রেডিমেড দর্জি শ্রমিক ফেডারেশনের উদ্যোগে আজ দুপুর ২.৩০ টায় বাহাদুর শাহ পার্কে সমাবেশ অনুষ্ঠিত। সমাবেশে দর্জি শ্রমিক ইউনুস হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি জহিরুল ইসলাম, সহ—সভাপতি মানস নন্দী, সদস্য মানিক হোসেন, দর্জি শ্রমিক ফেডারেশনের উপদেষ্টা মাসুদ রানা, দর্জি শ্রমিক ইদ্রিস আলী। সমাবেশ শেষে একটা মিছিল নিয়ে সদরঘাটে অবস্থিত লেডিস মার্কেটের মালিক সমিতির অফিস পর্যন্ত যাওয়া হয়। এরপর একটি প্রতিনিধি দল মালিক সমিতিকে স্মারকলিপি প্রদান করে।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের মানুষের পোশাকের চাহিদা পূরণ করে যে রেডিমেড দর্জি শ্রমিকরা তাদের জীবনের কাহিনী কেউ জানে না। তাদের তৈরি পোশাক পরে মানুষের সৌন্দর্য্য বাড়ে, মালিকদের মুনাফা বাড়ে। কিন্তু এই শ্রমিকদের মজুরি বাড়ে না, তাদের অবস্থার কোন উন্নতি হয় না। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, ১৫ বছর পরে শার্ট সেলাইয়ের মজুরী আন্দোলনের চাপে ২ টাকা বৃদ্ধি করেছিল। কিন্তু গত ৬ বছরে এই শ্রমিকদের মজুরি বাড়েনি।
এছাড়াও আছে হাজার সমস্যা। কাজ করে শ্রমিকদের যা পাওনা হয় তা তারা মাসিক ভিত্তিতে পায় না। মালিক তাদের দৈনিক ২০০ টাকা খরচ দেয়। এর বাইরে কাজের বাকী টাকা ঝুলে থাকে চাঁদ রাতের (ঈদের আগের রাত) জন্য। রেডিমেড দর্জি কারখানাগুলোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আলো—বাতাসহীন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, নেই পযার্প্ত টয়লেট। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শ্রমিকরা কাজ করলেও মালিকদের পক্ষ থেকে নেই কোন নাস্তার ব্যবস্থা, নেই বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ। ঈদ বা শীতসহ বিভিন্ন পোষাক কেনার মৌসুমে মধ্যরাত পর্যন্ত, কখনও টানা ২৪ ঘণ্টা পর্যন্তও কাজ করে শ্রমিকরা। মালিকরাও বেশি দামে মাল বিক্রি করে । কিন্তু ঈদ বোনাস বা সিজন বেনিফিট কোনটাই পায় না শ্রমিকরা।
নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনায় সবচেয়ে কষ্টকর জীবন যাপন করেছে গরিব—শ্রমজীবী মানুষ। মাসের পর মাস কাজ ছিল না। কেমন করে পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার চলেছে কোনো মালিক খোঁজ পর্যন্ত রাখে নি। অথচ বছরের পর বছর শ্রমিকদের শ্রমে মালিকের মুনাফা বেড়েছে।
নেতৃবৃন্দ দর্জি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
বার্তা প্রেরক
ভজন বিশ্বাস
Discussion about this post