সিলেটের জৈন্তাপুরে পাহাড়ি রেমার জমজমাট বাণিজ্য জমে উঠেছে। স্থানীয় জৈন্তাপুর বাজারে বাসা বাড়িতে ঝাড়– ব্যবহারে ও মৌসুমে প্রতিবছর জমে উঠে রেমার বেচা কেনা।
প্রকৃতিগত ভাবে পাওয়া ফুলের এই ঝাড়– সংগ্রহ করে সীমান্তবর্তী জনপদের শতাধিক পরিবার। তাদের জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করে থাকে এসব পণ্য বিক্রি করে। সীমান্তবর্তি ছোট – ছোট টিলা গুলোতে মাটি থেকে ফুঁটে উঠা এই ফুলের ঝাড়ুর কদর গৃহস্থালী কাজ ছাড়াও ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে নির্মাণ কাজে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে এই ফুলের ঝাড়– প্রবাসীরা বিভিন্ন দেশে নিয়ে যায় ব্যবহারের জন্য। তবে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার চিত্র কিছুটা ভিন্ন। এখান কার ছোট-বড় পাহাড় গুলোতে যৎ সামান্য ফুলের রেমা পাওয়া গেলেও অধিকাংশ রেমা সংগ্রহ হয় প্রতিবেশী দেশ ভারতের সীমান্ত থেকে। শুধু তাই নয়, এই রেমা তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের মেঘালয় থেকে প্রচুর পরিমানে আমদানী হয়ে থাকে। এতে সরকার পাচ্ছে নিয়মিত রাজস্ব। ঘর পরিস্কার পরিচ্ছন্নœ রাখতে গ্রাম কিংবা শহরের সর্বত্র রেমা ঝাড়–র বেশ কদর রয়েছে। নির্মাণ কাজের সৌন্দর্য বাড়াতে এবং ঘর পরিস্কার রাখতে এই ঝাড়– সৌদি আরব, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই পণ্যের রয়েছে বেশ চাহিদা। ভবন নির্মাণে দেয়াল বা ফ্লোর আস্তর করার পর রেমার ঝাড়– দিয়ে পরিচ্ছন্ন বা ফিনিশিং করতে হয়। এতে একতলা বিশিষ্ট একটি বাড়ী নির্মাণ কাজে কমপক্ষে ২০-৩০টি রেমার ঝাড়–র প্রয়োজন হয়।
সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলের টিলা বা পাহাড়ে প্রাকৃতিক ভাবেই উলু ফুল জন্মায়। আঞ্চলিক ভাষায় বলা হয় রেমা, আর রেমা দিয়ে ঝাড়– তৈরীর পর সেটাকে বলে ‘রেমার হুরইন’। বাজার থেকে ক্রয় কিংবা পাহাড় থেকে সংগ্রহ করার পর বাড়ীতে মহিলারা রোদে শুকিয়ে তারপর তৈরী করেন ঝাড়–। গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে জৈন্তাপুর উপজেলা সদরের পূর্ব বাজারে চলছে রেমার বেচা কেনা। রেমার এই ক্রয়-বিক্রয় চলবে এপ্রিল পর্যন্ত। উপজেলা কৃষি বিভাগ মনে করছে, এই উলুফুল বা রেমা জৈন্তাপুর উপজেলার পাহাড় গুলোতে বাণিজ্যিক ভাবে চাষাবাদ করলে স্থানীয় চাহিদা পূরনের পাশাপাশি দেশ-বিদেশে রপ্তানী করে প্রচুর পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।
Discussion about this post