জাতির পিতাকে হত্যা করলেও তার নীতি-আদর্শকে ঘাতকরা মুছে ফেলতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।সিসিসি আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
শনিবার সকালে টাইগারপাসে অস্থায়ী নগর ভবন প্রাঙ্গনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়।
এরপর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুজন বলেন, “সেদিন ঘাতকদের উদ্দেশ্য ছিল অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ভেঙে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ভুলুন্ঠিত করা। কিন্তু সেদিন জাতির পিতাকে হত্যা করলেও উনার আর্দশ, নীতিকে মুছে ফেলতে পারেনি ঘাতকরা।
“বঙ্গবন্ধু সারাজীবন রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাই ছিল জাতির পিতার স্বপ্ন। তাই জ্ঞান বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে আমাদের বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে।”
সভায় সিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, প্রধান প্রকৌশলী লেফটেন্যান্ট কর্নেল সোহেল আহমেদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুফিদুল আলম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সেলিম আকতার চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে সিসিসি বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ক্যাম্প পরিচালনা করে।
নগরীর সিসিসি জেনারেল হাসপাতাল, মেমন মাতৃসদন হাসপাতাল, নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র, দাতব্য চিকিৎসালয় থেকে রোগীদের সেবা দেওয়া হয়।
এদিকে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নগরীর মুনছুরাবাদ কর্ণফুলী কমিউনিটি সেন্টার চত্বরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাবেক মেয়র মনজুর আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে দেশ আরও সমৃদ্ধ হত।
“বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। ৪৫ বছর চলে গেল আমরা বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি। এ দেশ হারিয়েছে স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনককে। তিনি ওপারে থাকলেও বেঁচে আছেন আমাদের মাঝে। তার বিয়োগ অপূরণীয়।”
আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল, গাছের চারা রোপন, দুস্থদের মধ্যে খাবার ও নগদ টাকা বিতরণ করা হয় এই আয়োজন থেকে
নগর যুবলীগের পক্ষ থেকে শোক দিবসের মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগ আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা ও ফরিদ মাহমুদসহ নেতৃবৃন্দ।
নগর ছাত্রলীগের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে সংগঠনের কার্যালয়ে স্বেচ্ছায় রক্তদান, রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, ডায়াবেটিস পরীক্ষা এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সেবা দেওয়া হয়।
সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে বাঙালি জাতির অস্তিত্বকে চিরতরে বিনাশ করার অপচেষ্টা চালানো হয়। তাই ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে নিচিহ্ন করতে চেয়েছিল।
নগর ছাত্রলীগ সভাপতি ইমরান আহাম্মেদ ইমুর সভাপতিত্বে এবং মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরের সঞ্চালনায় ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়
নগরীর হালিশহর করোনা আইসোলেশন চট্টগ্রামেও শোক দিবসের কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। এতে সেন্টার পরিচালনাকারী, রোগী, চিকিৎসক, স্বেচ্ছাসেবক ও সেবিকারা অংশ নেন।
আলোচনা সভায় আইসোলেশন সেন্টারের প্রধান সমন্বয়ক নূরুল আজিম রনি বলেন, এ জাতি অগাস্টেই পথ হারিয়েছিল। বাঙালির ইতিহাসের কলঙ্কিত অধ্যায় রচিত হয়েছিল সেই অগাস্টে। কিন্তু হায়েনার দল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে থামাতে পারেনি। সেই স্বপ্ন পূরণের পথেই এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ।
বক্তব্য রাখেন সেন্টারের মুখপাত্র আইনজীবী জিনাত সোহানা চৌধুরী ও পরিচালক গোলাম সামদানী জনি
এছাড়া জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেনসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা ইউনিটের নেতৃবৃন্দও শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
ট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন স্বাধীনতা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সংসদ বৃহত্তর চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ।
এসময় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ, চট্টগ্রাম কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রধান রেজাউল করিম, ইংরেজি বিভাগের প্রধান এএমএম মুজিবুর রহমান, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড.বিপ্লব গাঙ্গুলী, উপ বিদ্যালয় পরিদর্শক আবুল বাশার, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ নাথ, উপ সচিব মোহাম্মদ বেলাল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া হাজী মুহাম্মদ মহসনি কলেজ ক্যাম্পাসে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
Discussion about this post