করোনাভাইরাস’আক্রান্ত পুলিশ প্রায় ১০%,একদিনে শতাধিক শনাক্ত”

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে পুরো বাংলাদেশে ৮৫৪ জন পুলিশ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। এই সংখ্যা গতকাল (শনিবার) ছিল সাড়ে সাতশোর কাছাকাছি। অর্থাৎ একদিনের ব্যবধানে একশোর বেশি পুলিশ সদস্যের করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। কেবল ঢাকা শহরে যারা কর্মরত তাদের মধ্যে প্রায় সাড়ে চারশো পুলিশ সদস্যের কোভিড-১৯ ধরা পড়েছে।

এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে আছেন ১২৫০ জন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ৮৭৯০ মোট শনাক্ত ১৭৭ সুস্থ হয়েছেন ১৭৫ মৃত্যু আইসোলেশনে আছেন ৩১৫ জন। এর মধ্যে সেড়েও উঠেছেন ৫৭ জন। মারা গেছেন পাঁচজন।

 

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস রোগীর সংখ্যা ৮৭৯০ জন। অর্থাৎ মোট আক্রান্ত মানুষের ১০ শতাংশই পুলিশ সদস্য। শুধু বাংলাদেশ না বিশ্বব্যাপী লকডাউন বা এই ধরণের কড়াকড়ি আরোপ করতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছেন পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী নানা বাহিনী। বাংলাদেশ পুলিশের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র থেকে জানা যায় ২রা মে পর্যন্ত পুলিশের প্রায় সাড়ে সাতশো সদস্যের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর মধ্যে মারা গেছেন পাঁচ জন।

এছাড়া কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনে রয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের আরো প্রায় দেড় হাজার সদস্য। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে অনেকসময়ই পুলিশ নিজেদের সুরক্ষার চেয়ে জনগণের সুরক্ষার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়ার কারণে পুলিশের এত বেশি সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন বলে মনে করছেন উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা
কীভাবে এত পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হচ্ছেন? বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি মিডিয়া সোহেল রানা মন্তব্য করেন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে অনেকসময়ই পুলিশ নিজেদের সুরক্ষার চেয়ে জনগণের সুরক্ষার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়ার কারণে পুলিশের এত বেশি সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন।
সোহেল রানা বলেন, “পুলিশের ডিউটির ধরণটাই এরকম যে মানুষের সংস্পর্শে না এসে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হয় না।” সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার পর থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে নিজেদের তাদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে পুলিশ ঝুঁকির মুখে পড়তে বাধ্য হয়েছে বলে মন্তব্য করেন সোহেল রানা।
“পুলিশ যখন কোয়ারেন্টিন বা আইসোলেশন বাস্তবায়ন করতে বাড়ি বাড়ি গিয়েছে, অনেক জায়গায় মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জরুরি ত্রাণ ও খাবার পৌঁছে দিয়েছে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রশাসনের সাথে বাজার নিয়ন্ত্রণ অভিযানে গিয়েছে – তখন মানুষের সংস্পর্শে আসতে বাধ্য হয়েছে তারা।”
দেশের কোথাও কোথাও সন্দেহভাজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীকে পরিত্যাগ করা এবং করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে সোহেল রানা বলেন, “কিছু জায়গায় করোনাভাইরাস রোগীকে পরিত্যাগ করার ঘটনা ঘটেছে, আবার কোথাও দেখা গেছে যে রোগী নিজেই পালিয়েছে। আবার এমন ঘটনাও ঘটেছে যে মরদেহ সৎকারে কেউে এগিয়ে আসেনি। এরকম প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাহায্য করেছে পুলিশই।”

 

তিনি জানান, বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা থাকলেও পুলিশ সদস্যদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তারা। পুলিশ সদস্যদের শারীরিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি উন্নয়নের বিষয়টি নিয়েও তারা কাজ করছেন বলে জানান।- বিবিসি বাংলা