বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদটি নিয়ে নিপুন ও জায়েদ দুজনই শপথ নিয়েছেন। কোর্ট থেকে কখনো জায়েদের পক্ষে আবার কখনো নিপুনের পক্ষে রায় আসছে। সম্প্রতি ছলনা করে জায়েদ খানের শপথ নেওয়ার বিষয়টি নানা আলোচনা ও সমালোচনায় এখনো চলছে। ৯ মার্চ বুধবার দুপুরে ১৮৪ শিল্পীর মধ্য থেকে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্য পদে বাদ পড়া ভিলেন নাসিম সাংবাদিকদের বলেন,এমন কোন জিনিস নাই যে জায়েদ মামা পারে না। সারা বিশ্ব আর সারা বাংলাদেশের কাছে দেখিয়ে দিলো, হাইকোর্টের ভুয়া কাগজ দেখিয়েও সে শপথ করে।
আমি যখন প্রথম শিল্পী সমিতির মেম্বার হই, চিত্র নায়ক মান্না সাহেব মারা যাওয়ার পর সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান চুন্নু ও সভাপতি ছিলেন মরহুম মিজু আহমেদ ।মান্না ভাই মারা যাওয়ার পর চুন্নু সাহেব আর মিজু সাহেব যে মেম্বার গুলা বানিয়ে ছিলো ১৮৪ জন, এদের সবাইকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাদ দিয়েছে।
এ বিষয়ে কোন মামলা করা হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা হাইকোর্টে মামলা করেছি। কোর্ট থেকে রুল এসেছিল। আমাদেরটা যদি এক্সেপ্ট যদি করে চিত্র নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন ভাই, তাহলে ১ টা মিটিং হবে ইনশাআল্লাহ মহান রাব্বুল আলামিনের রহমতে আমাদের এটা সংশোধন হয়ে যাবে। ইনশাআল্লাহ আমরা আশা করি সদস্য পদ ফিরে পাবো।
জায়েদ খানের শপথ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ভুয়া কাগজ দেখিয়ে শপথ নিয়েছে, এটা তো অবশ্যই মামলা হবে। এটা তো চিটিং মামলা, চিট মামলা, হাই কোর্টের চিট মামলা। হাই কোর্টের আদেশকে চিটিং করে বানাইয়া সে শপথ নিয়েছে। বুঝেনই তো চিটিং মামলাটা কি হতে পারে,আর জায়েদ কি করতে পারে না। ১৮৪ জন শিল্পীর মধ্যে ২০ জন শিল্পী হার্ট অ্যাটাক ও অন্যান্য রোগে মারা গিয়েছে। আর এ যাবত আমাদের কোন পরিচয় পত্র দেয় নাই। আমাদের কোন ত্রাণ কিংবা ১৮৪ জনকে কোন টাকা পয়সা সাহাজ্য সহযোগিতা করে নাই। শুধু মিশা ভাই বলেছিল, তোমরা শুধু ভোট দিতে পারবে না, আর সব সুযোগ সুবিধা তোমাদের থাকবে । তিনি হাজী মানুষ হয়ে, এই কথাটি কিভাবে বলেছিল সেইদিন যে, তোরা সব কিছু পাবি। ১৮৪ জন ১ টা আইডি কার্ড পর্যন্ত পাই নাই। ইদে এই জায়গার মেম্বার যারা ছিলো সবাইকে মাংস, চাউল,নগদ অর্থ দিয়েছে। ১৮৪ জন শিল্পী কিছুই পাই নাই। অনেক শিল্পীর বাসার ভাড়া বাকী ছিলো তাদের রাস্তায় বের করে দিয়েছে বাড়ী ওয়ালা। কি যে কষ্ট ছিলো ভাই এটা আমরা আপনাদের বলে বলতে পারব না। শুধু একটা লোক একটা বলব না৷ বলব দুইজন মিশা আর জায়েদ খান। ১৮৪ শিল্পীর মধ্যে যে ২০ জন মারা গিয়েছে তাদের জন্য এই দুইজন দায়ী আমি নাসিম বলতেছি। আল্লাহর আরশে একদিন আপনাদের জবাব দিতে হবে মিশা ভাই।
তার জীবনের চারটি বছর নষ্ট ও পুলিশের হয়রানী হয়েছেন বলে বিভিন্ন জায়গায় শোনা যায় এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটা বাস্তব। শুটিং শেষ করে কনভেস ও টাকা নিতে সাড়ে ১১ টা অথবা ১২ টা বেজে যায়। আমি শুটিং করে আসতেছি, রাস্তায় পুলিশ আমাকে ধরল।রাত্রি ১-২ টার সময় ধরার পর বলে ভাই আপনি কই থেকে আসলেন। ধরার পর আমার আইডি কার্ড নাই। আমাকে দেহ তল্লাশি করবে। আমি একজন শিল্পী, আমার পরিচয় পত্রটি তো দিবে। জুনিয়র আর সহযোগী যে বানিয়ে হয়েছিল, পরিচয় পত্রটি কি দেওয়া উচিত ছিলো না। যান মান টাকা পয়সা না দেন। পরিচয় পত্রটি তো দিবেন। ১৮৪ শিল্পীদের সদস্য পদ ইনশাআল্লাহ শতভাগ আমরা ফিরিয়ে পাবো। কারণ হাই কোর্ট থেকে রুল চলে এসেছে। এই রুল শেষ হলে হাইকোর্টে আর আমাদের দৌড় ঝাপ পারতে হবে না। আমরা এ রুলেই হয়ে যাবো।
১৮৪ শিল্পীর বাদ পড়া নিয়ে অন্য কারো হাত রয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, একমাত্র জায়েদ মামা এ কাজটি করেছে। তবে ভাই এ মাটি ছুয়ে বললাম আমাদের ১৮৪ টি ভোট জায়েদ মামা আর মিশা ভাইকে দেওয়া হয়েছিল। এই মাটিটা ছুয়ে বলতেছি ভাই, জায়েদ মামা আর মিশা ভাইকে ভোট দিয়েছি। আমাদের ভোটে পাশ করার ৫ মাস পর আমাদের বাদ দিয়েছে। আমি যখন ভোট দেই মিশা সওদাগর নিজে দেখছে। তিনি বলেন এ ডেঞ্জার দেখি কাকে কাকে ভোট দিয়েছ, তিনি দেখেই বললেন গুড গুড গুড তুই তো শিক্ষিত ছেলে। আমাকে ভোট দিয়েছিস, জায়েদ খানকে ভোট দিয়েছিস। পেপার নষ্ট হয়নি। এটা মিশা সওদাগর বলছে।
সদস্য পদ বাতিল হওয়ার পর আপনাদের শুটিং এ কোন সমস্যা হয়েছে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমাদের ক্ষতি হয়েছে। শুটিং এ যাব। জায়েদ খান পরিচালক ও প্রযোযকদের না করছে নিও না । জামাল শুটিং এ গেছে সাভারে,৩০ মিনিটের মধ্যে সেখানে থেকে জামালকে বলছে তুই গাট্টি গুট্টা বাইন্ধা তুই জাগা নইলে তোরে গুলি করব।
আপনারা শিল্পী না বলেই আপনাদের সদস্য পদ বাতিল হয়েছে বলে প্রশ্ন করলে তিনি আরো বলেন, আপনারা কয়টা ছবি দেখবেন। কে বলেছে নাম বলেন। কয়টা ছবি দেখবে। প্রেমিক নাম্বার ওয়ান, পুড়ে যায় মন,খবর আছে, হুমকির মুখে, মাস্তান ও পুলিশ,
শুটিং এ আপনাদের না নিতে নিষেধ করার কি প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বাস্তব ও সত্য কথা বললে কারো সহ্য হয় না। মাটি নিয়ে কিড়া কাটলাম। সবার কাছে স্বাক্ষাতকার দিয়েছি, এই জন্য শত্রু হয়ে গিয়েছি। যাতে জামাল পাটোয়ারী, খোকন, নাসিম এদের কেউ না নেয়।
অরুনা বিশ্বাস মালেক আফসারীর বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরী করেছে এই প্রশ্ন করা হলে তিনি এ প্রতিবেদক মাসুদুর রহমানকে বলেন, অরুনা দিদি যদি জিডি করে থাকে, ভাল কথা কোর্টে যাবে মালেক আফসারী। এটা কোর্ট বুঝবে।
তবে শিল্পীরা কি মামলা নিয়েই থাকবে নাকি সিনেমা নিয়ে থাকবে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটা শেষ হয়ে যাবে। যদি ১ মাস পর জায়েদ খান আবারো সাধারণ সম্পাদক রায় পায় তখন আপনারা কি করবেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বিএফডিসিতে আর জীবনে আসব না যায়েদ যতদিন থাকবে।এর আগে ডিপজল ভাইয়ের বাড়ীতে ভিলেন সোহেল ও জায়েদের সাথে কথাকাটাকাটি হয়েছে। তারপর সোহেল ভাই মালেশিয়া চলে গেছে। মালেশিয়া থেকে সোহেল ভাই এখনো আমাকে ফোন করে বলে, যতদিন এই জায়েদ চেয়ারে থাকবে ততদিন বাংলাদেশে বিএফডিসি ও ইন্ড্রাস্টিতে কোন দিন যাবো না। যেদিন শুনমু জায়েদ খান পতন হইছে তার ১০ দিন পর আমি বিএফডিসিতে ডুকব। খল নায়ক ব্রাউন সোহেল এক কথায় বলেছে। আমি আর বিএফডিসিতে আসব না, ছবিও করব না, আর কারো শত্রুও হব না।
ভুয়া কাগজ নিয়ে শপথ এর বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি এ প্রতিবেদক মাসুদুর রহমানকে বলেন, এটা আদালতে মামলা হবে। ভুয়া কাগজ দেখিয়ে শপথ নিবে, সবাইকে ধোকা দিবে,প্রতারণা করবে। এটা তো অবশ্যই মামলা হবে। এটাতো ইন্ডাস্ট্রি। দৌড়াতে থাক, কত দৌড়, শেষ নাইরে ভাই, শেষ নাইরে। হাই কোর্ট, জজ কোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট। কি জায়েদ মামা ঘুড়েন, কি রকম লাগে।
মাসুদুর রহমান
বিনোদন প্রতিবেদক
Discussion about this post