বন্দরনগরী চট্টগ্রামের করোনা ঝুঁকিতে থাকা রেড জোনগুলোর মধ্যে প্রথম লকডাউন করা হয়েছে ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলি ওয়ার্ড। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার পর লকডাউন কার্যকর হয়।
অথচ সকাল থেকেই লকডাউনের সব বিধি ভেঙে রেডজোন এলাকায় প্রবেশ করছেন হাজার হাজার গার্মেন্টস কর্মী। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে মেয়র এসে এলাকার ১৪ টি প্রবেশপথের সবগুলো বন্ধসহ লকডাউন করেন উত্তর কাট্টলি ওয়ার্ড। প্রায় এক সপ্তাহ আগ থেকে এলাকায় এ নিয়ে মাইকিং-লিফলেট দেয়া হচ্ছে। কিন্তু প্রথম দিনই লগডাউন মানা হচ্ছে না।
সকালে সারা শহর থেকে হাজার হাজার গার্মেন্টসকর্মী লকডাউন করা রেডজোনে প্রবেশ করেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অবাধে হাজারও বহিরাগত এলাকায় প্রবেশ করলেও তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা সিটি করপোরেশনের কাউকে দেখা যায়নি।
আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী গনমাধ্যমকে বলেন, ‘আজ লকডাউনের প্রথম দিন তো, তাই এমনটা ঘটছে। বিষয়টি আমরা দেখছি।’
এর প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয় লকডাউন এলাকার কেউ বাইরে যেতে কিংবা বাইরে থেকে কেউ ওই এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না। তবে স্বাস্থ্যকর্মীসহ জরুরি সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা বের হতে পারবেন।
সংশ্লিষ্ট এলাকার ২০টি প্রবেশপথ চিহ্নিত করে তা বন্ধ করে দিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যে রয়েছে- সিডিএ আবাসিক রোড, কর্নেল টোল রোড, মোস্তফা হাকিম কলেজ রোড, সাগরিকা বিটেক রোড, কৈবল্যধাম রোড, নিউ মনছুরাবাদ রোড, সাগরিকা আলিফ রোড।
প্রাথমিকভাবে ২১ দিনের জন্য এই লকডাউন চলবে বলে জানিয়েছে সিটি করপোরেশন। এ সময় প্রধান সড়কে দূরপাল্লার গাড়িতে যাত্রী ওঠা-নামা করতে পারবে না। রাত ১২টার পর পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করতে পারবে। আর এই এলাকায় সেনা টহল থাকবে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।
লকডাউন শুরুর আগে রাত ১১টায় সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি ওয়ার্ড কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমে লকডাউনের সার্বিক বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট লোকজনের সঙ্গে আলোচনা করেন।
সিটি মেয়র বলেন, ‘লকডাউনে এলাকার বাসিন্দারা ঘরে থাকবেন। তাদের প্রয়োজন মেটাতে পাশে থাকবে সিটি করপোরেশন।’
সাধারণ মানুষকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। এলাকার মানুষের সার্বিক সহায়তার জন্য মহল্লা ভিত্তিক সেচ্ছাসেবক টিমও কাজ করবে।
কন্ট্রোল রুমের নম্বরগুলো হলো- ০৩১-৪৩১৫১৩৬৮, ০৩১-৪৩১৫১৩৬৯, ০৩১-৪৩১৫১৩৭০, ০৩১-৪৩১৫১৩৭১, ০৩১-৪৩১৫১৩৭২, ০১৮১৯-০৫৬৮৪৪ এবং ০১৮১১-৮৮৭০৮৪।
লকডাউন কার্যকর থাকাকালীন স্থানীয় বাসিন্দারা যেকোনো সমস্যা এসব নম্বরে ফোন করে জানাতে পারবেন।
্করোনা সংক্রমণের মাত্রা বিবেচনা করে চট্টগ্রাম নগরের ১১টি জোনকে ‘রেড জোন’ হিসেবে শনাক্ত করেছে। লকডাউন বাস্তবায়ন করবে সিটি করপোরেশন। তাই সিটি করপোরেশনের নিজেদের সুবিধার জন্য এটিকে ১০ ওয়ার্ডে ভাগ করে নিয়েছে।
এলাকাভিত্তিক এই লকডাউন ব্যবস্থায় দেশে প্রথম লকডাউন করা হয় রাজধানী ঢাকার উত্তর রাজাবাজার। সেখানে কিছুটা সফলতা আসায় রাজধানী ঢাকা্র দুই সিটি করপোরেশনের আরো ৪৫টি এলাকাকে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব এলাকায় লকডাউন কার্যকর করতে বিভিন্ন কার্যক্রম চলছে।
এর বাইরে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম এবং গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীর বিভিন্ন জায়গা রেডজোনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।