নগরবাসীকে মশার উৎপাত থেকে রক্ষা করার জন্য মশক নিধনের বিশেষ ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।
তারই অংশ হিসেবে আজ বৃহষ্পতিবার সকালে নগরীর বহদ্দারহাট পুলিশ বক্স হতে শুরু করে চাক্তাই খালের পাড় ঘেষে চক বাজার ফুলতল পর্যন্ত মশার ঔষধ ছিটানোর কার্যক্রম উদ্ভোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন। এসময় মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, চসিক প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ সফিকুল মান্নান সিদ্দিকী, তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক, অতিরিক্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদ আলম চৌধুরী, রাজনীতিক মামুনুর রশিদ, লিটন রায় প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
মশক নিধন কার্যক্রম উদ্ভোধনকালে সিটি মেয়র বলেন, বর্তমান সময়টা মশা প্রজননের উর্বর সময়। এসময় সিটি কর্পোরেশনের পাশাপাশি নগরবাসীকেও সচেতন হতে হবে। তিনি বলেন, নগরীর ৪১ টি ওয়ার্ডে ৪ জন করে ১৬৪ জন কর্মী হ্যান্ড স্প্রে মেশিনের মাধ্যমে মশা ও এডিস মশার প্রজনন স্থানে লারভিসাইড ঔষধ ছিটানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে চসিক নতুন হ্যান্ড স্প্রে মেশিন ক্রয় করা হয়েছে। তিনি বলেন,চসিকের হাতে মশা
এবং মশার লার্ভা ধ্বংসকারী ওষুধ মজুদ রয়েছে। প্রয়োজনে আরও ঔষুধ সংগ্রহ করা হবে। মেয়র মশা এবং চিকনগুনিয়া ও ডেঙ্গু রোধে প্রত্যেকর আশপাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কারকরণ ও নালা-নর্দমায় যেখানে মশা জন্ম হয় সেখানে ওষুধ ছিটানো হবে বলে জানান। এই প্রসঙ্গে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশনার কথা উল্লেখ সিটি মেয়র বলেন, মশা নিধন কার্যক্রম শতভাগ নিশ্চিতকরণের ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রতি ওয়ার্ডে জীবাণুনাশক পানি ছিটানোর পাশাপাশি মশা নিধনে ল্যারভিসাইড ওষুধ ছিটানো হ্েচছ। মেয়র বলেন, মশার উপদ্রব যতদিন কমবে না ততদিন
পর্যন্ত এই ঔষুধ ছিটানো হবে। তিনি বলেন, নগরীতে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজও চলমান রয়েছে। নগরীর প্রধান প্রধান খালের মুখে বাঁধ দেওয়ায় পানি জমে আছে। সেইখানে মশার জম্মের উবরস্থান। তাই এ প্রকল্পের দায়িত্ববান ব্যক্তির সঙ্গে আগেও কথা বলেছি। মেয়র আরো বলেন আগামী কয়েক মাস পর এডিস মশার বংশবৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত সময় হবে। ভারী বর্ষন কিংবা থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার কারণে বাড়ীর আশপাশ, ফুলের টব, আবর্জনা ফেলার পাত্র,
প্লাষ্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাষ্টিকের ড্রাম,মাটির পাত্র, বালতি, টিনের কৌটা, ডাবের খোসা, নারিকেলের মালা, ব্যাটারী শেল, পলিথিন,চিপসের প্যাকেট এবং নালা-নর্দমায় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে এডিস মশার প্রজননের স্থান। এজন্যজনসচেতনতাকে সমাধিক গুরুত্ব দিলেন সিটি মেয়র। মেয়র বলেন, চাক্তাই খালের পানি চলাচলের স্বাভাবিক অবস্থা সৃষ্টি করা না গেলে সামনের বর্ষার মৌসুমে জলাবদ্ধতা চরম আকার ধারন করবে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে স্ল্যুইচ গেইট নির্মাণের জন্য যে বাঁধগুলো দেয়া হয়েছে তাতে পাইপ লাইন স্থাপন
করে হলেও পানির নিস্কাশনের ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন মেয়র। তিনি এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা নিজেরা সচেতন হয়ে খাল ও নালার মধ্যে ময়লা ফেলা থেকে বিরত না থাকলে কোন অবস্থাতেই জলাবদ্ধতা সহ মশার উপদ্রপ থেকে পরিত্রান পাওয়া সম্ভব নয়। তিনি বিশ্ব করোনা ভাইরাসের দূর্যোগে নিজেদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি সচেতনভাবে পালন করার জন্য আহবান জানান। তিনি আরো বলেন, লক ডাউনের কারনে জনজীবনে দারুন কষ্ট হচ্ছে। একথা সত্য। তবুও নিজেদেরকে রক্ষার জন্য
এই সাময়িক কষ্ট সহ্য করতে হবে। তিনি নগরীর খেটে খাওয়া নি¤œ আয়ের মানুষের কাছে সিটি কর্পোরেশন ও মেয়র ব্যক্তিগতভাবে প্রদত্ত ভোগ্যপন্য নগরীর বিভিন্ন এলাকায় তালিকা তৈরী করে এবং তাঁর নিজ ফেইসবুক আইডিতে আগত বিভিন্ন ম্যাসেজ সংগ্রহ করে তা ঘরে ঘরে প্রতিদিন পৌছানো হচ্ছে। তিনি বলেন মশক নিধনের এই কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে নগরীর ৪১ টি ওয়ার্ডে চলবে। তিনি বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায়
এই কার্যক্রম সফল করার লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচী হাতে নিয়েছে চসিক। এরই ধারাবাহিতকায় নগরীর একটি ঘরও মশক নিধন কার্যক্রম হতে বাত পড়বে না। আগামীকাল সকাল সাড়ে ১১ টায় মহেশখাল ও ছোট পোল এলাকায় ক্রাশ প্রোগ্রাম পরিচালিত হবে। এই বিশেষ ক্রাশ প্রোগ্রাম টীমে ৪০ জন হ্যান্ড স্প্রে মেশিন কর্মী কাজ করছে বলে জানান।
Discussion about this post