চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য ২৭০ সাংবাদিকের বিবৃতি : প্রেস ক্লাবে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের নিন্দা, দোষীদের শাস্তি দাবি

গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও সন্ত্রাসী তৎপরতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন ক্লাবের ২৭০ জন সদস্য। প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত এসব সাংবাদিকরা বলেছেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তারা এত কিছুর পরও চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন। দুর্বৃত্তরা বিষয়টিকে দুর্বলতা মনে করে বার বার একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে চর দখলের মতো দখল করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। ক্লাব সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা মিথ্যাচার ও জঘন্য সব অপপ্রচার চালাচ্ছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় প্রেস ক্লাবের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিবৃতিতে প্রেস ক্লাব সদস্যরা বলেন, ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব দলমত নির্বিশেষে চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। সদস্যদের কল্যাণের পাশাপশি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব এ অঞ্চলের মানুষের মত প্রকাশ করার একটি বড় প্লাটফর্ম।
কিন্তু গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর সুযোগসন্ধানী দুর্বৃত্তরা অন্তত ৪ দফা– ৫, ৬, ১২ ও ১৪ আগস্ট হামলা চালিয়ে প্রেস ক্লাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। দেশীয় অস্ত্র, হাতুড়ি–শাবল নিয়ে ফটকের তালা ভেঙে তারা বার বার ক্লাবে প্রবেশ করে তা-ব চালায়। এ অপকার্যক্রম সাংবাদিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ধ্বংসের নামান্তর বলেই সদস্যরা মনে করেন।
এসব ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় জিডি দায়েরের পাশপাশি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ১৫ আগস্ট কোতোয়ালী থানায় এজাহার দেয়া হয়। এ ছাড়া সন্ত্রাসী হামলার প্রতিকার চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি দেয়া হয়। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ কমিশনারের সাথে সাক্ষাৎ করে লিখিত আবেদন করে প্রতিকার চাওয়া হয়। কিন্তু সিভিল প্রশাসন বা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে অদ্যাবধি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় তারা আরও উন্মত্ততা দেখানোর অপচেষ্টা করছে। এতে করে ক্লাবের সদস্য তথা সাংবাদিকরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য যেখানে ছাত্ররা প্রাণ দিয়েছে, সরকার পতন হয়েছে– সেখানে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের মতো দেশের একটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে। ফলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্যসহ সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা চরম উদ্বিগ্ন। এ অবস্থায় দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও ক্লাবের কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানান সদস্যরা।
বিবৃতিদাতারা হলেন– দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, দৈনিক পূর্বকোণ সম্পাদক ডা. ম. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, দৈনিক আমাদের সময় সম্পাদক আবুল মোমেন, দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ সম্পাদক রুশো মাহমুদ, দৈনিক চট্টগ্রাম মঞ্চ সম্পাদক সৈয়দ উমর ফারুক, দৈনিক নয়াবাংলা সম্পাদক জিয়াউদ্দিন এম এনায়েত উল্লাহ, দৈনিক আজাদীর পরিচালনা সম্পাদক ওয়াহিদ মালেক, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি ও দৈনিক ইত্তেফাক ব্যুরো প্রধান সালাহ্উদ্দিন মো. রেজা, সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক পূর্বদেশ সহকারী সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, ডেইলী অবজারভার বিজনেস এডিটর নিজাম উদ্দিন আহমেদ, প্রবীণ সাংবাদিক সাবের আহমদ আসগারী, এম নাসিরুল হক, নাসিরুদ্দিন চৌধুরী, ইসকান্দর আলী চৌধুরী, অঞ্জন কুমার সেন, জসীম চৌধুরী সবুজ, নুরুল আলম, দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী ও বার্তা সম্পাদক ওমর কায়সার, দৈনিক জনকণ্ঠের যুগ্ম সম্পাদক মোয়াজ্জেমুল হক, ডেইলী অবজারভারের ব্যুরো প্রধান মোস্তাক আহমেদ, দৈনিক দেশরূপান্তর চট্টগ্রাম অফিস উপদেষ্টা ফারুক ইকবাল, দৈনিক ইনকিলাবের ব্যুরো প্রধান শফিউল আলম খান, দৈনিক গিরিদর্পণের ব্যুরা প্রধান এম কে মোমিন, দৈনিক পূর্বকোণ সিটি এডিটর নওশের আলী, দৈনিক আজাদীর সহযোগী সম্পাদক রাশেদ রউফ, দৈনিক বাংলার ব্যুরো প্রধান ডেইজী মউদুদ, একুশে টিভি ব্যুরো প্রধান রফিকুল বাহার, ভোরের কাগজের ব্যুরো প্রধান সমরেশ বৈদ্য, দৈনিক আজাদীর চিফ রিপোর্টার হাসান আকবর, সাংবাদিক মহসীন কাজী, ফিন্যান্সিয়াল এঙপ্রেস ব্যুরো প্রধান নাজিমুদ্দীন শ্যামল, দৈনিক কালের কণ্ঠ ব্যুরো প্রধান মুস্তফা নঈম, দৈনিক পূর্বকোণ বার্তা সম্পাদক এ এইচ এম মনজুর মোর্শেদ, দৈনিক পূর্বকোণের চিফ রিপোর্টার সাইফুল আলম, বৈশাখী টিভির ব্যুরো প্রধান মহসিন চৌধুরী চট্টগ্রাম টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েসন সভাপতি ও বাংলাভিশন ব্যুরো প্রধান নাসির উদ্দিন তোতা, চ্যানেল–২৪ এর রিজিওনাল এডিটর কামাল পারভেজ, দৈনিক যুগান্তরের ব্যুরো প্রধান শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার, দৈনিক সমকালের রিজিওনাল এডিটর এস এম সরোয়ার জাহান, যায়যায়দিন পত্রিকার খোরশেদুল আলম শামীম, ডেইলি স্টার ব্যুরো প্রধান শিমুল নজরুল, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি ব্যুরো প্রধান আলমগীর সবুজ, বণিক বার্তা ব্যুরো প্রধান রাশেদ এইচ চৌধুরী, ডেইলি সান ব্যুরো প্রধান মো. নুর উদ্দিন আলমগীর, প্রতিদিনের বাংলাদেশ ব্যুরো প্রধান এস এম রানা, এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার আবুল হাসনাত, আমাদের সময় ব্যুরো প্রধান হামিদ উল্লাহ, যমুনা টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান জামশেদ রেহমান চৌধুরী, বিডিনিউজ–২৪ ব্যুরো প্রধান মিন্টু চৌধুরী, আজকের পত্রিকা ব্যুরো প্রধান সবুর শুভ, প্রতিদিনের বাংলাদেশের ব্যুরো প্রধান এস এম রানা, খবরের কাগজের ব্যুরো প্রধান ইফতেখারুল ইসলাম, কালবেলার ব্যুরো প্রধান সাইদুল ইসলাম, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড ব্যুরো প্রধান শামসুদ্দিন ইলিয়াস, দৈনিক পূর্বদেশের বার্তা সম্পাদক আবু মোশাররফ রাসেল, মাছরাঙা টিভি ব্যুরো প্রধান নাজমুল আলিম সাদেকী, বাংলাদেশ প্রতিদিনের ভারপ্রাপ্ত ব্যুরো প্রধান মো. সেলিম, এনটিভির সিনিয়র রিপের্টার আরিচ আরিচ আহমেদ শাহ্সহ আরও ২০৯ জন সাংবাদিক। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।