চট্টগ্রামে নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে প্রথম একজন সুস্থ হয়ে ফিরেছেন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমানসহ উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ‘করোনাজয়ী’ এই পুলিশ সদস্যকে ফুল দিয়ে বরণ করেছেন।
রোববার (৩ মে) দুপুরে সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের উত্তর জোনে কর্মরত কনস্টেবল অরুণ চাকমা (৪০) চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল থেকে সুস্থ হিসেবে ছাড়পত্র পান।
চট্টগ্রামে গত ১২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো একজন ট্রাফিক কনস্টেবল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন। নমুনা পরীক্ষায় অরুণ চাকমার করোনা পজিটিভ আসে ১৯ এপ্রিল। এরপর থেকে তিনি নগরীর আন্দরকিল্লায় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের উত্তর জোনের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ সারাবাংলাকে জানান, সিএমপিতে প্রথম শনাক্ত হওয়া কনস্টেবল এবং সুস্থ হওয়া অরুণ দামপাড়া পুলিশ লাইনে একই ট্রাফিক ব্যারাকের বাসিন্দা। গত ৭ এপ্রিল দুজনের শরীরে একইসঙ্গে খারাপ হতে শুরু করে।
৮ এপ্রিল তাদের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখা হয়। ৯ এপ্রিল তাদের জ্বর আসে। ১১ এপ্রিল দুজনকেই পুলিশ লাইন হাসপাতালে মেডিকেল বোর্ডের সামনে নেওয়া হয়। তখন দুজনের শরীরে জ্বর ছিল। তবে অরুণ মোটামুটি সুস্থ ছিলেন। অপরজন বমি করতে থাকায় তাকে পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর অরুণ চাকমাকে নগরীর মনসুরাবাদে পুলিশ লাইনে একটি ব্যারাকে কোয়ারেনটাইনে রাখা হয়।
চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজ- বিআইটিআইডিতে ১২ এপ্রিল একজনের নমুনায় করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়ার তাকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৯ এপ্রিল অরুণের শরীরে করোনা শনাক্তের পর তাকেও হাসপাতালে নেওয়া হয়। টানা ১৪ দিন চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছেন তিনি। তবে অপরজন এখনও চিকিৎসাধীন আছেন।
রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে সুস্থ হওয়া কনস্টেবল অরুণ চাকমাকে গ্রহণ করেন উপ-পুলিশ কমিশনার শহীদুল্লাহসহ ট্রাফিক বিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা। এরপর তাকে নগরীর দামপাড়ায় সিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কমিশনার তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন।
শহীদুল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘এ পর্যন্ত আমাদের ট্রাফিক বিভাগের আটজন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। একজন সুস্থ হয়েছেন। আরও সাতজন চিকিৎসাধীন আছেন। তবে তারা সবাই সুস্থ আছেন। তাদের মধ্যে এখন আর তেমন কোনো উপসর্গ নেই। শুধু একজনের আগে থেকে শ্বাসকষ্ট আছে। তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এ সপ্তাহের মধ্যেই প্রথম আক্রান্ত কনস্টেবলসহ অন্তঃত দুজন সুস্থ হয়ে ফিরবেন বলে আশা করছি।’
সিএমপির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সিএমপিতে এ পর্যন্ত ১১ জন পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ট্রাফিক সদস্য আটজন। একজন এসএএফ শাখায় আছেন। সিএমপির এক অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের অফিস সহকারী একজন আছেন। খুলশী থানায় কর্মরত একজন কনস্টেবল আছেন।
এছাড়া র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (র্যাব) চট্টগ্রাম জোনে কর্মরত পুলিশের একজন সহকারী উপ-পরিদর্শকও (এএসআই) করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।
Discussion about this post