দোকান সাজানো পণ্যের পসরায়। দোকানে রয়েছে কয়েকজন বিক্রয়কর্মীও। ছোট থেকে বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ আসছেন দোকানে। ঘুরেফিরে পছন্দের পোশাক নিয়ে যাচ্ছেন তারা। কিন্তু পছন্দের পোশাক কিনতে লাগছে না কোনো অর্থ বা টাকা। তবে এখানে শুধু ছেলেদের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও একজন মানুষ শুধুমাত্র একটি পোশাক নিতে পারবেন এখান থেকে।
এমন ব্যতিক্রমী এক দোকান বসেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার গণমোড়সংলগ্ন কৃষি ব্যাংকের নিচে। ইদে মানুষকে শুধুমাত্র আনন্দ দিতে এবং সকলের মাঝে ইদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ব্যতিক্রমী দোকান বসিয়েছেন তরুণ ব্যবসায়ী ও সমাজকর্মী শাকিল আহমেদ তিয়াস। তিনি কুমারখালী ইয়াং কালেকশন, আর এন ফার্নিচার ও রাফা পাঞ্জাবী গার্মেন্টসের কর্ণধার। আর দোকানটির নাম দেয়া হয়েছে ‘ইদ আনন্দ, মানুষের প্রতি ভালোবাসা’।
বুধবার (২৭ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে গণমোড় এলাকার এই ব্যতিক্রমী দোকানে গিয়ে দেখা যায়, দোকানে শিশু থেকে সববয়সী পুরুষের জন্য নতুন জামা, গেঞ্জি, পাঞ্জাবী ও পাদুকাসহ বিভিন্নরকম পোশাক সাজানে রয়েছে। দোকানে শিশু থেকে সববয়সী মানুষের বেশ ভিড় রয়েছে। তারা ঘুরে ঘুরে পছন্দ করছেন পোশাক। পোশাক পছন্দ হলেই বিক্রয়কর্মীরা প্যাকেট করে দিচ্ছেন। তবে পছন্দের পোশাক নিতে কোনো টাকা লাগছে না।
দোকানে থাকা বিক্রয়কর্মী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুমারখালীর ইয়াং কালেকশন, আর এন ফার্নিচার ও রাফা পাঞ্জাবী গার্মেন্টসের স্বত্বাধিকারী শাকিল আহমেদ তিয়াস ২০২১ সাল থেকে ইদে মানুষকে আনন্দ দিতে এবং সকলের মাঝে ইদের আনন্দ ছড়িয়ে দিতে এমন ব্যতিক্রমী দোকানের উদ্যোগ নিয়েছেন। গেল বছর প্রায় ৫৮০ জনকে টাকা ছাড়াই পোশাক বিক্রি করেছিলেন।
আরও জানা গেছে, এ বছরও প্রায় ৬০০ জনকে তিনি টাকা ছাড়াই পোশাক বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছেন। আর দোকানটির নাম দেয়া হয়েছে ‘ইদ আনন্দ, মানুষের প্রতি ভালোবাসা’। বুধবার সকাল ১১টার ব্যতিক্রমী এই দোকানের শুভ উদ্বোধন করেন তিয়াসের মা সুরাইয়া পারভিন বিউটি।
ব্যতিক্রমী এমন দোকান থেকে পণ্য নিয়েছেন পৌরসভার এলংগী এলাকার আব্দুল জলিল (৫৫)। তিনি বলেন, ভ্যান চালিয়ে খাই। বাজারে পোশাকের দাম বেশি। তাই খবর পেয়ে এখানে এসেছি। পছন্দ করে নিজের জন্য একটা পাঞ্জাবী নিয়েছি পছন্দ করে। তবে কোনো টাকা লাগেনি।
একই এলাকার শাবানা খাতুন বলেন, দোকান থেকে ছেলের জন্য একটা প্যান্ট নিয়েছি। টাকা ছাড়াই পোশাক নিয়ে খুব খুশি। তিয়াস ভাইয়ের জন্য দোয়া করি।
তেবাড়িয়া এলাকার এতিম শিশু আনাই (১০) বলে, ফ্রি ফ্রি পোশাক পেয়ে খুব আনন্দিত। এই পোশাক গায়ে দিয়েই ইদে যাব।
এ বিষয়ে সুরাইয়া পারভিন বিউটি বলেন, আমার ছেলের এমন ব্যতিক্রমী ও মহতী উদ্যোগে আমি খুব খুশি। দোয়া করি তিয়াস যেন সারাজীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারে।
তরুণ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাকিল আহমেদ তিয়াস বলেন, শুধুমাত্র মানুষকে ইদে আনন্দ দিতে এবং সকলের মাঝে ইদের আনন্দ ছড়িয়ে দিতে আমার এমন আয়োজন। এ বছর ৬০০ জনের জন্য আয়োজন করা হয়েছে। বেলা ১২টার মধ্যে প্রায় ৩৫০ জন পোশাক নিয়েছেন। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এমন আয়োজন অব্যাহত থাকবে।
মোঃ রাকিব হোসেন
কুমারখালী,কুষ্টিয়া।
Discussion about this post