বুধবার (১৬ নভেম্বর) গভীর রাতে তাকে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত উজ্জ্বল সরকার (৪৫) উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার রাজাবাড়ী গ্রামের মৃত আব্দুল জলিল সরকারের ছেলে।
পরে বুধবার সকালে উজ্জ্বল সরকারকে আদালতে প্রেরণ করে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছে পুলিশ।
এবিষয়ে কালিহাতী থানার ওসি মোল্লা আজিজুর রহমান জানান, বাদীর মামলার প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে বুধবার রাত প্রায় ২ টার দিকে টাঙ্গাইল থেকে এ মামলার প্রধান আসামি উজ্জ্বল সরকারকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়াও নগদ ১৪ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। পরে উজ্জ্বল সরকারকে বুধবার সকালে টাঙ্গাইল আদালতে প্রেরণ করে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। বাকি টাকা, মোবাইল ফোন ও থ্রিপিস উদ্ধারসহ অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, মামলার বাদী নরসিংদী সদর উপজেলার বাহেরচর গ্রামের মৃত ধনু মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন ফটিক একজন কাপড় ব্যবসায়ী। গাজীপুরের ভবানীপুর শেখবাড়ীতে তার একটি গোডাউন রয়েছে। গ্রাহকদের চাহিদা মোতাবেক সারাদেশে তিনি পাইকারী ও খুচরা পণ্য সরবরাহ করে থাকেন। ওই সুবাদে কিছুদিন পূর্বে কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার রাজাবাড়ী গ্রামের মৃত আব্দুল জলিল সরকারের ছেলে উজ্জ্বল সরকার কাপড় ব্যবসায়ী পরিচয়ে পরিচিত হয়ে স্বশরীরে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তিন দফায় থ্রি পিস ক্রয় করেন। গত কয়েকদিন পূর্বে পুনরায় ৩০০ থ্রি পিচ অর্ডার করে ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে এলেঙ্গা পৌঁছে দিতে বললে আনোয়ার হোসেন জানান- “এতগুলো মালের অর্ডার, মালগুলো আমি যে পাঠামু তখন আপনি যদি বলেন এতগুলো মাল রিজেক্ট। তাই মালগুলো আপনি এসে দেখে নিয়ে যান।” তখন উজ্জ্বল সরকার ভূক্তভোগী আনোয়ার হোসেনকে মালগুলো (থ্রি পিচ) দিয়ে নগদ টাকা নিয়ে যেতে বলেন। সেই মোতাবেক তিনি গত শনিবার (১৩ নভেম্বর) ৩০০ থ্রি পিচ নিয়ে এসে ফোন দিলে উজ্জ্বল জানায় তিনি তার এলেঙ্গাতে নেই জানিয়ে মালগুলো নিতে তার স্ত্রী পরিচয়ে এক মহিলাকে পাঠিয়ে দেয়। পরে ওই মহিলাকে দিয়ে কাপড়গুলো বাড়িতে দিয়ে টাকা নিয়ে আসতে বলে কৌশলে অপহরণ করে তাকে এলেঙ্গা উত্তরপাড়া একটি বাসায় আটকে রাখা হয়। পরে উজ্জ্বল, মাসুদসহ পাঁচজন মিলে তার উপর পাশবিক অত্যাচার চালায়। প্লাস দিয়ে পুরুষাঙ্গ চেপে ধরে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে ব্যবসায়ী আনোয়ারের কাছে থাকা নগদ ১ লাখ ৭০ হাজার, বিকাশে থাকা ১১ হাজার ৮৭৭ টাকা (সেন্ড মানি), ৩০০ পিস থ্রি পিচ, একটি আই ফোন ও জেটিই সহ দু’টি ফোন ছিনিয়ে নিয়ে গভীর রাতে উজ্জ্বল সরকারের প্রাইভেটকারযোগে মহাসড়কের রাজাবাড়ী এলাকায় ফেলে দেয়। সেইসাথে বলে যায় এ বিষয়ে মামলা করলে খুন করে ফেলব। পরে কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আনোয়ার হোসেন ফটিক কালিহাতী থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ওই বাসায় অভিযান চালায়। পরে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার সন্দেহে মাছুদ রানার বোন শিল্পী ও ভগ্নিপতি আফছারকে আটক করে গত ১৫ নভেম্বর জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
Discussion about this post