বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সমাপনী এবং জাতীয় শিশু দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতে আগামী বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, শোভাবর্ধন, শিশু সমাবেশ ও লোকজমেলা আয়োজনের সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। টুঙ্গিপাড়াসহ জেলাজুড়ে নেয়া হয়েছে তিন স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
১৫ মার্চ রাষ্ট্রপতির প্রটোকল অফিসার নবীরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক ফ্যাক্স বার্তায় জানা গেছে, সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে বহন করা হেলিকপ্টার টুঙ্গিপাড়া হেলিপ্যাডে অবতরণ করবে। বেলা ১১টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজারে উপস্থিত হয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এ সময় তিন বাহিনী গার্ড অব অনার প্রদান করবেন। পরে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেবেন। এরপর তিনি ঢাকায় ফিরে যাবেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। পরে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেবেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি ফিরে গেলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সমাপনী এবং জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সের পাবলিক প্লাজায় হবে শিশু সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসাবে বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শিশু সমাবেশে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এবং শিশুদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখবেন।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে সমাধিসৌধের মূল স্তম্ভ, বঙ্গবন্ধু ভবন, মুক্তমঞ্চ, লাইব্রেরি, সংগ্রহশালা, ক্যাফেটরিয়া, মসজিদ, বকুলতলা চত্বর এলাকায় শেষ হয়েছে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও উন্নয়নমূলক কাজ। বিভিন্ন অবকাঠামোতে রঙয়ের কাজ ও ফুলগাছের চারা লাগানো হয়েছে। সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সসহ সারা জেলায় করা হয়েছে আলোকসজ্জ্বা। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাচ ও গান পরিবেশনের জন্য সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে শিশু-কিশোররা।
এছাড়া আগামী ১৯ থেকে ২৫ মার্চ টুঙ্গিপাড়া সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে সাত দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক লোকজ মেলা অনুষ্ঠিত হবে। লোকজ মেলার জন্য বসছে আন্তর্জাতিক মানের প্যান্ডেল ও স্টল।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নেতৃবৃন্দের আগমনে নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছে উৎসাহ-উদ্দীপনা। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্তাব্যক্তিদের স্বাগত জানাতে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত মহাসড়কে শতাধিক তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংবলিত ব্যানার ও ফেস্টুন দিয়ে গোপালগঞ্জকে সাজানো হয়েছে। জেলাজুড়ে চলছে সাজ-সাজ রব। নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে আনন্দ-উদ্দীপনা।
টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল বলেন, রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির সাথে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে টুঙ্গিপাড়া পৌরসভাসহ আওয়ামী লীগ। তাদের আগমনে ইতিমধ্যে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ যাবতীয় কাজ শেষ করা হয়েছে। করোনার কারণে গত দুই বছর নিজ জন্মভূমি টুঙ্গিপাড়ায় আসতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার ঘরের মেয়েকে একনজর দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন টুঙ্গিপাড়াসহ গোপালগঞ্জবাসী।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, ‘টুঙ্গিপাড়া: হৃদয়ে পিতৃভূমি’ শীর্ষক শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত তিনটি প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা টুঙ্গিপাড়া পরিদর্শন করেছেন। অনুষ্ঠানকে জমকালো করে তুলতে সব দপ্তর নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
Discussion about this post