বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারী আকার ধারণ করেছে। একদিকে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে; অন্যদিকে মৃত্যুর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে।
ইতোমধ্যেই গত বৃহস্পতিবার দেশের স্বাস্থ্য অধিদফতর সমগ্র বাংলাদেশকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে। এমন ভয়াবহতার মধ্যে উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু বিড়ি ফ্যাক্টরিসহ বহু তামাক কারখানা এখনো চালু রাখা হয়েছে। ফলে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন তামাক কারখানার লক্ষাধিক শ্রমিককে করোনা সংক্রণের ঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে।
এদিকে, করোনা সংক্রমণের ভয়াবহতা বিবেচনায় উত্তরাঞ্চলের তামাক কারখানাগুলোসহ দেশের সকল তামাক কারখানা ও কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধের জোর দাবি জানিয়েছে উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংস্থা ‘এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি’। শুক্রবার দুপুরে সংস্থার তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প এক বিজ্ঞপ্তিতে তামাক কারাখানা ও বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম বন্ধের এ দাবি জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই ভাইরাসের ভয়াবহতা বিবেচনায় স্বাস্থ্য অধিদফতর ‘সংক্রমণ রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মুল) আইন-২০১৮ (২০১৮ সালের ৬১ নং আইন) এর ১১ (১) ধারার ক্ষমতাবলে’ সমগ্র বাংলাদেশকে সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে। অথচ উত্তরাঞ্চলের রংপুরের হারাগাছে ছোট-বড় প্রায় ৩০টি বিড়ি কারখানা চালু রয়েছে।
এসব ফ্যাক্টরিতে কাজ করছেন কমপক্ষে ৪০ হাজার শ্রমিক। সামাজিক দূরত্ব না মেনে কাজ করায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার চরম ঝুঁকিতে রয়েছেন এসব অসহায় শ্রমিক।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি পাবনার ঈশ্বরদীতে আকিজ বিড়ি কারখানার প্রায় ১ হাজার শ্রমিককে মাইকিং করে জোরপূর্বক কাজে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়েই কোনো ধরনের সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই ঈশ্বরদী শহরের গোকুল নগরে অবস্থিত আকিজ বিড়ির কারখানার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। একইভাবে লালমনিরহাটেও আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরীসহ কয়েকটি তামাক কারখানা এখনো চালু রয়েছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেখানেও হাজার হাজার শ্রমিক করোনা ঝুঁকির মধ্যে কাজ করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে এটিই বলা হয়- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে, অধূমপায়ীদের তুলনায় ধূমপায়ীদের করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ১৪ গুণ বেশি। এজন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধূমপায়ীদের ধূমপান ছেড়ে দেয়ার পরামর্শও দিয়েছে। অথচ বাংলাদেশে এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে তামাকের উৎপাদন, বিপণন ও বিতরণ ব্যবস্থা চালু রাখায় এসিডি চরমভাবে উদ্বিগ্ন। তাই অনতিবিলম্বে উত্তরাঞ্চলসহ দেশের সকল তামাক কারখানা ও তামাকের বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি
Discussion about this post