বিভিন্ন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বাংলাদেশে আঘাত হেনেছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। দেশে এর সংক্রমণের সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পরই মানুষের মাঝে এ নিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি)।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা বিশেষজ্ঞরা চিকিৎসকদের সঙ্গে একটি সায়েন্টিফিক সেমিনারের মাধ্যেমে করণীয় কী তা আলোচনা করেছি। আমাদের মতে করোনাভাইরাস বিষয়ে আতঙ্কিত না হয়ে আমাদের সবার সচেতন হওয়া উচিত। নিজে এবং আশপাশের সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে। নিজেকে নিরাপদে থাকতে হবে। এছাড়া আমরা ইতিমধ্যে আমাদের ডিজিটাল বিলবোর্ডের মাধ্যেমে সচেতনতার বার্তা প্রচার করছি একযোগে।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইমদালুল হক বলেন, ‘আমাদের সবার এ বিষয়ে সচেতন হয়ে নিজেদের নিরাপদ থাকতে হবে। এ বিষয়ে আর কী কী করণীয় আমরা সে বিষয়ে কাজ শুরু করব। তবে সবার আগে নিজের সচেতনতা জরুরি।’
সোমবার (৯ মার্চ) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নুরজাহান রোড এলাকায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নিয়ে ডিএনসিসির নবনির্বাচিত মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে আমাদের প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা, সবার আগে চাই, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় আমরা নিজ আঙিনা পরিষ্কার রাখি, সবাই মিলে সুস্থ থাকি।’
প্রসঙ্গত, রোববার (৮ মার্চ) বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে একজন নারী ও দুজন পুরুষ। এদের মধ্যে দুজন ইতালিফেরত। এদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। এ তিনজন ছাড়াও আরও দুজনকে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পক্ষ থেকে এ সব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
আক্রান্তের তথ্য ছড়িয়ে পড়ার পরই নিজেকেসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের নিরাপদ রাখতে মাস্ক কেনার জন্য এক ধরনের ভিড় সৃষ্টি হয়েছে। ফার্মেসি, স্টেশনারি দোকান এমনকি ফুটপাতের দোকানেও মাস্ক কিনতে এক মাতামাতি সৃষ্টি হয়েছে। হঠাৎ মাস্কের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় অতিরিক্ত দামে এসব মাস্ক বিক্রি করছে অসাধু দোকানিরা। অনেকটা আতঙ্কের কারনে বাধ্য হয়ে বেশি দামেই এসব মাস্ক কিনে নিচ্ছেন সাধারন মানুষরা।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ১০ হাজার ৫৬ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩ হাজার ৮২৮ জন। অপরদিকে, করোনায় আক্রান্ত ৬২ হাজার ২৭৬ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।
চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ইতালিতে। দেশটিতে একদিনেই ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬৬ জনে। এ দিকে দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩৭৫ জনে। এমন পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছে ইতালি সরকার।
Discussion about this post