পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও পাসপোর্টের ভেরিফিকেশনের জন্য কোনো ধরনের অর্থের লেনদেন না করার জন্য ফরিদপুর জেলার নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলীমুজ্জামান।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পাসপোর্ট ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশনের সফটওয়্যারভিত্তিক কার্যক্রম-সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় এ অনুরোধ জানান তিনি।
এসপি আলীমুজ্জামান বলেন, সম্প্রতি ঢাকা রেঞ্জ কর্তৃক বিভিন্ন জেলায় পাসপোর্ট ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশনের সফটওয়্যারভিত্তিক (পিপিসি) কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে এখন থেকে সেবাপ্রার্থী আবেদনকারী স্বয়ংক্রিয়ভাবে এসএমএসের মাধ্যমে তদন্তকারী অফিসারের নাম ও মোবাইল নম্বর এবং ঢাকা রেঞ্জের একটি সাপোর্ট মোবাইল নম্বর পেয়ে যাবেন।
তিনি বলেন, এতে আবেদনকারী তার ভেরিফিকেশনের সর্বশেষ অবস্থা জানতে পারবেন। জরুরি ক্ষেত্রে তিনদিন ও সাধারণ ক্ষেত্রে পাঁচদিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও পাসপোর্টের ভেরিফিকেশন দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, আবেদনকারীদের তদন্ত প্রতিবেদন তার পক্ষে গেছে নাকি বিপক্ষে গেছে তা এসএমএমের মাধ্যমে জানানো হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রতিবেদন না দিলে ঢাকা রেঞ্জের মনিটরিং শাখা ও জেলা পুলিশ সুপারকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তথ্য দিয়ে দেবে এই সফটওয়্যার। এছাড়া তদন্ত সংশ্লিষ্ট কোনো অভিযোগ বা পরামর্শ জানাতে আবেদনকারীর মোবাইলে পাঠানো ঢাকা রেঞ্জের সাপোর্ট নম্বরে ফোন করে জানাতে পারবেন।
আলীমুজ্জামান আরও বলেন, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও পাসপোর্ট তদন্তের ক্ষেত্রে ভুয়া তদন্তকারী অফিসার সেজে অনেক প্রতারক আবেদনকারীদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে। এখন থেকে এসব হয়রানি থেকে সাধারণ মানুষ মুক্তি পাবে এই কার্যক্রমের মাধ্যমে। এসব হয়রানির দিন শেষ। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলছি- তিন থেকে পাঁচদিনের মধ্যেই কোনো ধরনের টাকা ছাড়াই মিলবে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও ভেরিফিকেশন।
এসপি আলীমুজ্জামান বলেন, সীমাবদ্ধতার মধ্যেও পুলিশকে জনবান্ধব করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। এজন্য জনগণকেও সচেতন হতে হবে। যাতে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও ভেরিফিকেশনে অর্থের লেনদেন না করেন তারা। পুলিশের কোনো সদস্য যদি লেনদেন করতে চান সেক্ষেত্রে পুলিশ সুপারের (০১৭১৩ ৩৭৩৫৫০) মোবাইল নম্বরে অভিযোগ করেন। শতভাগ নিশ্চয়তার সঙ্গে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, প্রতিটি থানায়, পাসপোর্ট ও বিআরটিএ অফিসে হয়রানি বন্ধে ব্যানার টাঙানো হয়েছে। সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতেও কোনো টাকা নেয়া হয় না জেলার কোনো থানায়। সব থানায় বিষয়টি বলে দেয়া আছে।
পুলিশ সুপার বলেন, জেলায় প্রতি মাসে দুই হাজার পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন ও এক হাজার ৩০০ পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য সাধারণ মানুষ আসে। এই প্রযুক্তি চালু হওয়ায় খুব সহজেই সেবা পাবে জনগণ। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ফরিদপুর জেলা পুলিশ।
মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা, মো. সাইফুজ্জামান, রাশেদুল ইসলাম ও ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. ইমতিয়াজ হাসান রুবেল প্রমুখ।
Discussion about this post