ঢাকা: বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভা আরও বড় হচ্ছে। বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ৪৮ থেকে বেড়ে ৫৮ হতে পারে। ফলে আরও ১০ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী পাচ্ছেন দেশবাসী।
এতে থাকছে অনেক নতুন মুখ, যারা আগে কখনই মন্ত্রিসভায় ছিলেন না। আওয়ামী লীগের একাধিক নীতিনির্ধারক এবং দলের উচ্চপর্যায়ের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসব তথ্য দেন। এ বিষয়ে তারা বলেন, দীর্ঘ দিন ধরেই মন্ত্রিসভায় বড় পরিবর্তনের আভাস চলছে। যে কোনো মুহূর্তেই ঘোষণাটি আসতে পারে। তবে সম্প্রতি এক মন্ত্রী ও দুই প্রতিমন্ত্রীর দপ্তর পরিবর্তনের সঙ্গে সেই বড় পরিবর্তনের কোনো সম্পর্ক নেই। মন্ত্রিসভার আকার ৪৮ থেকে বেড়ে ৫৮ সদস্যের হতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে তারা বলেন, নতুন বছরের শুরু থেকেই মন্ত্রিসভায় রদবদলের চিন্তা ছিল সরকার প্রধানের। দলের জাতীয় কাউন্সিল পরবর্তী পূর্ণাঙ্গ কমিটি, ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন, মুজিববর্ষের ক্ষণগণনাসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু কর্মসূচির জন্য এত দিন তা হয়ে ওঠেনি। ১৭ মার্চের আগেই কলেবর বৃদ্ধি ও নতুন মুখসহ একটি বড় মন্ত্রিসভা আসতে পারে।
এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান সরকার তাদের উন্নয়নের ধারায় আরও গতি আনতে মন্ত্রিসভা আরও বড় করতে যাচ্ছে। পাশাপাশি কারো কারো দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার কারণে দপ্তর বদল করা হতে পারে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুজন মন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রীর দপ্তর পরিবর্তন হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী— গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।
গেল বছরের ডিসেম্বরে ক্ষমতাসীন নীতিনির্ধারকদের অনেকেই বলেছিলেন, নতুন বছরের শুরুতেই মন্ত্রিসভার রদবদল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরই মধ্যে মন্ত্রিসভায় থাকা নয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী দলের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন। দলের প্রতি নিবেদিত এবং স্বচ্ছ ভাবমূর্তিসম্পন্ন যেসব নেতা কোনো পদ পাননি, তাদের মন্ত্রিসভায় বিবেচনা করা হবে। আগে মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী ছিলেন, এমন নেতাকেও মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। দপ্তর পরিবর্তন হতে পারে বর্তমান মন্ত্রিসভার কোনো কোনো সদস্যের।
এছাড়া কয়েকজন প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রীর পদোন্নতি হতে পারে, যাদের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও দলীয় কোনো পদে রাখা হয়নি। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৭ ফেব্রুয়ারি নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেন। নতুন মন্ত্রিসভায় ১৯ মে প্রথমবার স্বল্পপরিসরে পুনর্বিন্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আর সেখানে কাউকে সংযুক্ত কিংবা বাদ দেওয়া হয়নি। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসানকে তথ্য প্রতিমন্ত্রী পদে স্থানান্তর করা হয়। এছাড়া ডাক ও টেলিযোগাযোগ, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মধ্যকার বিভাগ পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।
এরপর দ্বিতীয়বার ১৩ জুলাই মন্ত্রিসভা পুনর্বিন্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে পদোন্নতি দিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিকমন্ত্রী হিসেবে ইমরান আহমেদ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরাকে নতুন অন্তর্ভুক্তি করেন তিনি। এ নিয়ে বর্তমান মন্ত্রিসভায় সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৮। এ মুহূর্তে আটটি মন্ত্রণালয়ে পূর্ণমন্ত্রী নেই
Discussion about this post