কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে আলাল হোসেন নামের এক কৃষকের বিরুদ্ধে পিটিয়ে ১৮ টি হাঁস মারার অভিযোগ করেছেন গৃহিনী মোছা. মর্জিনা খাতুন (৫২)। সোমবার সকালে উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের জোতপাড়া গ্রামের পদ্মা নদীর কোলে এঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত কৃষক ওই এলাকার রহমান হোসেনের ছেলে। আর গৃহিনী একই এলাকার মো. আমিরুল ইসলামের স্ত্রী। এঘটনা সোমবার দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মর্জিনা খাতুন।
লিখিত অভিযোগ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, জোতপাড়া এলাকায় পদ্মা নদীর কোলে কৃষক আলালের দেড় বিঘা জমি আছে। সেখানে তিনি ধানের চাষাবাদ করছেন। তাঁর ধানক্ষেতে গৃহিণী মর্জিনা হাঁসগুলো খাবার খেতে গিয়েছিল। এতে তাঁর ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা দেখে লাঠী দিয়ে পিটিয়ে একে একে ১৮ টি হাঁস মেরে ফেলেন তিনি। হাঁসগুলো ডিম পাড়ত। আর ডিম বিক্রির টাকায় মর্জিনার সংসার চলত।
সোমবার দুপুরে জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্ত্বরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মরা হাঁস গুলো মাটিতে ছিটিয়ে বিচারের আশায় মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন। এসময় কথা হয় তাঁর সাথে। দুচোখের চল ছেড়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘ এখন চাল ডাল দিবিন কিডা, হাঁসই আমার খাতি দিত। ডিম বেঁচেই সব করি। এখন কিডা দেখপিনি আমার। ক্যাম্বো চলবিনি সংসার। ‘
তিনি আরো বলেন, ৩০ হাজার টাকা লোন করে হাঁস পালন করছিলাম। তিন মেয়ের বিয়ে দিছি। বাড়িতে অসুস্থ স্বামী। আলাল শত্রুতা করে হাঁসগুলো পিটিয়ে মারেসে। আমি এর বিচার চাই।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আবু জাফরের ছেলে কৃষক টিপু সুলতান বলেন, সকালে জমি দেখতে এসেছিলাম। এসময় দেখি আলাল লাঠী দিয়ে পিটিয়ে হাঁস মারছে। খুব খারাপ কাজ করেছে আলাল। এর বিচার হওয়া উচিৎ।
এবিষয়ে অভিযুক্ত কৃষক আলাল বলেন, মর্জিনার হাঁস আমার ধান নষ্ট করছিল। জমি থেকে হাঁসগুলো তাড়াতে গিয়ে লাঠীর আঘাত পেয়েছে হাঁস। তবে আমি মাত্র ২ টা হাঁস মারিছি।
জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ড মেম্বর মো. মাসুদ রানা বলেন, সকালে পরিষদ চত্ত্বরে খুব কাঁন্নাকাটি করছিল মর্জিনা। পরে শুনে দেখি তাঁর আয়ের উৎস্য হাঁস গুলো আলাল নামের কৃষক পিটিয়ে মেরেছে। বিষয়টি খুব দুঃখজনক। এর বিচার হওয়ার দরকার।
জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল বাকী বাদশা বলেন, একটা অপরাধ ঢাকতে গিয়ে কৃষক আরেকটা অপরাধ করেছে। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পরিষদে উভয়পক্ষ কে নিয়ে বসা হবে।
মোঃ রাকিব হোসেন
কুমারখালী কুষ্টিয়া
Discussion about this post