ধর্ষণ বিরোধী লংমার্চ-সমাবেশে ফেনীতে দুর্বৃত্তরা হামলা

ধর্ষণের বিরুদ্ধে নয় দফা দাবিতে ঢাকা থেকে নোয়াখালীর উদ্দেশে লংমার্চকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শহীদ মিনার এলাকায় সমাবেশে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়।

শনিবার দুপুরে ফেনী শহরের শান্তি কোম্পানি মোড় এলাকায় তাদের ওপর হামলা চালায় একদল যুবক।

বিষয়টি নিশ্চিত করে লংমার্চে থাকা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি আল কাদরি জয় সাংবাদিকদের বলেন, ফেনীতে সমাবেশ শেষে নোয়াখালীর উদ্দেশে বাসে ওঠার সময় লাঠিসোঁটা ইট নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

লংমার্চকারীরা বলেন, ধর্ষণের বিরুদ্ধে সমাবেশ ও প্রচারাভিযান করে ফেনী জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের দিকে লংমার্চ যাওয়ার সময় কুমিল্লা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কয়েকজন সন্ত্রাসী লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে। এ সময় লংমার্চকারীদের মধ্যে হৃদয়, শাহাদাত, অনিক, যাওয়াদসহ ১০ জন আহত হন।

তাদের অভিযোগ, সমাবেশে সরকার ও ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে বক্তব্য দেওয়ায় ক্ষমতাসীনরা ক্ষিপ্ত হয়ে লংমার্চকারীদের ওপর হামলা করে। হামলাকারীরা সরকার দলের লোক। পুলিশ পাহারায় সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে।

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ফেনী শহর শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ফেনীতে সমাবেশের পরিচালক পংকজ দেবনাথ সূর্য বলেন, এ হামলা ন্যক্কারজনক। আমাদের কর্মীদের হামলা করে দমিয়ে দিতে চায় সন্ত্রাসীরা।

ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কালচারাল সেক্রেটারি ঋদ্ধ অনিন্দ্য বলেন, কে বা কারা আমাদের ওপর হমলা চালিয়েছে সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত না।

তিনি আরো বলেন, ‘সমাবেশ চলাকালে আমাদের সহযোদ্ধারা দেয়াল চিত্র আঁকছিলেন। সে সময় পুলিশ অতর্কিত হামলা চালায়। এতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। এরপর যখন আমরা মিছিল নিয়ে বাসের দিকে রওনা হই তখন কয়েকজন আমাদের মিছিলে ভেতরে ঢুকে হামলা চালায়। তারা আমাদের বাস ভাঙচুর করে। আমাদের সহযোদ্ধা ছাড়াও একজন গাড়ি চালক আহত হয়েছেন।’

‘এখান থেকে দাগনভূঞা গিয়ে আমাদের সমাবেশ করার কথা ছিল। আমরা খবর পেয়েছি সেখানে ছাত্রলীগ-যুবলীগ অবস্থান নিয়েছে। যে কারণে আমরা সেই সমাবেশ বাতিল করেছি। এই মুহূর্তে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা আমাদের প্রধান কাজ। চৌমোহনীতে আমাদের সমাবেশ এখনো অনিশ্চিত, তবে মাইজদীতে আমরা সমাবেশ করবো’— বলেন ঋদ্ধ।

এর আগে শহরের শহীদ মিনারের পাশে দোয়েল চত্বরে সমাবেশ চলাকালে স্থানীয় সংসদের ছবির উপর লাল রং লাগিয়ে নেতিবাচক বক্তব্য লেখাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে লংমার্চকারীদের বাগ্‌বিতণ্ডার ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে ফেনী মডেল থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন বলেন, হামলাকারীদের প্রতিহতের চেষ্টা করেছে পুলিশ। ঘটনার পর লংমার্চে অংশকারীদের নোয়াখালী পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী গণজাগরণ তৈরির লক্ষ্যে শুক্রবার নোয়াখালীর পথে এই লংমার্চ শুরু করে ‘ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’। শনিবার বিকালে নোয়াখালী শহরে সমাবেশের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শেষ হবে