দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় শ্বাস কষ্টে মারা যাওয়া ব্যবসায়ী করোনা আক্রান্ত ছিলেন। সাতকানিয়ার প্রথম করোনা আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির (৬৯) বাড়ি উপজেলার পশ্চিম ঢেমশা ইছামতি আলীনগর এলাকায়।
গত বুধবার রাতে ওই ব্যক্তির শ্বাস কষ্ট বেড়ে গেলে স্বজনরা স্থানীয় আশশেফা হাসপাতালে নিয়ে যান। জরুরী বিভাগের ডাক্তার রোগীকে দেখে করোনা সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিক ওই ব্যক্তিকে অক্সিজেন দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে।
ওই দিন রাতে জেনারেল হাসপাতালে দায়িত্বরত ডাক্তার ওই রোগীকে পরদিন সকালে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করার কথা বলেন। রাতে হাসপাতালে রোগী সুস্থ মনে হলে স্বজনরা ভোরে তাকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে গ্রামের বাড়িতে তিনি মারা যান।
খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে পরে স্থানীয়দের চাপের মুখে ওই ব্যক্তির স্বজনরা তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার ওই ব্যক্তি হৃদ রোগে মারা যান বলে স্বজনদের জানান। (১১ এপ্রিল) শনিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন স্থানীয় এক বাসিন্দা।
ওই ব্যক্তি চট্টগ্রাম মহানগরের ফকিরহাট এলাকায় একটি মুদির দোকান করতেন। করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার সারাদেশে মানুষকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিলে গত ২৬ তারিখে দোকান বন্ধ করে গ্রামের বাড়িতে চলে যান তিনি। সপ্তাহ খানেক আগে থেকে শ্বাস কষ্টে ভোগছিলেন।
সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ আবদুল মজিদ ওসমানী সিটিজি টাইম্সকে জানান, চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন অফিস থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে সাতকানিয়ায় মারা যাওয়া ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহের রিপোর্টে কোভিড-১৯ পজিটিভ ছিল। এতে সাতকানিয়ার প্রথম বাসিন্দার করোনা পজিটিভ শনাক্ত হলো। ওই ব্যক্তি অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেননি।
স্থানীয় হাসপাতাল থেকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তিনি মারা যান। এছাড়া লোহাগাড়ার সিটি হাসপাতালে একজন ডাক্তার ওই ব্যক্তির ব্লাড প্রেসার মেপে ছিলেন। তাই রাতে ওই হাসপাতালটিও লকডাউন করা হয়েছে।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-এ-আলম সিটিজি টাইম্সকে জানান, মারা যাওয়া ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহের রিপোর্টে করোনা পজিটিভ হওয়ায় শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওই গ্রামে গিয়ে পশ্চিম ঢেমশার ৩নং ওয়ার্ডসহ মোট ৩৮৭ পরিবারকে লকডাউন (অবরুদ্ধ) করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই পরিবারের কেউ বাড়ি থেকে বের হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারমন্যান আবু তাহের জিন্নাহ সিটিজি টাইম্সকে বলেন, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে চট্টগ্রাম নগরের ফকিরহাট এলাকা থেকে মুদির দোকান বন্ধ করে ওই ব্যক্তি গ্রামে চলে আসেন।
গত (৯ এপ্রিল) বৃহস্পতিবার রাতে মারা যাওয়া ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহের রিপোর্টে করোনা পজিটিভ হওয়ায় শনিবার রাতে স্থানীয় প্রশাসন ৩নং ওয়ার্ডকে পুরো লকডাউন করেন।
তার দাফন কাফনে সংস্পর্সে যারা ছিলেন সবাই লকডাউনের আওতায় থাকবেন। সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সফিউল কবীর বলেন, মৃত ব্যক্তির করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসার খবর পেয়ে রাতে পশ্চিম ঢেমশার ৩নং ওয়ার্ডকে লকডাউন করা হয়েছে।