদের সঙ্গে ভালো আলোচনা হয়েছে। আমরা তাদের কথা বুঝতে চেষ্টা করেছি।
তাদের যে দাবি আছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান, শিক্ষকতার মান, শিক্ষার সার্বিক পরিবেশ কী ভাবে উন্নত করা যায় সেসব তারা নিজেরাই চিন্তা করে বেশ কিছু প্রস্তাব দাঁড় করিয়েছে। তাদের দাবিগুলোর বেশ কিছুই পূরণ করা হয়েছে। বাকি যেগুলো আছে তা সক্রিয় বিবেচনায় নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব পূরণের উদ্যোগ নেব।
এরপর মন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের দাবিগুলো যৌক্তিক বলে জানান। সেই সঙ্গে দাবি পূরণে পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাসও দেন।
আবুল কাশেম রুমন
সিলেট প্রতিনিধি
Discussion about this post