আবুল কাশেম রুমন,সিলেট: সিলেটের ওসমানীনগরে দুই প্রবাসীর মৃত্যু ও অচেতনার রহস্য উদঘাটনে প্রশাসন মাঠে নেমেছে। ইতোমধ্যে পুলিশ সহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলাবাহী মাঠে তৎপর হয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানাগেছে।
সূত্রে উল্লেখ্য যে, ওসমানীনগরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ‘৯৯৯’ এ ফোন পেয়ে বন্ধ একটি কক্ষের দরজা ভেঙে যুক্তরাজ্য প্রবাসী একই পরিবারের পাঁচজনকে উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর বাবা ছেলেকে মৃত ঘোষণা করে কর্তব্যরত চিকিৎসক। ওই প্রবাসীর স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে বর্তমানে ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
নিহতরা হলেন-যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম (৫০) ও তাঁর ছেলে মাইকুল ইসলাম (১৮)। রফিকুল ইসলাম ওসমানীনগর উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের ধিরারাই (খাতিপুর) গ্রামের মৃত আবদুল জব্বারের ছেলে। তবে তিনি বেশ আগে থেকে যুক্তরাজ্যের নগরিকত্ব লাভ করেছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হুছনে আরা বেগম (৪০), ছেলে সাদিকুল ইসলাম (২১) এবং মেয়ে সামিরা ইসলামকে (২০) কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দুপুরে তাজপুর স্কুল রোডস্থ ভাড়া বাসা থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে ওসমানীনগর থানা পুলিশ। বিষক্রিয়ার কারণে ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন সিলেটের পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি) ফরিদ উদ্দিন পিপিএম।
পারিবারিক সূত্র জানায়, দীর্ঘ দিন ধরে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে বসবাস করে আসছেন ধিরারাই গ্রামের রফিকুল ইসলাম। অসুস্থ ছেলে সাদিকুল ইসলামকে চিকিৎসা দেয়ার জন্য গত ১২ জুলাই সপরিবাওে দেশে ফিরে এক সপ্তাহ ঢাকায় থাকেন। চিকিৎসা শেষে ১৮ জুলাই উপজেলার তাজপুর স্কুল রোড এলাকার একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় বাসা ভাড়া নেন। সোমবার রাতের খাবার শেষে প্রবাসী রফিক ইসলাম ও তার স্ত্রী সন্তানসহ একটি কক্ষে এবং রফিকুল ইসলামের শ্বশুর আনফর আলী, শাশুড়ি বদরুন্নেছা, শ্যালক দেলোয়ার হোসেন, শ্যালকের স্ত্রী শোভা বেগম ও মেয়ে সাবিলা বেগম (৮) অন্যান্য কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। মঙ্গলবার সকালে বাসার সুস্থ স্বজনরা ডাকাডাকি করে প্রবাসী রফিকুল ইসলামসহ তার স্ত্রী-সন্তানদেও কোন সাড়া পাননি। এ অবস্থায় তারা ৯৯৯ নম্বরে কল করেন। খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে ওসমানীনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কক্ষের দরজা ভেঙ্গে ৫ জনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। হাসপাতালে আনার পর রফিকুল ইসলাম ও মাইকুল ইসলামকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছেন ওসমানী হাসপাতাল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ জনি চৌধুরী। বাকি তিনজনকে ওসমানি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে মা ও মেয়েকে হাসপাতালের আইসিইউতে এবং ছেলেকে ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত রফিক মিয়ার শ্বশুর আনফর আলী, শাশুড়ী বদরুন্নেছা,শ্যালক দেলোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী শোভা বেগমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তারা পুলিশ হেফাজতেই রয়েছেন।
ঘটনার খবর পেপয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন সিলেটের পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি) ফরিদ উদ্দিন পিপিএম, ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলিমা রায়হানা। এছাড়া পিবিআই ও সিআইডির দুটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
Discussion about this post