মিনারা হেলেন ইতি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বৃহস্পতিবার (১৮ আগষ্ট) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর জেএমসেন হলে জন্মাষ্টমী উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এক আলোচনাসভায় বলেন, ‘আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা আমাদের আদর্শ। তাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে এবং সত্যিকারের সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক একটা দেশ হবে। সেজন্য শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারত সরকারকে সেটা করার অনুরোধ করেছি।’ তাঁর এমন বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরাও বিব্রতবোধ করছেন। তাঁর একের পর এক মিথ্যাচারে প্রায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশিরা। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বিশ্ববিখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক দাবিদার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আপনজনদের তৈলমর্দনের মাধ্যমে। তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন ছয় বছর। ২০১৫ সালে শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশে ফেরেন। মুহিত অবসরে গেলে সর্বশেষ সিলেট সদরে মোমেনকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী করেন। বিজয়ী হয়ে এ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পাবার পর তাঁর অনেক বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক চলছেই। কারণ তিনি না কূটনীতিক না রাজনীতিক।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি থাকাকালীন সময় থেকেই একের পর এক অশালীন কথাবার্তা ও মিথ্যাচারে বোস্টনসহ যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ২০১৫ সালে জাতিসংঘের সাধারন অধিবেশন শেষে বাংলাদেশ মিশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে তাঁর এক ভাড়াটে সাংবাদিকের তৈলাক্ত সুপারিশে স্থায়ী প্রতিনিধি থেকে সরিয়ে সরাসরি রাজনীতির মাঠে নিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী। এরপর অনেকটা হঠাৎ করেই মন্ত্রিত্ব পেয়েছিলেন। ভাইয়ের (প্রয়াত অর্থমন্ত্রী) হাত ধরে সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ আসন থেকে মনোনয়ন পান তিনি। ২০১৮-এর নির্বাচনে বিজয়ী হন। প্রথমবার এমপি হয়েই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। স্পর্শকাতর, গুরুত্বপূর্ণ এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচিত-সমালোচিত মোমেন।
বোস্টনে অবস্থানকালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত আইন লঙ্ঘন করেছন। তাঁর প্রথম স্ত্রী নাসিম পারভীন (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বান্ধবী)-এর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর তাঁর কিশোর বয়সী সন্তানদের কোন ভরণ পোষন দেননি, যা যুক্তরাষ্ট্রের আইনে দন্ডনীয় অপরাধ। সেই থেকে তিনি তাঁ সেই সন্তানদের আর কখনই খোঁজ নেয়নি। তাঁর এ অমানবিকতার কারণে প্রবাসীরা কেউই তাঁকে ভালো চোখে দেখতো না। সেখানকার প্রবাসীদের কাছে তিনি ছিলেন প্রায় ঘৃণিত।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি থাকাকালীন সময়ে নিউ জার্সির কীন বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এক সেমিনারে শত শত দর্শকদের মাঝে অশালীন (যা মুখ প্রকাশ করার মত নয়) বক্তব্য প্রদান করে হাসির পাত্র হয়েছিলেন।
বোস্টনে অবস্থানকালে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা তাকে বারবার দলে যোগদানের অনুরোধ জানালে তিনি প্রতিবারই তা প্রত্যাখান করে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের বলেছিলেন আমি ‘শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগ করি না, করবো না’। বোস্টনে সফরকারী কেন্দ্রিয় নেতাদের কাছে এ বিষয়টি বারবার তুলে ধরেছেন বোস্টন আওয়ামীলীগের নেতারা কিন্তু কেউই তা কর্ণপাত করেনি।
শুধু তাই নয় কয়েক বছর আগে বোস্টনে অনুষ্ঠিত নিউ ইংল্যান্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক ছাত্র সমিতি (ডুয়ানি)-এর এক অনুষ্ঠানে তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে প্রধান অতিথির আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। যেহেতু তিনি কোন দল বা আওয়ামীলীগ করেন না তাই তাঁকে শর্ত দেওয়া হয়েছিলে বক্তব্য শেষে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলতে পারবেন’ না। কিন্তু তিনি তা ভঙ্গ করে বক্তব্য শেষে প্রায় জোর করেই ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বললে তখন বেশ সমালোচিত হন।
অতি সাম্প্রতি তিনি বোস্টন ঘুরে গেলেন। সেখানে দু’গ্রুপ আওয়ামীলীগকে একত্রে না বসিয়ে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারী শিবিরকর্মীর নেতৃত্বাধীন গ্রুপের কর্মীদের সাথে বসে ঘরোয়া আলোচনা করলে অপর গ্রুপের নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
সব সময় আলোচনায় থাকতেই পছন্দ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে অতিকথনের কারণে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার খোরাক হচ্ছেন তিনি। নিয়মিতই ছুড়ছেন বিপজ্জনক শব্দ-বোমা। চাপে পড়ে উলটো গণমাধ্যমের কাঁধে দায় চাপিয়ে পার পাওয়ার চেষ্টা করছেন বারবার।
শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে ভারতের সহায়তা চেয়েছেন সর্বশেষ তার এমন বক্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। একটা দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দফায় দফায় এমন বালখিল্য দেখাবেন, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে মনে করছেন অনেকে।
গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে এক আলোচনাসভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা আমাদের আদর্শ। তাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে এবং সত্যিকারের সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক একটা দেশ হবে। সেজন্য শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারত সরকারকে সেটা করার অনুরোধ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতকে আরও বলেছি, আমরা উভয়ে উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড কখনো প্রশ্রয় দেব না। এটা যদি আমরা করতে পারি, ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ের মঙ্গল। শেখ হাসিনা আছেন বলে ভারতের যথেষ্ট মঙ্গল হচ্ছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় বইছে। দেশের বাইরে বিদেশেও রাজনৈতিক দলগুলো এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে বইছে সমালোচনার ঝড়।
নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক অঙ্গরাজ্যের আওয়ামীলীগের জনৈক নেতা বলেন, একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী হয়ে কিভাবে এ ধরনের বালখিল্য বক্তব্য দেন? তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চোখ ফাঁকি দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গত ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে করোনাকালীন সময়ে সরকারী সফরের কথা বলে যুক্তরাষ্ট্রে এসে চট্টগ্রামের সাবেক শিবিরকর্মীর সাথে চলাফেরা করেন এবং তার একটি বিশ্ববিদ্যালয় উদ্বোধন করেন। সংশ্লিষ্ট অঙ্গরাজ্যের আইন অমান্য করে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়টি উদ্বোধনের আয়োজন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়টি উদ্বোধন করেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। করোনা মহামারি কালীন সময়ে এমন একটি আয়োজন এবং এটি উদ্বোধন করার জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে আসায় প্রবাসীদের মাঝে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের এসব আইন অমান্য করে ইনোভেটিভ গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির কর্তৃপক্ষ বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়টি উদ্বোধনের আয়োজন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়টি উদ্বোধন করেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। করোনা মহামারি কালীন সময়ে এমন একটি আয়োজন এবং এটি উদ্বোধন করার জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে আসায় প্রবাসীদের মাঝে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র সফরে এসে করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মানতে মার্কিন জন প্রতিনিধিদের সাথে সরাসরি দেখা করার সুযোগ না পেলেও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে তিনি বাংলাদেশি মালিকানাধীন ইউনিভার্সিটি’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। সেখানে অনেক মানুষের সমাগম ঘটে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাস্ক পরেননি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও বিশ্ববিদ্যাল কর্তৃপক্ষসহ মঞ্চে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ এ নিয়ে তীব্র সমালোচিত হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠক করেন মোমেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি ব্লিঙ্কেনকে বলেছেন, ‘সামরিক বাহিনী থেকে জন্ম নেওয়া দলটি ছাড়া সব দল নির্বাচনে আসে। তাদের নির্বাচনে আনা একটি চ্যালেঞ্জ। তাদের ভোটে নিয়ে আসুন।
তার এমন বক্তব্য নিয়ে দেশে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। ওই সময় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটা তার ব্যক্তিগত মত। পরে মোমেন দেশে ফিরে সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তাব দেননি। এটা ছিল একটা কথার কথা।
বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো তার এ বক্তব্যকে পুঁজি করে সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছে। তার বক্তব্য নিয়ে সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও বিব্রত।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই মন্তব্য করেছেন, ওনার দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। না হলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। তার বক্তব্য নিয়ে চারদিকে যখন সমালোচনা, ঠিক তখনই মিডিয়ার ওপর দোষ চাপানোর কৌশল নিয়েছেন মোমেন।
শুক্রবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমের সমালোচনা করে বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারের লক্ষ্য যে আমরা সস্তায় অ্যাফোরডেবল প্রাইসে প্রত্যেককে খাবার দিতে চাই। মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন করতে চাই। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা আমরা দেখতে চাই না, অস্থিরতা দেখতে চাই না।’ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনাদের মিডিয়া অনেক সময় এই অস্থিরতা বাড়ানোর জন্য অনেক বানোয়াট খবর-টবর দেয়। এটা খুব দুঃখজনক।’
এর আগে ১২ আগস্ট সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণবিষয়ক এক মতবিনিময়সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ শ্রীলংকা হয়ে যাবে, একটি পক্ষ থেকে এমন প্যানিক ছড়ানো হচ্ছে। বাস্তবে এর কোনো ভিত্তি নেই। বৈশ্বিক মন্দায় অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা বেহেশতে আছি।’
তার এমন বক্তব্যের পর সব মহলে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। খোদ আওয়ামী লীগও তার এমন মন্তব্যে বিব্রতবোধ করে। ভেবেচিন্তে কথা বলতে দলের পক্ষ থেকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু ওই বক্তব্যের পরও মিডিয়ার ওপর দোষ চাপিয়ে তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনারা তো আমারে খায়া ফেললেন।’ যদিও পরে তার বক্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন।
মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার পর প্রথমেই ভারত সফরে যান মোমেন। ওই সময় পশ্চিমবঙ্গের একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতা বোঝাতে গিয়ে বলেন, উভয় দেশের সম্পর্ক খুবই ভালো। অনেকটা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মতো। এটি নিয়েও ব্যাপক সমালোচনা হয়।
সম্প্রতি সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের নাগরিকদের জমা করা অর্থের বিষয়ে বাংলাদেশ সুনির্দিষ্ট তথ্য চায়নি বলে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যকে মিথ্যা বলে দাবি করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তার এমন বক্তব্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিব্রতবোধ করে। একটি দেশের রাষ্ট্রদূতকে এভাবে সরাসরি আক্রমণ করে বক্তব্য দেওয়া কূটনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না বলে মনে করেন অনেকে।
গত ৩১ জুলাই নিউ ইয়র্কের বই মেলার সমাপনী দিন হঠাৎ করেই উপস্থিত হয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এবারে বিমানবন্দরে তাঁকে অভর্থনা জানাতে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও কূটনৈতিকদের সাথে হাজির হয়েছিলেন ভার্জিনিয়া প্রবাসী চট্টগ্রামের সাবেক শিবির কর্মি। গত কয়ক বছরে ধরে যুক্তরাষ্ট্রে এসেই চট্টগ্রামের সাবেক উক্ত শিবির কর্মী ও ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সাথেই চলাফেরা করছেন। যা ভালো চোখে দেখছেন না আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। অচিরেই এ ধরনের বেহুদা মন্ত্রীর পদত্যাগ বা অব্যাহতি দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি থাকাকালীন সময় থেকেই একের পর এক অশালীন কথাবার্তা ও মিথ্যাচারে বোস্টনসহ যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ২০১৫ সালে জাতিসংঘের সাধারন অধিবেশন শেষে বাংলাদেশ মিশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে তাঁর এক ভাড়াটে সাংবাদিকের তৈলাক্ত সুপারিশে স্থায়ী প্রতিনিধি থেকে সরিয়ে সরাসরি রাজনীতির মাঠে নিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী। এরপর অনেকটা হঠাৎ করেই মন্ত্রিত্ব পেয়েছিলেন। ভাইয়ের (প্রয়াত অর্থমন্ত্রী) হাত ধরে সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ আসন থেকে মনোনয়ন পান তিনি। ২০১৮-এর নির্বাচনে বিজয়ী হন। প্রথমবার এমপি হয়েই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। স্পর্শকাতর, গুরুত্বপূর্ণ এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচিত-সমালোচিত মোমেন।
বোস্টনে অবস্থানকালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত আইন লঙ্ঘন করেছন। তাঁর প্রথম স্ত্রী নাসিম পারভীন (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বান্ধবী)-এর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর তাঁর কিশোর বয়সী সন্তানদের কোন ভরণ পোষন দেননি, যা যুক্তরাষ্ট্রের আইনে দন্ডনীয় অপরাধ। সেই থেকে তিনি তাঁ সেই সন্তানদের আর কখনই খোঁজ নেয়নি। তাঁর এ অমানবিকতার কারণে প্রবাসীরা কেউই তাঁকে ভালো চোখে দেখতো না। সেখানকার প্রবাসীদের কাছে তিনি ছিলেন প্রায় ঘৃণিত।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি থাকাকালীন সময়ে নিউ জার্সির কীন বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এক সেমিনারে শত শত দর্শকদের মাঝে অশালীন (যা মুখ প্রকাশ করার মত নয়) বক্তব্য প্রদান করে হাসির পাত্র হয়েছিলেন।
বোস্টনে অবস্থানকালে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা তাকে বারবার দলে যোগদানের অনুরোধ জানালে তিনি প্রতিবারই তা প্রত্যাখান করে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের বলেছিলেন আমি ‘শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগ করি না, করবো না’। বোস্টনে সফরকারী কেন্দ্রিয় নেতাদের কাছে এ বিষয়টি বারবার তুলে ধরেছেন বোস্টন আওয়ামীলীগের নেতারা কিন্তু কেউই তা কর্ণপাত করেনি।
শুধু তাই নয় কয়েক বছর আগে বোস্টনে অনুষ্ঠিত নিউ ইংল্যান্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক ছাত্র সমিতি (ডুয়ানি)-এর এক অনুষ্ঠানে তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে প্রধান অতিথির আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। যেহেতু তিনি কোন দল বা আওয়ামীলীগ করেন না তাই তাঁকে শর্ত দেওয়া হয়েছিলে বক্তব্য শেষে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলতে পারবেন’ না। কিন্তু তিনি তা ভঙ্গ করে বক্তব্য শেষে প্রায় জোর করেই ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বললে তখন বেশ সমালোচিত হন।
অতি সাম্প্রতি তিনি বোস্টন ঘুরে গেলেন। সেখানে দু’গ্রুপ আওয়ামীলীগকে একত্রে না বসিয়ে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারী শিবিরকর্মীর নেতৃত্বাধীন গ্রুপের কর্মীদের সাথে বসে ঘরোয়া আলোচনা করলে অপর গ্রুপের নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
সব সময় আলোচনায় থাকতেই পছন্দ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে অতিকথনের কারণে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার খোরাক হচ্ছেন তিনি। নিয়মিতই ছুড়ছেন বিপজ্জনক শব্দ-বোমা। চাপে পড়ে উলটো গণমাধ্যমের কাঁধে দায় চাপিয়ে পার পাওয়ার চেষ্টা করছেন বারবার।
শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে ভারতের সহায়তা চেয়েছেন সর্বশেষ তার এমন বক্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। একটা দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দফায় দফায় এমন বালখিল্য দেখাবেন, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে মনে করছেন অনেকে।
গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে এক আলোচনাসভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা আমাদের আদর্শ। তাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে এবং সত্যিকারের সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক একটা দেশ হবে। সেজন্য শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারত সরকারকে সেটা করার অনুরোধ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতকে আরও বলেছি, আমরা উভয়ে উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড কখনো প্রশ্রয় দেব না। এটা যদি আমরা করতে পারি, ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ের মঙ্গল। শেখ হাসিনা আছেন বলে ভারতের যথেষ্ট মঙ্গল হচ্ছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় বইছে। দেশের বাইরে বিদেশেও রাজনৈতিক দলগুলো এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে বইছে সমালোচনার ঝড়।
নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক অঙ্গরাজ্যের আওয়ামীলীগের জনৈক নেতা বলেন, একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী হয়ে কিভাবে এ ধরনের বালখিল্য বক্তব্য দেন? তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চোখ ফাঁকি দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গত ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে করোনাকালীন সময়ে সরকারী সফরের কথা বলে যুক্তরাষ্ট্রে এসে চট্টগ্রামের সাবেক শিবিরকর্মীর সাথে চলাফেরা করেন এবং তার একটি বিশ্ববিদ্যালয় উদ্বোধন করেন। সংশ্লিষ্ট অঙ্গরাজ্যের আইন অমান্য করে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়টি উদ্বোধনের আয়োজন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়টি উদ্বোধন করেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। করোনা মহামারি কালীন সময়ে এমন একটি আয়োজন এবং এটি উদ্বোধন করার জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে আসায় প্রবাসীদের মাঝে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের এসব আইন অমান্য করে ইনোভেটিভ গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির কর্তৃপক্ষ বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়টি উদ্বোধনের আয়োজন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়টি উদ্বোধন করেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। করোনা মহামারি কালীন সময়ে এমন একটি আয়োজন এবং এটি উদ্বোধন করার জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে আসায় প্রবাসীদের মাঝে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র সফরে এসে করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মানতে মার্কিন জন প্রতিনিধিদের সাথে সরাসরি দেখা করার সুযোগ না পেলেও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে তিনি বাংলাদেশি মালিকানাধীন ইউনিভার্সিটি’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। সেখানে অনেক মানুষের সমাগম ঘটে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাস্ক পরেননি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও বিশ্ববিদ্যাল কর্তৃপক্ষসহ মঞ্চে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ এ নিয়ে তীব্র সমালোচিত হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠক করেন মোমেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি ব্লিঙ্কেনকে বলেছেন, ‘সামরিক বাহিনী থেকে জন্ম নেওয়া দলটি ছাড়া সব দল নির্বাচনে আসে। তাদের নির্বাচনে আনা একটি চ্যালেঞ্জ। তাদের ভোটে নিয়ে আসুন।
তার এমন বক্তব্য নিয়ে দেশে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। ওই সময় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটা তার ব্যক্তিগত মত। পরে মোমেন দেশে ফিরে সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তাব দেননি। এটা ছিল একটা কথার কথা।
বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো তার এ বক্তব্যকে পুঁজি করে সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছে। তার বক্তব্য নিয়ে সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও বিব্রত।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই মন্তব্য করেছেন, ওনার দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। না হলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। তার বক্তব্য নিয়ে চারদিকে যখন সমালোচনা, ঠিক তখনই মিডিয়ার ওপর দোষ চাপানোর কৌশল নিয়েছেন মোমেন।
শুক্রবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমের সমালোচনা করে বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারের লক্ষ্য যে আমরা সস্তায় অ্যাফোরডেবল প্রাইসে প্রত্যেককে খাবার দিতে চাই। মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন করতে চাই। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা আমরা দেখতে চাই না, অস্থিরতা দেখতে চাই না।’ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনাদের মিডিয়া অনেক সময় এই অস্থিরতা বাড়ানোর জন্য অনেক বানোয়াট খবর-টবর দেয়। এটা খুব দুঃখজনক।’
এর আগে ১২ আগস্ট সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণবিষয়ক এক মতবিনিময়সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ শ্রীলংকা হয়ে যাবে, একটি পক্ষ থেকে এমন প্যানিক ছড়ানো হচ্ছে। বাস্তবে এর কোনো ভিত্তি নেই। বৈশ্বিক মন্দায় অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা বেহেশতে আছি।’
তার এমন বক্তব্যের পর সব মহলে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। খোদ আওয়ামী লীগও তার এমন মন্তব্যে বিব্রতবোধ করে। ভেবেচিন্তে কথা বলতে দলের পক্ষ থেকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু ওই বক্তব্যের পরও মিডিয়ার ওপর দোষ চাপিয়ে তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনারা তো আমারে খায়া ফেললেন।’ যদিও পরে তার বক্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন।
মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার পর প্রথমেই ভারত সফরে যান মোমেন। ওই সময় পশ্চিমবঙ্গের একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতা বোঝাতে গিয়ে বলেন, উভয় দেশের সম্পর্ক খুবই ভালো। অনেকটা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মতো। এটি নিয়েও ব্যাপক সমালোচনা হয়।
সম্প্রতি সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের নাগরিকদের জমা করা অর্থের বিষয়ে বাংলাদেশ সুনির্দিষ্ট তথ্য চায়নি বলে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যকে মিথ্যা বলে দাবি করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তার এমন বক্তব্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিব্রতবোধ করে। একটি দেশের রাষ্ট্রদূতকে এভাবে সরাসরি আক্রমণ করে বক্তব্য দেওয়া কূটনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না বলে মনে করেন অনেকে।
গত ৩১ জুলাই নিউ ইয়র্কের বই মেলার সমাপনী দিন হঠাৎ করেই উপস্থিত হয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এবারে বিমানবন্দরে তাঁকে অভর্থনা জানাতে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও কূটনৈতিকদের সাথে হাজির হয়েছিলেন ভার্জিনিয়া প্রবাসী চট্টগ্রামের সাবেক শিবির কর্মি। গত কয়ক বছরে ধরে যুক্তরাষ্ট্রে এসেই চট্টগ্রামের সাবেক উক্ত শিবির কর্মী ও ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সাথেই চলাফেরা করছেন। যা ভালো চোখে দেখছেন না আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। অচিরেই এ ধরনের বেহুদা মন্ত্রীর পদত্যাগ বা অব্যাহতি দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
Discussion about this post