তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘রাজনৈতিক ও চিন্তার দৈন্যের কারণেই বিএনপি বঙ্গবন্ধুকে স্বীকার করতে ব্যর্থ এবং তারা ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করেছিল।
কিন্তু একদিন সময় আসবে তারাও বঙ্গবন্ধুকে স্বীকার করবে।’
বুধবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
জাগপা সভাপতি একেএম মহিউদ্দিন আহম্মেদ বাবলু’র সভাপতিত্বে ও দলের সাধারণ সম্পাদক এড. মো: মজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান আলহাজ শেখ সালাউদ্দিন সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে সভায় বক্তৃতা দেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কোনো দলের নয়, বঙ্গবন্ধু পুরো জাতির । বাংলাদেশের সাথে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের বাঙালি থেকে শুরু করে উপমহাদেশ এবং সমগ্র বিশ্বের বাঙালির কাছে বঙ্গবন্ধু একজন পূজনীয় নেতা।
বঙ্গবন্ধু তাই সমগ্র বাঙালির। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের দেশে বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল বঙ্গবন্ধুকে স্বীকার করতে চায় না। এটি তাদের ব্যর্থতা, রাজনৈতিক দৈন্যতা, চিন্তার দৈন্যতা। এই কারণেই তারা ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করেছিল।
স্কুলের দপ্তরিকে স্কুলের হেডমাস্টার বানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিল। স্কুল ছুটি হবে কখন সেটি ঠিক করে হেডমাস্টার ঘন্টা বাজায় দপ্তরি। তাহলে কি দপ্তরি স্কুল ছুটি দিল না হেডমাস্টার স্কুল ছুটি দিল? –
এই অপচেষ্টা তারা করেছিল। আজকে তারা ধীরে ধীরে ইতিহাসের পাতা থেকে ঝরে যাচ্ছে। এটিই বাস্তবতা, এটিই ইতিহাসের রূঢ় সত্য। একদিন সময় আসবে তারাও বঙ্গবন্ধুকে এবং বঙ্গবন্ধুর অবদানকে স্বীকার করবে।’
বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশ রচনা করে গেছেন তাই নয়, বঙ্গবন্ধু একটি উন্নত সমৃদ্ধি বাংলাদেশ রচনার পথে দেশ এগিয়ে নিয়ে যখন যাচ্ছিলেন, তখনই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘
আজকের প্রজন্মের অনেকে হয়ত জানে না, আমার এই কথাটি কতটা বস্তুনিষ্ঠ- ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয়, তখন দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.৪ শতাংশ।
তিনি যখন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনই যারা বাংলাদেশ চায়নি, যারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি, সেই আন্তর্জাতিক অপশক্তি এবং তাদের দেশীয় দোসরদের চক্রান্তে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়।’
হাছান বলেন, ‘আমাদের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, যার ধমনিতে শিরায় বঙ্গবন্ধুর রক্ত¯্রােত প্রবহমান, তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করেননা,
জিজ্ঞাসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করেননা। যদি তাই হতো, তাহলে তিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের বিচার স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে করতেন। কিন্তু তা করেননি। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার তিনি সাধারণ আদালতে করেছেন। এটি শেষ করতে ১২ বছরের বেশি সময় লেগেছে।’
উন্নত অবকাঠামোর পাশাপাশি উন্নত জাতি গঠনের জন্য রাষ্ট্রের সমস্ত অনাচার বন্ধ হওয়া দরকার এবং সম্প্রতি যে ধর্ষণসহ এধরনের যে অনাচারগুলো হয়েছে, তা বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইন সংশোধন করা হয়েছে,
পার্লামেন্ট অধিবেশনের জন্য অপেক্ষা না করে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে সেই আইন কার্যকর করা হয়েছে এবং যাতে এই অনাচার বন্ধ হয় সেজন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে এই আইন সংশোধন করা হয়েছে, জানান তথ্যমন্ত্রী।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, অথচ আমি কাগজে-টেলিভিশনে জানলাম, বিএনপি এটি নিয়েও সমালোচনা করেছে। এটির কারণ একটাই হতে পারে, তারা যারা নিজেরা
ক্ষমতায় থাকাকালে এই অনাচারের সাথে যুক্ত ছিল এবং তখন কিভাবে নারী ধর্ষণ হয়েছিল সবাই জানেন, সেকারণেই কি তারা এই আইন সংশোধনের সমালোচনা করছে -এটিই আজকে জনগণের প্রশ্ন। তার অর্থ দাঁড়ায়, বিএনপি চায় না দেশ থেকে অনাচার দূর হোক।
Discussion about this post