ফজলে রাব্বীর গ্রহণযোগ্যতা অতুলনীয়: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ফজলে রাব্বী মিয়া দক্ষ আইনজীবী ছিলেন। তিনি ডেপুটি স্পিকার হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দল পরিবর্তন করেও এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। একটি জায়গা থেকে বার বার জয়ী হওয়া অর্থাৎ তার নিজস্ব জনপ্রিয়তা ছিল। মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা অতুলনীয়। যেকোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জন্য মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা তিনি অর্জন করতে পেরেছিলেন।’

রোববার (২৮ আগস্ট) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে তিনি এসব কথা বলেন।

সংসদ অধিবেশনে শোক প্রস্তাবটি সর্বসম্মতক্রমে গ্রহণ করা হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা আলোচনায় অংশ নেন। ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে শোকপ্রস্তাব গ্রহণের পর রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদের বৈঠক মুলতবি করা হয়। এর আগে ফজলে রাব্বী মিয়াসহ প্রয়াত অন্যদের সম্মানে দুই মিনিট নীরবতা পালন ও তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফজলে রাব্বী মিয়া সাত বার এই সংসদে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ছাত্ররাজনীতি থেকে তার যাত্রা শুরু। তিনি ছাত্রলীগ করেছেন, যুবলীগ করেছেন, আওয়ামী লীগ করেছেন। একসময় তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। তখনও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বিভিন্ন সংসদীয় কমিটিতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। জাতীয় পার্টির এমপি থাকার সময় আমার সাথে মঝেমধ্যে তার দেখা হতো, কথা হতো। তিনি ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসতে চাইতেন। আমি তাকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসলাম। বলেছিলাম, আপনি আসেন, আসল জায়গাটিতে চলে আসেন। তিনি ঠিকই ফিরে এলেন। তাকে আমরা ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত করলাম।’

ফজলে রাব্বী মিয়ার নির্বাচনী এলাকা বন্যাকবলিত ও দুর্ভিক্ষপীড়িত, উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ওই এলাকার মানুষের সার্বিক উন্নয়নে তিনি সব সময় আন্তরিকতার সাথে কাজ করেছেন। বাংলাদেশের যে অঞ্চলগুলো মঙ্গাপীড়িত ছিল, গাইবান্ধা তার মধ্যে একটি। তবে, আওয়ামী লীগ সরকারের পদক্ষেপের ফলে কখনো মঙ্গা দেখা দেয়নি। আমরা এলাকার উন্নয়নে যথেষ্ট কাজ করছি। নদীভাঙন রোধে ব্যাপক পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি। যোগোযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করেছি। তবে, আরও উন্নয়ন দরকার। সংসদে তিনি নিজের এলাকার উন্নয়নে কথা বলতেন। তার মতো নিবেদিতপ্রাণ মানুষের মৃত্যু আমাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতির। দীর্ঘদিন তিনি অসুস্থ ছিলেন। সর্বশেষ তিনি আমেরিকায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। প্রতিদিন তার স্বাস্থ্যের খবর পেতাম। সত্যি কথা বলতে, হাসপাতাল থেকে ভালো খবর কখনো আসেনি। আস্তে আস্তে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। স্ত্রী-সন্তান হারিয়ে কষ্ট নিয়েই তিনি চলে গেছেন। আমরা ভালো দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান হারালাম। তার মৃত্যুতে দেশের বিরাট ক্ষতি হলো।’