মোঃ হারুন অর রশিদঃ
চট্টগ্রামে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ) এর ৫০তম ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা লক্ষ লক্ষ নবীপ্রেমী ধর্মপ্রাণ মুসলমান নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবর, নারায়ে রিসালত ইয়া রাসূলাল্লাহ, নারে গাউছিয়া গাউসুল আজম দস্তগগীর হামদ, নাত ও দরুদে মুখরিত পুরু চট্টগ্রাম নগরী।
রবিবার (৯ অক্টোবর) সকালে নগরীর ষোলশহরের জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকাহ-এ-কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে জুলুস শুরু হয়। এতে অংশ নিতে এদিন ভোর থেকে নবীপ্রেমী মানুষরা আসতে শুরু করে।
যা পরবর্তীতে বিবিরহাট, মুরাদপুর, মির্জাপুল, কাতালগঞ্জ, চকবাজার অলিখাঁ মসজিদ, প্যারেড মাঠের পশ্চিম পাশ, চট্টগ্রাম কলেজ, গণি বেকারি, খাস্তগীর স্কুল, ডা. এমএ হাশেম চত্বর (জামালখান), আসকার দীঘির উত্তর পাড়, কাজীর দেউড়ি, আলমাস, ওয়াসা, জিইসি, ২ নম্বর গেট, মুরাদপুর হয়ে পুনরায় মাদ্রাসা মাঠে আসে জুলুস।
জুলুসে মানুষের সমাগম চোখের দৃষ্টিশক্তির বাইরে ছিল। যেদিকে থাকায় মানুষ আর মানুষ। এক কথায় চোখের দৃষ্টিশক্তি ফেল। ঠিক কি পরিমান মানুষের সমাগম হয়েছে তা নির্ণয় করা যায়নি। তবে এবার লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতি গিনিজ বুকে নাম লিপিবদ্ধ হবে এমনটা প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা ।
আওলাদে রাসুল, গাউসে জামান হজরতুলহাজ আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ’র (মজিআ) নেতৃত্বে শুরু হওয়া জুলুসের নেতৃত্ব দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ (মজিআ) এবং বিশেষ অতিথি আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ (মজিআ)।
গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতেয়ার বলেন, জুলুসে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার জন্য আনজুমান সিকিউরিটি ফোর্সের (এএসএফ) তিন হাজার, গাউসিয়া কমিটির নেতা-কর্মী ও জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার ছাত্র মিলে ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করছেন। যথারীতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।
জানা গেছে, জুলুসের রোডম্যাপের মোড়ে মোড়ে অপেক্ষা করেন স্বেচ্ছাসেবক ও হুজুর কেবলার ভক্তরা। জুলুসকে ঘিরে মুরাদপুর, বিবিরহাট, মাদ্রাসা এলাকায় শত শত টুপি, মাস্ক, আতর, সুরমা, তসবিহ, পাঞ্জাবি, ইসলামী বই, খাবার দোকান বসেছে। জুলুস শেষে জোহরের নামাজ শেষে দোয়া ও আখেরি মোনাজাত করা হয়।
গাউসিয়া কমিটি, আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন তোরণ, সড়কদ্বীপ, সড়ক বিভাজক সাজিয়েছে। জুলুসের মেহমানদের শরবত, চকলেট, খেজুর, জিলাপি, জুস বিতরণ করছেন অনেক ভক্ত। নারী, শিশুরা বিভিন্ন ভবনের ছাদ, জানালা দিয়ে স্বাগত জানান জুলুসকে।
হুজুর কেবলার জন্য বিশেষভাবে সাজানো গাড়িতে আছেন আনজুমান এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শামসুদ্দিন, পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, এবার হিজরি বর্ষ অনুযায়ী জুলুসের ৫০তম আয়োজন। তাই জুলুসকে ঘিরে চট্টগ্রাম সেজেছে বর্ণিল সাজে। করোনা মহামারিতে দুই বছর সীমিত পরিসরে হয়েছিল চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুস।
Discussion about this post