কামরুল হাসান, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রতিভা বিকাশের জন্য শিশুদের পরিচালনায় বিশ্বের প্রথম বাংলা সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইট হ্যালো বিডি নিউজ টোয়েন্টিফোর এর উদ্যোগে টাঙ্গাইলে শিশু সাংবাদিকতার উপর দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।সম্প্রতি টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে ইউনিসেফ ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর সহযোগিতায় এ প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।কর্মশালায় টাঙ্গাইল সদর ও কালিহাতী উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১২ বছর থেকে ১৮ বছর বয়সের ১০ জন শিশু অংশ নেয়।
টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইএনও) রানুয়ারা খাতুন। বিশেষ অতিথি ছিলেন টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও আরটিভির স্টাফ রিপোর্টার কাজী জাকেরুল মওলা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক একুশে টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি কাজী তাজউদ্দিন রিপন।
দিনব্যাপী এ কর্মশালায় হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর আফরিন মিম প্রশিক্ষণ দেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিডিনিউজের জেলা প্রতিনিধি মো. তোফাজ্জল হোসেন।
দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেওয়া শিশু-কিশোরদের মৌলিক সাংবাদিকতার ধারণা, সংবাদ ও ফিচার লিখন, শিশু সাংবাদিক হিসেবে কাজ করার সমস্যা ও সমাধান, মোবাইল ফোনে সংবাদ ও ভিডিও প্রতিবেদন তৈরিসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইএনও) রানুয়ারা খাতুন বলেন, প্রথমেই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরকে ধন্যবাদ জানাই শিশুদের নিয়ে অনেক সুন্দর একটি আয়োজন করার জন্য। আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যত। রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই তারা অবদান রাখবে। সেই ভাবে শিশুদেরও গড়ে তুলতে হবে।
তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে করে বলেন, অনেক অভিভাবক বলে থাকেন, আমার সন্তান বেশি বেশি পড়াশোনা করে ফলাফলও অনেক ভাল করবে। সন্তানরা যে এক্সট্রা কারিকুলাম এক্টিভিটি থাকলে অনেক জ্ঞান বাড়ে তা অনেকেই জানেন না। এতে করে প্রতিটি শিশু আত্মনির্ভলশীল ও কনফিডেন্স বেড়ে যায়।
প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে রানুয়ারা খাতুন বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি তোমরা যারা এই প্রশিক্ষণ অংশ নিয়েছো তারা অন্য সহপাঠীর সাথে পথ চলতে গিয়ে তার প্রমাণ পাবে। অন্য সহপাঠীরা ভাল ফলাফল করলেও বাস্তবতায় তোমাদের সমপর্যায়ে আসতে পারবে না। অনেকেই ভাল ফলাফল করলেও আত্মনির্ভলশীল হতে পারে না। আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি যারা পড়াশোনার পাশাপাশি এসব কার্যক্রমে অংশ নেয় তারা চাকরি ক্ষেত্রেও অনেক ভাল করে।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা। আমরা বাস্তব জীবনে যারা এডমিন ক্যাডার, পুলিশ ক্যাডার ও অন্যান্য কাজে নিয়োজিত থেকে সমাজ ও দেশের স্বার্থে ভাল কাজ করলেও ওই সব পেশাকে কিন্তু মহান পেশা বলা হয় না। সাংবাদিক ও ডাক্তারদের ক্ষেত্রে কিন্তু এই মহান পেশা বলা হয়ে থাকে। ডাক্তাররা যেমন মানুষের জীবন বাঁচায় সাংবাদিকরা কিন্তু সমাজ ও রাষ্ট্র বাঁচায়। সমাজের অসঙ্গতি, অনিয়ম, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড তুলে ধরা হয়ে থাকে। এতে করে অনেকেই কিন্তু সচেতন হয়। প্রতিটি মানুষের মধ্যে ভালো ও খারাপ দুটি দিক আছে। সাংবাদিকরা যদি একটি মানুষের খারাপ দিক তুলে না ধরতো তাহলে সে সমাজ ও পরিবারের কাছে হেয়প্রতিপন্ন হতো না। এতে সে আরো বেশি খারাপ কাজ করতো। সাংবাদিকরা এভাবে সমাজ ও দেশের স্বার্থে কাজ করে থাকে।
বক্তারা শিশুদেরকে লেখাপড়ার পাশাপাশি আদর্শ মানুষ হিসেবে নিজেদেরকে গড়ে তোলার পরামর্শ দেন। তিনি প্রতিযোগিতায় বাছাইকৃত শিশু সাংবাদিকদের শুভ কামনা করেন।
Discussion about this post