মুক্তখবর24.কমঃ আমিনুল হক শাহীন, চট্টগ্রাম: দেশের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য জ্বালানি তেল আমদানি, পরিশোধন ও বিপণন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একমাত্র রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) সমগ্র দেশে নিরবচ্ছিন্নভাবে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ৩টি কোম্পানির পদ্মা, মেঘনা এবং যমুনা মাধ্যমে জ্বালানি সরবরাহ করে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে বর্তমানে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন ধরণের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে রয়েছে বহি: সমুদ্র কুতুবদিয়া হতে মাদার ভেসেলে (বড় জাহাজ) আমদানিকৃত অপরিশোধিত তেল পাইপ লাইনের মাধ্যমে পতেঙ্গাস্থ ইষ্টার্ণ রিফাইনারি লি: (ইআরএল) এ পরিবহণের জন্য সিংগেল পয়েন্ট মুড়িং (এসপিএম) প্রকল্প, ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপ লাইন প্রকল্প, কুর্মিটোলা-কাঞ্চন ব্রিজ, রুপগঞ্জ পর্যন্ত জেট-এ-১ পাইপ লাইন প্রকল্প, ইষ্টার্ণ রিফাইনারি লি: (ইআরএল) ২য় ইউনিট প্রকল্প এবং ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপ লাইন প্রকল্প উল্লেখযোগ্য। গত ১ বছরে বর্ণিত প্রকল্পসমূহের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে এবং যথাসময়ে প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়িত হবে মর্মে সংশ্লিষ্ট সূত্র হতে জানা যায়। জ্বালানি তেল পরিমাপ ও সরবরাহ সংক্রান্ত প্রচলিত পদ্ধতির আধুনিকায়ণের লক্ষ্যে চট্টগ্রামস্থ প্রধান স্থাপনাসহ দেশের সকল ডিপোর অপারেশনাল কার্যক্রম অটোমেশনাল প্রক্রিয়ায় করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে ফলে সঠিক পরিমাপ নিশ্চিতকরনসহ সিস্টেম লজ সর্বনি¤œ পর্যায়ে থাকবে মর্মে বিপিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এছাড়া, কর্তৃপক্ষের দৃঢ় পদক্ষেপে বিভিন্ন বিপণন কোম্পানির পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও এসএওসিএল নিকট বিপিসির দীর্ঘ দিনের পাওনা গত ২০১৯ সালের ফেব্রæয়ারি মাসে আদায় করা সম্ভব হয়েছে এবং সরকারের বিভিন্ন পাওনা (ভ্যাট/ট্যাক্স) পরিশোধ করা হয়েছে। বিমানের নিকট দীর্ঘ দিনের বকেয়া পাওনা আদায়েও উল্লেখ্যযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে মর্মে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। জ্বালানি তেলের মূল্য আদায়ে পেমেন্ট অটোমেশনাল কার্যক্রমও হাতে নিয়েছে বিপিসি। বর্তমানে উক্ত কার্যক্রম গ্রহণের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। জ্বালানি তেলের মূল্য আদায়ে পেমেন্ট অটোমেশনাল কার্যক্রম বাস্তাবায়িত হলে রাষ্ট্রীয় এ প্রতিষ্ঠানটির যাবতীয় আর্থিক লেনদেনে অধিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। জনবল কাঠামো অনুযায়ী বিপিসি ও এর অধীনস্থ কোম্পানীসমূহে প্রায় ৫০০০ জন জনবল থাকলে বর্তমানে প্রায় ৪,৫০০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ নিরলসভাবে দেশে জ্বালানি তেলের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে কাজ করে যা্েচছ। যাহা বর্তমান সময়ে আরো বৃদ্ধি করা হয়েছে । তাদের দক্ষতা উন্নয়নে সম্প্রতি বিপিসি’র নিজস্ব জায়গায় শহরের জামালখাঁনস্থ জয়পাহাড়ে ব্রিটিশ আমলের একটি পরিত্যক্ত বাড়ী সংস্কার করে একটি আধুনিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গত ২৬ সেপ্টেম্বর তারিখে চালু করা হয়েছে। এছাড়া, আমদানিকৃত জ্বালানি তেল জাহাজ হতে খালাস, পরিবহন, ট্যাংকে রিসিভ, পরিমাপসহ যাবতীয় কাজে অধিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার লক্ষ্যে বিপিসি কর্তৃপক্ষ কর্মকর্তাগণকে সার্বক্ষনিক মনিটরিং এর দায়িত্ব প্রদান করছে। উল্লেখ্য যে, জ্বালানি তেলের ভেজাল রোধ, পরিমাপ সঠিক প্রদানে দেশের সকল ফিলিং ষ্টেশন, ডিলার এর কার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য বিপণন কোম্পানি, বিপিসি, বিএসটিআই, স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধির মাধ্যমে দেশব্যাপী অভিযান জোড়দার করা হয়েছে। জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে বিপিসির বর্তমান কার্যক্রম উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে মর্মে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টগণ আশা প্রকাশ করছেন। ৪০ বছরের পুরাতন প্রতিষ্ঠানটির বর্তমানে চট্রগ্রাম ও ঢাকাতে নিজস্ব কোন অফিস ভবন নাই। যে সমস্যার সমাধানে চট্রগ্রামের জামালখানস্থ জয়পাহাড় স্টেটে নিজস্ব ভবন নির্মানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যার জন্য দেশী ও আন্তরজার্তিক প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে টেন্ডার আহŸান করা হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়াটি বর্তমানে যাচাই বাছাই প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া ঢাকাতে একটি নিজস্ব অফিস ভবন নির্মানের প্রচেষ্টা চলছে । বিপিসি’র আওতাধীন অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের নিকট পাওনা প্রায় ৭৫০০ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে। আদায়কৃত অর্থ যথাযথ বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি গত এক বছরের আয় বৃদ্ধি করেছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা । ঢাকাস্থ কাওরান বাজারের বিটিএমসি ভবনে সুসজ্জিত অফিস প্রতিষ্ঠানটি গত এক বছরের সাফল্যেরই অংশ । আর এ সকল সাফল্য প্রতিষ্ঠনটির বর্তমান চেয়ারম্যান জনাব সামছুর রহমান (সরকারের সচিব) মহাদয়ের উদ্ভাবনী দক্ষতা, সফল ব্যবস্থাপনা ও যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে সম্ভবপর হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠান সূত্র নিশ্চিত করেছে ।
Discussion about this post