ব্যস্ত রাজধানী ঈদের ছুটিতে প্রায় ফাঁকা। রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকায় রাজধানীতে মানুষ এক স্থানে থেকে অন্য স্থানে অতি দ্রুত যেতে পারছে।
তবে যাতায়াতে সময় কম লাগার স্বস্তি থাকলেও পরিবহনের ভাড়াতে বড্ড অস্বস্তিতে যাত্রীরা।
সরেজমিনে সোমবার (১১ জুলাই) রাজধানীর গণপরিবহনে চলাচল করে দেখা গেছে, ঈদ বকশিসের নামে পরিবহনকর্মীরা বেশি ভাড়া নিচ্ছেন।
যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, অনেকটা জোর করে ‘গলাকাটা’ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।
‘মিরপুর লিংক’ নামক পরিবহনে সায়েন্সল্যাব এলাকা থেকে চিড়িয়াখানায় সরকারি ভাড়া ২২ টাকা।
কিন্তু যাত্রীদের মিরপুর-১ নম্বরে নামিয়ে দিলেও ভাড়া নেওয়া হয় ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মজীবী শাহানা আক্তার পরিবার নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে গণপরিবহনের ভাড়া নিয়ে বিপাকে পড়েন। তিনি বলেন, ছোট দুই সন্তানের জন্যও ৪০ টাকা ভাড়া দেওয়া লাগলো। দুজনের ভাড়া যেখানে ৪৪ টাকা সেখানে ১৫০ টাকা ভাড়া দিতে হয়েছে। রীতিমতো জুলুম করছে ঈদ বোনাসের নামে।
ঈদে ঢাকার বাইরে থেকেও ঘোরাঘুরি করতে এসেছেন অনেকে। ফাঁকা ঢাকায় ঘুরতে দূর-দূরান্ত থেকে এসে অতিরিক্ত পরিবহন ভাড়ায় তারা অতিষ্ঠ হচ্ছেন।
ঈদে ঘুরতে ঝিনাইদহ থেকে পরিবার নিয়ে ঢাকায় এসেছেন সোহানুর রহমান। চিড়িয়াখানা ঘুরতে এসে গণপরিবহনে ‘ঈদ বকশিস’ নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেন তিনি। ২০ টাকার ভাড়া তাকে ৫০ দিতে বাধ্য হতে হয়েছে।
পরিবহনের ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, চিড়িয়াখানা থেকে বসুন্ধরা যেতে ৫০ টাকা ভাড়া দেওয়া লাগলো। ঈদ বোনাসের নামে দ্বিগুণের বেশি ভাড়া দেওয়া লাগছে।
একই অবস্থা এয়ারপোর্ট থেকে পল্টন রুটে চলাচলকারী ভিক্টর পরিবহনেরও। বসুন্ধরা থেকে পল্টন পর্যন্ত ২০ টাকার ভাড়া যাত্রীদের কাছে দাবি করেছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।
এ বিষয়ে ভিক্টর পরিবহনেরিএক কন্ট্রাক্টর বলেন, ঈদে যাত্রী কম এজন্য ভাড়া বেশি নিচ্ছি।
গাড়িতে যাত্রী পরিপূর্ণ আছে তারপরও ভাড়া বেশি নিচ্ছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঈদের সময় বলে বেশি নিচ্ছি। সবার ঈদ বোনাস আছে, আমাদের বোনাস দেওয়ার কেউ নেই। যাত্রীদের থেকেই নিচ্ছি।
ঈদ উপলক্ষে যাত্রীদের ভাড়ার বিষয়টি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের দেখভালের কথা থাকলেও গণপরিবহনগুলোর বিরুদ্ধে কখনোই অভিযান চালাতে তাদের দেখা যায় না অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীরা।
এদিকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের অফিসিয়াল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে বাংলানিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট মাছুম কামাল জানান, স্বল্প গণপরিবহনের পাশাপাশি বন্ধ আছে হাতিরঝিলে নৌ-পরিবহন ও বিশেষায়িত বাস সেবা। এমনকি উবার-পাঠাওয়ের মতো পরিবহন সেবাগুলোও বন্ধ আছে। অনেকক্ষণ পরপর ঢাকা চাকা, গুলশান চাকা নামের বাসগুলো দুই-একটি চললেও, নৌযানগুলো পুরোপুরি বন্ধ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাতিরঝিলের রামপুরা, গুলশান, পুলিশ প্লাজা, এফডিসি জেটি ঘাটে চলছে না নৌযান। ফলে, যাত্রীরা হেঁটে পার হচ্ছেন।
গণপরিবহন সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, আগামী বুধবার (১৩ জুলাই) থেকে প্রায় স্বাভাবিক হয়ে আসবে যান চলাচল।
সূত্র : বাংলানিউজ২৪.কম
Discussion about this post