ইমা এলিস/ নিউ ইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্রে নিউ ইয়র্ক শহর থেকে প্রায় পৌনে চারশত মাইল দূরে বাফেলো শহর। অতি সাম্প্রতি করোনা ভাইরাস মহামারির ফলে নিউ ইয়র্ক শহর থেকে হাজার হাজার প্রবাসী বাংলদেশি সেখানে বাড়ি কিনে স্থায়ীভাবে থাকার বনোবস্ত করেন। গত এক সপ্তাহ ধরে ধ্বংসাত্মক তুষারঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বাফেলো শহর। ফলে নতুন করে বাফেলো ছাড়ার কথা ভাবছেন প্রবাসীরা।
জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে গিয়ে মধ্যবিত্তের নাভিশ্বাস উঠেছিলো নিউ ইয়র্ক শহরে। প্রাত্যহিক জীবনেও ঘটছে নানান ছন্দপতন। এ কারণে সুন্দর এক জীবনের আশায় অনেকেই ছেড়ে গেছেন বিশ্বের রাজধানী খ্যাত এই নিউইয়র্ক সিটি। যারা নিউইয়র্ক ছেড়ে গেছেন, তাদের কেউ গেছেন ভিন্ন রাজ্যে, কেউ নিউইয়র্ক রাজ্যের বাফেলোতে। কিন্তু দুর্ভোগ যেন পিছু ছাড়ছে না তাদের। সেখানে গিয়ে মিলছে না ভালো কর্মসংস্থান। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এসব কারণে অনেকেই এখন বাফেলো ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন।
সর্বশেষ চলতি সপ্তাহে ধ্বংসাত্মক তুষারঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বাফেলো। এ পর্যন্ত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে সেখানে। স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। বাফেলোকে যুদ্ধবিদ্ধস্ত অঞ্চলের মতো দেখাচ্ছে বলে রাজ্যের গভর্নর ক্যাথি হোকুল মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, এবারের ঝড় বাফেলোর ইতিহাসে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক হিসেবে লেখা থাকবে। প্রকৃতি তার সর্বশক্তি দিয়ে আঘাত হেনেছে। তিনি আরো বলেন, বাসিন্দারা ‘জীবন হুমকির’ মতো পরিস্থিতিতে পড়েছেন। জরুরি যানবাহন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছুতে পারেনি, তুষারে আটকে গিয়েছিল।
এর আগে মাত্র এক মাস আগে, অর্থাৎ ২৫ নভেম্বর তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বাফেলোর জনজীবন। বরফের নিচে চাপা পড়ে পুরো শহর। প্রায় দুই সপ্তাহ অচল ছিল সেখানকার জনজীবন। ফলে যারা রোজ আয় করেন সেসব পরিবার অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্যে পড়েন। সেই ধকল কাটিয়ে ওঠার আগেই আবারো বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হলো সেখানকার বাসিন্দাদের।
গত বছরের জুলাই মাসে নিউইয়র্ক শহরের এলমহার্স্ট ছেড়ে সপরিবারে বাফেলো যান আব্দুল মালেক। এই প্রবাসী বাংলাদেশি এখন দীর্ঘশ্বাস ফেলছেন। তিনি বলেন, আরেক বাংলাদেশির প্রলোভনে পড়ে প্রিয় শহর ছেড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু লাভ কিছুই হলো না। তিনি বলেন, বাফেলো যাবার পর কিছু দিন উবার চালিয়েছি। কিন্তু এখানে যিনি আসছেন তাদের বেশিরভাগই উবার চালান। সবাই যদি উবারের চালক হন তাহলে যাত্রী হবেন কে? তিনি বলেন, বাফেলো কমবেশী সবার ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে। যারা ভ্রমণে আসেন তারা মাঝেমধ্যে উবারের যাত্রী হন। আয় একেবারেই কমে গেছে। ফলে যে অর্থনৈতিক দুরাবস্থা ছিল, তেমনই রয়ে গেছে। এর চেয়ে নিউইয়র্ক সিটিতে ফিরে যাওয়াই ভালো।
মিসিসিপি থেকে গত সামারে এসে বাফেলোতে বসতি গড়েছিলেন প্রবাসের একজন পরিচিত মুখ ও সংস্কৃতিকর্মী। এক তুষারঝড়ের কবলে পড়ে তারা সিদ্ধান্ত বদলেছেন। ফিরে যাবেন সেই মিসিসিপিতেই। তিনি বলেন, কোনোভাবেই সেখানে বসবাস সম্ভব নয়।
চলতি বছরের জুনে বাফেলোতে বাড়ি কিনেছেন আব্দুল কুদ্দুস। তড়িঘড়ি করে বাসায় উঠেছেন। কিন্তু সুবিধা করতে পারছেন না। তিনি বলেন, কোনোভাবে দিন কেটে যাচ্ছিল। কিন্তু এক মাসের ব্যবধানে দুটি প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখে মনে হচ্ছে আর বাফেলোতে থাকা হবে না। তিনি বলেন, এখানকার দুর্যোগ মোকাবেলা ব্যবস্থা খুবই খারাপ। ৯১১-এ কল করলেও পুলিশ সহজে আসে না। সর্বশেষ তুষারঝড়ের কবলে পড়ে বেঁচে আছি, এটাই বড় পাওয়া।
তিনি জানান, টিভির খবরে দেখেছি-এই তুষারঝড়ে দুই থেকে ছয় বছর বয়সী শিশুদের নিয়ে একটি পরিবারকে প্রতিকূল পরিবেশ থেকে উদ্ধারের জন্য দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। বাফেলোতে এখন মূলত বরফ গলার জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে সেখানকার বাসিন্দাদের। আটকে পড়া যানবাহনগুলো বরফমুক্ত হলে আরও ক্ষতিগ্রস্তদের সন্ধান করা হবে। ফলে সেখানে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
প্রবাসী বাংলাদেশি আতিয়ার জানান, বাফেলো বসবাসের অযোগ্য। নতুন স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু আর নয়। এখন আবার নিউইয়র্ক সিটিতে ফিরে যাব। তিনি বলেন, বাড়ি বিক্রির জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছি। বিক্রি হলেই চলে যাব। সে পর্যন্ত অপেক্ষা।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আবহাওয়া অনুকূলে আসবে। তার আগে জরুরি প্রয়োজন না হলে ভ্রমণ না করতে বলা হয়েছে। গত এক সপ্তাহে জনজীবনের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলা এ আবহাওয়ায় আনুমানিক আড়াই লাখ বাড়ি ও প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়। পরে বিদ্যুৎ ফিরে এসেছে।
বাফেলোতে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে কয়েকজনকে গাড়ির ভেতর এবং তুষারে ঢাকা রাস্তা থেকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। বাফেলো ছাড়াও ভারমন্ট, ওহাইও, মিজৌরি, উইসকনসিন, কানসাস এবং কলোরাডোতে ঠাণ্ডা ও ঝড়ে মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে।
সর্বশেষ চলতি সপ্তাহে ধ্বংসাত্মক তুষারঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বাফেলো। এ পর্যন্ত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে সেখানে। স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। বাফেলোকে যুদ্ধবিদ্ধস্ত অঞ্চলের মতো দেখাচ্ছে বলে রাজ্যের গভর্নর ক্যাথি হোকুল মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, এবারের ঝড় বাফেলোর ইতিহাসে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক হিসেবে লেখা থাকবে। প্রকৃতি তার সর্বশক্তি দিয়ে আঘাত হেনেছে। তিনি আরো বলেন, বাসিন্দারা ‘জীবন হুমকির’ মতো পরিস্থিতিতে পড়েছেন। জরুরি যানবাহন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছুতে পারেনি, তুষারে আটকে গিয়েছিল।
এর আগে মাত্র এক মাস আগে, অর্থাৎ ২৫ নভেম্বর তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বাফেলোর জনজীবন। বরফের নিচে চাপা পড়ে পুরো শহর। প্রায় দুই সপ্তাহ অচল ছিল সেখানকার জনজীবন। ফলে যারা রোজ আয় করেন সেসব পরিবার অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্যে পড়েন। সেই ধকল কাটিয়ে ওঠার আগেই আবারো বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হলো সেখানকার বাসিন্দাদের।
গত বছরের জুলাই মাসে নিউইয়র্ক শহরের এলমহার্স্ট ছেড়ে সপরিবারে বাফেলো যান আব্দুল মালেক। এই প্রবাসী বাংলাদেশি এখন দীর্ঘশ্বাস ফেলছেন। তিনি বলেন, আরেক বাংলাদেশির প্রলোভনে পড়ে প্রিয় শহর ছেড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু লাভ কিছুই হলো না। তিনি বলেন, বাফেলো যাবার পর কিছু দিন উবার চালিয়েছি। কিন্তু এখানে যিনি আসছেন তাদের বেশিরভাগই উবার চালান। সবাই যদি উবারের চালক হন তাহলে যাত্রী হবেন কে? তিনি বলেন, বাফেলো কমবেশী সবার ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে। যারা ভ্রমণে আসেন তারা মাঝেমধ্যে উবারের যাত্রী হন। আয় একেবারেই কমে গেছে। ফলে যে অর্থনৈতিক দুরাবস্থা ছিল, তেমনই রয়ে গেছে। এর চেয়ে নিউইয়র্ক সিটিতে ফিরে যাওয়াই ভালো।
মিসিসিপি থেকে গত সামারে এসে বাফেলোতে বসতি গড়েছিলেন প্রবাসের একজন পরিচিত মুখ ও সংস্কৃতিকর্মী। এক তুষারঝড়ের কবলে পড়ে তারা সিদ্ধান্ত বদলেছেন। ফিরে যাবেন সেই মিসিসিপিতেই। তিনি বলেন, কোনোভাবেই সেখানে বসবাস সম্ভব নয়।
চলতি বছরের জুনে বাফেলোতে বাড়ি কিনেছেন আব্দুল কুদ্দুস। তড়িঘড়ি করে বাসায় উঠেছেন। কিন্তু সুবিধা করতে পারছেন না। তিনি বলেন, কোনোভাবে দিন কেটে যাচ্ছিল। কিন্তু এক মাসের ব্যবধানে দুটি প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখে মনে হচ্ছে আর বাফেলোতে থাকা হবে না। তিনি বলেন, এখানকার দুর্যোগ মোকাবেলা ব্যবস্থা খুবই খারাপ। ৯১১-এ কল করলেও পুলিশ সহজে আসে না। সর্বশেষ তুষারঝড়ের কবলে পড়ে বেঁচে আছি, এটাই বড় পাওয়া।
তিনি জানান, টিভির খবরে দেখেছি-এই তুষারঝড়ে দুই থেকে ছয় বছর বয়সী শিশুদের নিয়ে একটি পরিবারকে প্রতিকূল পরিবেশ থেকে উদ্ধারের জন্য দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। বাফেলোতে এখন মূলত বরফ গলার জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে সেখানকার বাসিন্দাদের। আটকে পড়া যানবাহনগুলো বরফমুক্ত হলে আরও ক্ষতিগ্রস্তদের সন্ধান করা হবে। ফলে সেখানে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
প্রবাসী বাংলাদেশি আতিয়ার জানান, বাফেলো বসবাসের অযোগ্য। নতুন স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু আর নয়। এখন আবার নিউইয়র্ক সিটিতে ফিরে যাব। তিনি বলেন, বাড়ি বিক্রির জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছি। বিক্রি হলেই চলে যাব। সে পর্যন্ত অপেক্ষা।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আবহাওয়া অনুকূলে আসবে। তার আগে জরুরি প্রয়োজন না হলে ভ্রমণ না করতে বলা হয়েছে। গত এক সপ্তাহে জনজীবনের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলা এ আবহাওয়ায় আনুমানিক আড়াই লাখ বাড়ি ও প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়। পরে বিদ্যুৎ ফিরে এসেছে।
বাফেলোতে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে কয়েকজনকে গাড়ির ভেতর এবং তুষারে ঢাকা রাস্তা থেকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। বাফেলো ছাড়াও ভারমন্ট, ওহাইও, মিজৌরি, উইসকনসিন, কানসাস এবং কলোরাডোতে ঠাণ্ডা ও ঝড়ে মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে।
Discussion about this post