করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া দিনমজুর ও মধ্যবিত্তদের তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, কেউ যেন কষ্ট না পায়। এজন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য, মেয়র, চেয়ারম্যান, মেম্বার ও প্রশাসনকে সর্তকতার সাথে তালিকা করতে হবে।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় একসঙ্গে সবাইকে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী প্রলয় সৃষ্টি করেছে। এটা দেখে ভয় পেলে চলবে না। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। এটা শুধু আমাদের দেশে নয় সারাবিশ্বেই ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সর মাধ্যমে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময়কালে একথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। এর বাইরে যারা খেটে খেত, এই করোনার কারণে তাদের কাজ নেই। আবার অনেকে আছেন মধ্যবিত্ত। তারা অনেকে হাত পাতবে না, সাহায্য চাইতে আসবে না, মুখ বুজে কষ্ট সহ্য করবে। এই শ্রেণির লোকের সঠিক তালিকা করতে হবে। কেউ যেন বাদ না যায়।
এজন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি খাদ্য মন্ত্রণালয়, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়কেও কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে হলে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আমরা যে সতর্কবাণী দিয়েছি এই সতর্কতা মেনে চলবেন। তাহলে অনেক জীবন রক্ষা পাবে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে যাওয়ার সংখ্যা বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা একদিক থেকে ভালো খবর। তবে প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাক, এটা চাই না। আমরা চাই দ্রুত এটি নিয়ন্ত্রণ হোক। এর জন্য সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, এখন বিশ্বব্যাপী এই ঘটনা ঘটেছে, উন্নত দেশও করোনাভাইরাস মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে। বাঙালিরাও অনেক জায়গায় মৃত্যুবরণ করছে। যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, আমি তাদের সবার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১২৩ জন, মৃতের সংখ্যা ১২। তবে যারা মারা গেছেন তারা বেশিরভাগই বয়স্ক, শারীরিকভাবে দুর্বল ছিলেন। তাদের অন্যান্য জটিলতা ছিল।
তবে আরেকটি বিষয় দুর্ভাগ্যজনক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী রোগাক্রান্ত, হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে সে চিকিৎসা পায়নি। এটি খুবই কষ্টকর। দুঃখজনক। এটা খুব দুঃখজনক মানুষ এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটে বেড়াচ্ছে, চিকিৎসা পায়নি। চিকিৎসকরা কেন চিকিৎসা দেবে না, এটা খুব দুঃখজনক।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় অর্থনৈতিক গতিশীলতা ধরে রাখার চেষ্টা করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
Discussion about this post