রাজধানীর নীলক্ষেতের বাকুশা হকার্স মার্কেটে বইয়ের দোকানে লাগা আগুনের ঘটনায় প্রায় ৭০-৭৫টি বইয়ের দোকান পুড়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে এ ঘটনায় অন্তত কোটি টাকার বই পুড়ে গেছে। শুধু আগুন নয়, ফায়ার সার্ভিসের পানিতেও দোকান-ফুটপাতের বইগুলো ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে।
মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা পৌনে ৮টার দিকে আগুন লাগে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিটের চেষ্টায় রাত ৮টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রোজিনা আক্তার।
ফুটপাতের বই বিক্রেতা আলাউদ্দিন বলেন, আগুনে হয়তো আমার বইগুলো পুড়ত না তবে এখন সব শেষ। অন্তত এক লাখ টাকার বই পানিতে ভিজে গেছে।
রোমেনা বেগম নামে এক নারী আহাজারি করে বলেন, সরকারের কারণেই আজকে এই অবস্থা। প্রতি বছর এখানে আগুন লাগে, তবুও সরকারের দৃষ্টি নেই। আজ আমার ছেলের বইয়ের দোকান শেষ হয়ে গেছে। আমি সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করছি এবং আগামীতে যেন এমন ঘটনা না ঘটে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, ৯ লাখ টাকা লোন দিয়ে আমার ছেলে এই দোকান দিয়েছে। এখন এই লোন কে দেবে? সরকার কেন বিল্ডিং করে দেয় না, এই দায় সরকারের।
আগুন লাগার পর অনেক বই বিক্রেতা দোকান থেকে তাদের বই বের করে নিয়ে আসতে পারলেও, অধিকাংশই পারেননি। কিছু দোকানদার তাদের দোকান থেকে সব বই রাস্তায় এনে রাখেন। এরপর ফায়ার সার্ভিসের পানিতে সেসব বই নষ্ট হয়ে যায়।
নিউমার্কেট থানার ডিউটি অফিসার শাহীনুর আক্তার বলেন, আগুন লাগার পর দ্রুতই ছড়িয়ে যায়। কোনো হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এবং পুলিশ সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন।
ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টাফ অফিসার মো. শাহজাহান শিকদার বলেন, মার্কেটে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় দোকানিরা প্রাথমিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে পারেননি। যে কারণে এক দোকান থেকে আরেক দোকানে আগুন ছড়িয়েছে। মার্কেটের লাভলি হোটেলের অংশ থেকে আগুন অন্য দোকানগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
দুর্ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত করতে কমিটি গঠন করা হবে।
দেশের সবচেয়ে বড় বইয়ের বাজার হিসেবে পরিচিত নীলক্ষেত বই মার্কেটে এর আগে ২০১৭ সালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ ও ইডেন মহিলা কলেজের পাশের এই মার্কেটটিতে সব সময়ই শিক্ষার্থীদের ভিড় লক্ষ করা যায়।
সূত্র : আরটিভি
Discussion about this post