বিশ্বের অন্যতম প্রধান প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা মাইক্রোসফটের পরিচালনা পর্ষদ থেকে সরে দাঁড়ালেন প্রতিষ্ঠানটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। জনসেবায় আরও বেশি মনোনিবেশ করতেই এ পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। শুধু মাইক্রোসফটই নয়, ওয়ারেন বাফেটের মালিকানাধীন হোল্ডিং কোম্পানি বার্কশায়ার হাথাওয়ের পর্ষদ থেকেও পদত্যাগ করেছেন বিল গেটস।
এর আগে, ২০০০ সালে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে দাতব্য সংস্থা বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন গড়ে তোলেন বিল গেটস। ওই বছরই মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। এতদিন শুধু পরিচালনা পর্ষদে যুক্ত থাকলেও এবার সেখান থেকেও সরে দাঁড়ালেন বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ধনী।
মাইক্রোসফট ও বার্কশায়ার হাথাওয়ে থেকে পদত্যাগ প্রসঙ্গে শুক্রবার নিজের লিংকইন অ্যাকাউন্টে তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠানগুলো সবসময় আমার জীবনে কাজের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে থাকবে। আমার কাছে বন্ধুত্ব ও অংশীদারিত্ব বজায় রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এখন এটিকে আরেকটি ধাপে নিয়ে যেতে চাই। আমি দু’টি কোম্পানিতেই অবদান অব্যাহত রাখবো। তবে বিশ্বের কঠিনতম কিছু চ্যালেঞ্জের ক্ষেত্রে আমার প্রতিশ্রুতি কার্যকরকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছি।
ফোর্বসের হিসাবে, বর্তমানে অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের পরেই সবচেয়ে বেশি সম্পদের মালিক বিল গেটস। তার মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১০৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তরুণ বয়সে কম্পিউটারের সফটওয়্যার তৈরির মাধ্যমে নিজের ভাগ্যগড়ার কাজ শুরু করেছিলেন বিল গেটস। কলেজ ড্রপআউট হয়েও বাল্যবন্ধু পল অ্যালেনের সঙ্গে যৌথভাবে মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। ১৯৮০ সালে বিশ্বের অন্যতম টেকজায়ান্ট আইবিএমের সঙ্গে কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম তৈরির চুক্তির পরপরই ভাগ্য খুলে যায় তার। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। মাত্র ৩১ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ বিলিয়নিয়ার বনে যান বিল গেটস ২০০৪ সালে বার্কশায়ারের পর্ষদে যুক্ত হন এ ধনকুবের। তবে, বরাবরই বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের কাজকেই গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালে এ দম্পতি জনহিতৈষী কাজে প্রায় ৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার দান করেছেন।
বিল গেটস নেদারল্যান্ডের নায়েনরোড বিজনেস ইউনিভার্সিটি, সুইডেনের রয়েল ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি, ক্যারোলিন্সকা ইন্সটিটিউট, জাপানের ওয়াসেদা ইউনিভার্সিটি, চীনের সিংহুয়া ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি ও কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেছেন।
২০০৫ সালে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন তৎকালীন বিশ্বের সর্বোচ্চ ধনী এ ব্যক্তি।