মোহাম্মদ মহসিন খান, নাগরপুর (টাঙ্গাইল)প্রতিনিধিঃ নাগরপুরে ধলেশ্বরীর ভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। নদীতে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন শুরু হলেও গত কয়েকদিনে এর তীব্রতা বেড়েছে।
এ সময় ভাঙনে বেশকিছু পরিবার বসতভিটা হারিয়েছেন। তা ছাড়া প্রতিনিয়ত নদীতে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি। অপর দিকে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নদীপাড়ে সবজি চাষীরা। ভাঙনের তীব্রতা বাড়ায় নদীপাড়ের মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এছাড়াও চলছে ঘর-বাড়ি সরিয়ে নেওয়ার কাজ। সরেজমিনে জানা যায়, গত কয়েক বছরে উপজেলার মোকনা ইউনিয়নের আগ দিঘলীয়া এলাকার শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বাজারঘাট ও অর্ধশতাধিক ঘর-বাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে।
নদী গর্ভে বাপ-দাদার ও স্বামীর রেখে যাওয়া একমাত্র বসতবাড়ি ও ফসলি জমি হারিয়ে অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। নতুন করে হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মন্দির, ও পোষ্ট অফিসসহ আরোও অর্ধশতাধিক বসত ভিটা ভাঙনের কবলে রয়েছে। তাদের অভিযোগ গত কয়েক বছর ধরে নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বললেও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।
এ বিষয়ে আগ দিঘলীয়া এলাকার রতন চন্দ্র মন্ডল (৭৫) বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই ধলেশ্বরীর ভাঙন দেখছি। কিন্তু ভাঙনে ভাঙনে এভাবে আমার বাড়িও গ্রাস করবে ভাবিনি। নতুন করে মন্দির, ঘরসহ ভিটাবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় প্রায় তিন লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে। ভাঙন রোধে মাননীয় সরকারের পদক্ষেপ অচিরেই না নিলে একে বারে নিঃস্ব করে ফেলবে সর্বগ্রাসী এ ধলেশ্বরীর। এখন ভাঙনের শব্দে ঘুম আসে না। করোনা নয় আমরা ধলেশ^রীর ভাঙন থেকে রক্ষা চাই।
আগ দিঘলীয়ার মনির হোসেন (২৬) বলেন, গত কয়েক বছর আগে নদী গর্ভে বসতভিটা নদীতে বিলীন হওয়ায় নতুন করে নদী পাড়ের চরে ঘরবাড়ি তোলে এবার ৮০ শতাংশ জায়গায় বিভিন্ন জাতে সবজি চাষ করা হয়েছে। সবজি চাষে প্রায় ৭০-৭৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আগাম বন্যায় গাছের গোড়ায় পানি আসায় গাছ হলদে হয়ে যাচ্ছে। হয়তো গাছ গুলো এবার মারা যাবে। এভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে থাকলে স্ব-পরিবারে পথে বসতে হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, নদী ভাঙন রোধে টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ওই নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। হাসপাতাল ভাঙনের কবলে বিধায় জরুরী ভিত্তিতে ওই ভাঙন রোধে বরাদ্দের জন্য অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।