শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে বাগেরহাটে হতদরিদ্র কৃষকের ধান কেটে দিলেন যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান সহ প্রশাসনি ককর্মকর্তাবৃন্দ।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উদ্যোগে বোর্ডের আওতাধীন বিভিন্ন জেলার হতদরিদ্র কৃষকদের স্বেচ্ছাশ্রমে ধান কেটে কৃষকদের সহায়তার হাত বাড়িয়েছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
নড়াইল লোহাগড়া, চৌগাছা ঝিগরগাছা ও যশোর মনিরামপুরের পর রবিবার সকালে বাগেরহাটে স্বেচ্ছাশ্রমে কৃষকের ধান কেটে দিয়েছেন যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোল্লা আমির হোসেন। এসময়ে বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিশ্বাস শাহিন আহমেদ, বোর্ডের প্রকৌশলী কামাল হোসেন
, জেলা শিক্ষা অফিসার মো: কামরুজ্জামান, উপজেলা একাডেমি সুপার ভাইজার এসএম হিশামুল হক, বাগেরহাট বহুমুখী কলেজিয়েট স্কুলের অধ্য ফারহানা আক্তার, বিএসসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঝিমি মন্ডল ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি বর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এদিন সকালে বাগেরহাট সদর উপজেলার বারাকপুর গ্রামের কৃষক চিত্তরঞ্জন মন্ডলের ৫ বিঘা ও কার্তিক মন্ডলের এক বিঘা জমির ধান কাটার মাধ্যমে স্বেচ্ছাশ্রম এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেণ যশোর শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোল্লা আমির হোসেন।
পরে সদর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের অযোধ্যা গ্রামের কৃষক আকবর আলীর ধান কেটে দেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো মোড়ল, বাগেরহাট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তপন কুমার বিশ্বাস, রাংদিয়া স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ শেখ মো: রুহুল আমিন, অধ্যক্ষ শেখ শুকুর আলী, কোদলা মাধ্যমিক
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নকিব আ: কুদ্দুস সহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ। ছাত্র-শিক্ষক ও শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাশ্রমে ধান কাটা এ অঞ্চলের মানুষের পারস্পরিক সহযোগিতার অনুপ্রেরণার সৃষ্টি হয়েছে।
কৃষক চিত্তরঞ্জন মন্ডল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, করোনা পরিস্থিতি ও মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি হওয়ায় ধান কাটার শ্রমিক সংকটে সোনার ফসল ঘরে তোলা নিয়ে খুব তিনি শঙ্কায় ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও যশোর শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা এসে জমির ধান কেটে দেওয়ায় তিনি খুব খুশি হয়েছেন।
অধ্যক্ষ ফারহানা আক্তার ও প্রধান শিক্ষক ঝিমি মন্ডল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, শিা বোর্ডের চেয়ারম্যানের অনুপ্রেরণায় শিক্ষার্থী ও সহকর্মীদের সাথে নিয়ে তারা হত দরিদ্র কৃষকের পাশে দাড়িয়েছেন। কৃষকদের ধান যেন শ্রমিকের অভাবে মাঠে নষ্ট না হয় সে জন্য তারা স্বেচ্ছাশ্রমে তাদের ধান কেটে দিয়েছেন।
জেলা শিক্ষা অফিসার মো: কামরুজ্জামান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান সহ কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছায় প্রণোদিত শ্রমের মাধ্যমে অসহায় কৃষকদের ধান কাটার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
বোর্ডের প্রকৌশলী কামাল হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, যশোর শিক্ষা বোর্ডের উদ্যোগে ইতোমধ্যে নড়াইল লোহাগড়া, চৌগাছা ঝিগরগাছা ও যশোর মনিরামপুর ও বাগেরহাটে ধান কাটা হয়েছে। আগামীকাল অভয়নগরে বোর্ডের উদ্যোগে ধান কাটার কর্মসূচী রয়েছে। পারস্পরিক সহযোগিতা ও কৃষকের কাজকে সহজীকরণ ও স্বেচ্ছাশ্রমের উৎসাহ দানে যশোর শিক্ষা বোর্ডের এ উদ্যোগ।
বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিশ্বাস শাহিন আহমেদ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, ভাত আমাদের প্রধান খাদ্য। এ সময়ে একদিকে সর্বনাশা করোনায় হানা দিয়েছে। তাই ঝড়-বৃষ্টিতে যাতে কৃষকের ধান নষ্ট না হয় সেজন্য যশোর শিক্ষা বোর্ডের এ উদ্যোগ।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আমির হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ফসল ও ধান কৃষকের প্রাণ। আর কৃষক হলেন জাতির প্রাণ, রাষ্টের প্রাণ। প্রত্যেক কৃষকের ঘরে আমাদের শিক্ষার্থী রয়েছে। কৃষকরা যদি সময়মত ধান ঘরে তুলতে না পারেন, তাহলে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
তাহলে আমার শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে। তাই কৃষকদের বাঁচাতে এবং যাতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ না হয় , সেজন্য আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছি। সকল কৃষকের ধান কাটা ও মাড়াই হওয়া পর্যন্ত আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মাঠে থাকবেন।
Discussion about this post