মোঃ রাকিব হোসেন, কুমারখালী প্রতিনিধিঃ
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,প্রবাসী হুমায়ুন কবির সেলিম ও তার বড় ভাই আলমগীর কবিরের নিজ নাময়ীয় হাসিমপুর মৌজার ৪৫৫,৪৫৯,৪৬০ ও ৪৬১ নং দাগের জমির কয়েক জায়গা থেকে তাদের আপন সহদর ভাই জাহাঙ্গীর কবির কিছু স্থানীয় দুষ্কৃতিকারীদের সাথে আঁতাত করে অবৈধভাবে ৩০ টি গাছ সর্বসাকুল্যে ১ লক্ষ টাকা বিক্রি করেছে।
গত তিন দিন ধরে অবৈধভাবে বিক্রিত গাছ কাটাকাটি চললেও ভুক্তভোগী হুমায়ুন কবির ও আলমগীর কবির কুমারখালী থানা ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন কাজ হয়নি। ভুক্তভোগীদের দাবী তার ভাই জাহাঙ্গীর কিছু চিহ্নিত মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে জোরপূর্বক এই কাজ করছে।
ভুক্তভোগী প্রবাসী হুমায়ুন কবির জানান, আমার ভাই জাহাঙ্গীর একজন নেশাগ্রস্ত মানুষ,সে আমার মাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে নিজের আয়ত্তে রেখে নেশার টাকার জোগান দিতে আমাদের কাছ থেকে বিভিন্ন পন্থায় টাকা হাতিয়ে নিতো,আমরা দুই ভাই তা বুঝতে পেরে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিই এবং মাকে আমাদের কাছে নিতে চাই। তাই সে এখন আমাদের মাকে জিম্মি করে হুমকি ধামকি দিয়ে তার ভরনপোষণ চালানোর ছল করে আমাদের জায়গা থেকে জোরপূর্বক গাছ কেটে বিক্রি করছে।
আরেক ভুক্তভোগী আলমগীর কবির বলেন, জাহাঙ্গীরকে আমরা অনেক ভালো করার চেষ্টা করেছি কিন্তু সে পুরো মাদকাসক্ত হয়ে গেছে। তাই এখন মাদকের টাকা জোগার করতে আমার নাকে জিম্মি করে স্থানীয় কিছু ভাড়াটে মাস্তান সাথে নিয়ে আমাদের দুই ভাইয়ের সম্পদ গ্রাস করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আমি এব্যাপারে বাধা দিতে গেলে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। এতকিছুর পরও আমরা থানা কিংবা স্থানীয় চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে কোন উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ দেখিনি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর কবির জানিক বলেন, ওরা দুই ভাই আমার মাকে দেখভাল করে না। তাই স্থানীয় সালিশী বৈঠকে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত কাগজের বলে আমি মায়ের খরচ চালাতে গাছ নিক্রি করেছি। তাছাড়াও ঐ দাগে আমার মা ও বোনের সম্পত্তির ভাগ রয়েছে।
উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল বাকী বাদশাকে গাছ কাটার অনুমতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এটা ওদের ভাই ভাইয়ের ব্যপার,গাছ কাটা নিয়ে আমার কাছে অভিযোগ আসলে আমি গ্রাম পুলিশকে পাঠায় কিন্তু তারা আমার কথা শোনেনি। আর আমি কোন অনুমতি পত্রও দিইনি। তবে পূর্বে তাদের মাকে তারা দেখভাল করে না এই মর্মে পরিষদে তার মায়ের দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা কয়েকবার সালিশি বৈঠকে বসেছিলাম।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন,এই ঘটনায় অভিযোগ পেলে অভিযুক্ত ব্যক্তি শালিশী বৈঠকের একটি চেয়ারম্যানের অনুমতি পত্র দেখায়,তাই তাৎক্ষণিক কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা সম্ভব হয়নি। তবে এখন সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উল্লেখ্য যে এই ঘটনার পূর্বেও নিজেদের ভাইয়ে ভাইয়ে জমিজমা সংক্রান্ত বিবাদের জেরে বেশ কয়েকবার থানাতে অভিযোগ দিয়েও কোন বিচার পাননি ভুক্তভোগী হুমায়ুন কবির সেলিম।এছাড়াও বর্তমানে তিনি তার বড় ভাই ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে প্রবাসে দুশ্চিন্তায় জীবন পার করছে বলে জানান।