আবুল কাশেম রুমন,সিলেট: সিলেটে ব্যবসা-বানিজ্যে বড় ধাক্কা লেগেছে ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। করোনা মহামারী লকাডাউন ও বন্যার পরিস্থিতিতে বড় ধরেণর বিপর্যয়ের মুখে পড়থে হয়েছে সিলেটের ব্যবসায়ীগণ। নিত্যপণ্য থেকে শুরু করে কাপড়, ইলেকট্রনিক, ফার্মেসী এমনকি বাদ যায়নি লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা। এখনো ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরুপণ করা না হলেও বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা। এরই মধ্যে রাত ৮টার পর দোকান বন্ধের সরকারী ঘোষণায় ঘুরে দাঁড়ানো নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা। ব্যবসায়ীদের দাবী চলমান বন্যায় সিলেটে ক্ষয় ক্ষতি ১ হাজার কোটি টাকার কম নয়।
জানা গেছে, সাম্প্রতিক কালের বন্যায় বাসা-বাড়ী, আসবাবপত্র ও রাস্তাঘাটের পাশাপাশি নগরীর ব্যবসা বাণিজ্য ও দোকানপাটের বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানিতে নগরীর কিছু দোকানপাট ডুবে গেলেও গত কয়েক দিন ও কয়েক ঘন্টার বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে তলিয়ে যায় গোটা নগরী। জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই পায়নি নগরীর অন্যতম উচুস্থান খ্যাত চৌহাট্টা, আম্বরখানা, জিন্দাবাজার এলাকা। বাদ যায়নি বন্দরবাজার, সুরমা মার্কেট এলাকাও।
ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, করোনা মহামারীর ২ বছর পর কোন রকম ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টার মধ্যে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি সিলেটের ব্যবসা বাণিজ্যে বিপর্যয় নেমে আসছে আর ব্যবসায়ীদেরকে রাস্তায় নামিয়ে দিচ্ছে। নগরীর জিন্দাবাজারস্থ আল হামরা শপিং সিটির সামনের রাস্তায় পানি জমলেও মার্কেটে পানি উঠেনি। এমনীভাবে জিন্দাবাজারস্থ ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, কাকলী শপিং সিটি, সিটি সেন্টার, মিলেনিয়ান, গ্যালারিয়া, ওয়েস্ট ওয়ার্ল্ড সহ কয়েকটি অভিজান বিপনী বিতান ভালো থাকলেও নগরীর কোন এলাকার নিচ তলার দোকান পানি উঠার বাকী ছিলনা। সবচেয়ে ক্ষতির সম্মূখীন হয়েছেন কালিঘাট, তালতলা, উপশহর, লালদিঘীরপাড় এলাকার ব্যবসায়ীরা। এখনো পানি জমে আছে কালিঘাটের রাস্তা, তালতলা রাস্তা, উপশহর রোডে। এসব এলাকায় এখনো স্বাভাবিক হচ্ছেনা ব্যবসা বাণিজ্য।
জানা গেছে, আর কয় দিন পর ঈদুল আযহা। এই সময়ে বন্যায় বড় ধাক্কা খেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে রাত ৮টার মধ্যে দোকানপাঠ বন্ধের ঘোষণা নতুন বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিছে তাদের। যদিও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন আগামী ১ জুলাই থেকে সিলেটের দোকান পাঠ রাত ১০ টা পর্যন্ত খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সিলেট চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক ও বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতির সিলেট জেলা সভাপতি আলিমুল এহসান চৌধুরী বলেন, চলমান বন্যায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতি ক্ষুদ্র কুটির শিল্পের। যন্ত্রপাতির পাশাপাশি নষ্ট হয়েছে পণ্যের। দফায়-দফায় বন্যায় ফসল ডুবে যাওয়ার কারণে কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবসায় ধ্বস নেমেছে। কোটি – কোটি টাকার মেশিন কারখানায় পড়ে আছে। আমাদের আলিম ইন্ড্রাস্ট্রির ৬টি ইউনিটের মধ্যে ৫টি ইউনিট বাধ দিয়ে রক্ষা করা গেলেও একটি ইউনিটের যন্ত্রপাতির বন্যায় ডুবে গেছে। এখনো পানি না নামায় ক্ষতির পরিমাণ বলা যাচ্ছেনা। বন্যায় সিলেটের শিল্প কারখানার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আমাদেরকে বেগ পেতে হবে। তবে বিষেজ্ঞদের মতে কোন অবস্থাতেই তা ১ হাজার কোটি টাকার কম হবে না। বরং আর বেশি হবে।
Discussion about this post