পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংকের করা দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ সেতু করতে গিয়ে আমার ও আমার পরিবার এবং সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। আমরা চ্যালেঞ্জ করেছিলাম সেই অভিযোগ প্রমাণের। কারণ, আমরা এখানে (রাষ্ট্র পরিচালনায়) দুর্নীতি করতে আসিনি, দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি।’
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) পল্লী জনপদ, রংপুর এবং বঙ্গবন্ধু পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বাপার্ড), কোটালিপাড়া, গোপালগঞ্জের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। পল্লী জনপদ, রংপুর এবং বাপার্ড, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ প্রান্তে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চল বা পদ্মাপাড়ের মানুষ বরাবরই অবহেলিত ছিল। দারিদ্র্য আমাদের নিত্যসঙ্গী। আল্লাহর অশেষ রহমতে, সেই পরিস্থিতি আর থাকবে না। কারণ, আমরা একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ করেছি, যা আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। যে দক্ষিণাঞ্চলের জনগণ সারাজীবন অবহেলিত ছিল, এখন আর অবহেলিত থাকবে না। কারণ, একটা জায়গায় যদি যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয় তাহলে সেখানকার অর্থনৈতিক অবস্থা এমনিতেই উন্নত হয়। এটাই হলো বাস্তবতা।’
পদ্মা সেতু জাতীয় অর্থনীতি জোরদারে বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে অবদান রাখবে। দক্ষিণাঞ্চলের জনগণকে উন্নত জীবন উপহার দিতে আমরা চাই।
আমরা বাংলাদেশের জনগণের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছি। আমরা উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি লাভ করেছি এবং আমাদের আরও সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। দেশের একজন লোকও গৃহহীন ও ক্ষুধার্ত থাকবে না।’
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের প্রসঙ্গ টেনে সবাইকে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সেতু উদ্বোধনের পর সেখানে গাড়ি নিয়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতা কেউ যেন না করেন, যাতে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটতে পারে। এ উৎসব কেবল পদ্মাপাড়েই হবে না, সারাদেশের প্রত্যেক জেলায় এ সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মহোৎসব হবে। কারণ, এটা ছিল আমাদের জন্য একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে খরস্রোতা নদীগুলোর অন্যতম এ পদ্মায় বাংলাদেশ যে সেতু নির্মাণ করতে পারে সেটা অনেকেরই ধারণায় ছিল না। তারপর আবার সেতুটি একটি দ্বিতল সেতু, নিচ দিয়ে ট্রেন এবং ওপর দিয়ে গাড়ি চলাচল করবে। যেটা অত্যন্ত কঠিন একটি কাজ এবং বিশ্বে এ ধরনের কাজ বোধহয় এটাই প্রথম। এখানে যে ধরনের মেশিনারিজ ব্যবহৃত হয়েছে, সেটাও বোধহয় আর কোথাও হয়নি। এ সেতু নির্মাণে যে বাধা-বিপত্তি ছিল সেটাও আপনারা জানেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম এবং সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। সমবায় বিভাগের সচিব মো. মশিউর রহমান স্বাগত বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একটি ভিডিও চিত্রও প্রদর্শন করা হয়।
সূত্র: জাগো নিউজ
Discussion about this post