আবুল কাশেম রুমন,সিলেট: দু দফা বন্যায় গোঠা সিলেট জুড়ে গবাদিপশুর ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানিতে অনেক পশু নিখোজ ও মৃত্যু হয়েছে যাহা প্রকৃত পরিসংখ্যান করে বের করা কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে। তবে ধারনা করা যাচ্ছে যে, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় কমপক্ষে ১০ হাজার গবাদী পশুর ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে মরা ও ভেসে যাওয়া পশুর সংখ্যা হবে ৫ হাজারেরও বেশী। একটি সূত্র জানা, শুধু সিলেট জেলায় হাঁস-মুরগিসহ ৫ হাজারের বেশি গবাদিপশু মারা গেছে। আর ডুবে গেছে গবাদিপশুর ৭১০ টি খামার।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের হিসেব অনুযায়ী, পানির ¯্রােতে ভেসে গিয়ে জেলায় এখন পর্যন্ত হাস-মুরগীসহ ৪ হাজার গবাদিপশু মারা গেছে। সিলেট জেলা কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বন্যায় সিলেট জেলায় ৭১০ টি খামার ডুবে গেছে। পানিতে ভেসে গেছে ১ হাজার ৯৯১ টন খড় ও ২ হাজার ৯৫৯ টন ঘাস। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত জেলায় প্রাণিসম্পদের ক্ষতির পরিমাণ ১১ কোটি ৬৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।
চলমান বন্যায় প্রাণিসম্পদের সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুনামগঞ্জ। জেলাটির প্রত্যন্ত অঞ্চলে পশুর সাথে ভেসে গেছে মানুষও। পরে মিলেছে লাশ। এদিকে সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট উপজেলায় পশু সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে প্রাণিসম্পদ বিষজ্ঞরা বলছেন আসন্ন কোরবানী ঈদে সিলেটে কোরবানীযোগ্য পশুর কোন সঙ্কট হবেনা। কারণ কিছু গবাদী পশু বিশেষ করে গরু-ছাগল বন্যায় ও খাদ্যা ভাবে অসুস্থ হয়েছে। চিকিৎসা দিলে ঠিক হয়ে যাবে। এছাড়া কুরবানীযোগ্য পশুর চাহিদা পূরণে অতীতের ন্যায় এবারও বিভিন্ন জায়গা থেকে সিলেটে পশু আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
সিলেটে পশুসম্পদ অধিদফতরের বিভাগীয় অফিসের তথ্য অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (২৪জুন) পর্যন্ত বিভাগে ১১টি গরু, ৬টি মহিষ, ২৬টি ছাগল, ১৭টি ভেড়া, ৫ হাজারের বেশী মোরগ ও দেড় হাজারের বেশী হাস মারা গেছে। যদিও বাস্তবে এর হিসাব অনেক বেশী হবে। বন্যার শুরু দিকে অনেকের ভেসে যাওয়া লাশ এখন ভাসছে। পানি আর কমে গেলে ক্ষতির পরিমাণ স্পষ্ট হবে।
সিলেট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো রুস্তুম আলী বলেন, আমরা আপাতত জেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া গবাদিপশুকে চিকিৎসা দিচ্ছি। পানি নেমে গেলে যাতে সংক্রামক রোগ দেখা না দেয়, এজন্য ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্লাবিত এলাকায় গোখাদ্য সরবরাহেরও চেষ্টা করছি আমরা।
Discussion about this post