সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়া নিত্যপণ্যের বাজারকে সহনশীল পর্যায়ে নিয়ে আসা জরুরি জানিয়ে দেশের উৎপাদন বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, আমি মনে করি যে, হয়তো আমাদের আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। যাতে আমাদের মানুষের এই ক্রয়ক্ষমতার বাইরে যে পণ্য মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, এটাকে আমরা সহনশীল পর্যায়ে কিভাবে নিয়ে আসতে পারি, সেই ব্যবস্থাটা আমাদের নেওয়া একান্তভাবে জরুরি বলে আমি মনে করি। খবর বাসস ও বিডিনিউজের।
জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার পর মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষের নির্দিষ্ট আয়ের ছকে জীবন চালিয়ে নেওয়ার কষ্ট সরকার উপলব্ধি করতে পারছে বলেও জানান সরকার প্রধান। তিনি বলেন, যদিও আমরা এখন ১৫ টাকায় চাল, এটা প্রায় ৫০ লক্ষ পরিবারকে আমরা দেব। সেটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাছাড়া আমরা একটা নির্দিষ্ট মূল্যে প্রায় ১ কোটি মানুষের জন্য বিশেষ পারিবারিক কার্ড দিয়েছি আমরা, যাতে তারা ন্যায্যমূল্যের জিনিস কিনতে পারে সেই ব্যবস্থার পদক্ষেপ নিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের জন্যই তো রাজনীতি করি, মানুষ কষ্ট পেলে আমারও কষ্ট হয়। আমাদেরও এখন পদক্ষেপ নিতে হবে। নিজেদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমি এটা সেই করোনাকালীন সময় থেকে বলে আসছি। কোভিড মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ মানুষের জীবন-জীবিকায় নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে এর সমাধানের পথ খোঁজার তাগিদ দেন তিনি। কিভাবে উত্তরণ ঘটানো যায় সেটা দেখতে হবে। আমি চিন্তা করি আমার দেশের মানুষের কথা। মানুষের জীবনটা যেন কষ্টে না পড়ে, বলেন শেখ হাসিনা।
রাশিয়ার কাছ থেকে কোন উপায়ে সরাসরি জ্বালানি তেল কেনা যায়, সেব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষ কষ্টে আছে। এটা একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত এবং অন্যান্য রাষ্ট্র রাশিয়ার কাছ থেকে সরাসরি তেল কিনছে-তাহলে আমরা কিনতে পারি কিনা সেটা দেখতে হবে। এর জন্য রাশিয়ার সঙ্গে কথা বলে উপায় খুঁজে বের করতে হবে।
সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. এম শামসুল আলম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাশিয়ার নিকট থেকে সরাসরি জ্বালানি তেল কেনার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী উপায় খুঁজে বের করার কথা বলেছেন। রাশিয়া বলছে তারা কারেন্সি সোয়াপে যাবে। আমাদের হয়ত রাশিয়ার সঙ্গে কথাবার্তা বলে একটা পদ্ধতি বের করতে হবে। রাশিয়ার নিজস্ব মুদ্রা হলো রুবল। সেদেশের সঙ্গে কারেন্সি সোয়াপ ব্যবস্থাপনায় গেলে রুবল এবং টাকার মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি লেনদেন সম্পন্ন করা যাবে।
সূত্র : আজাদী
Discussion about this post