উজ্জ্বল রায় নড়াইল জেলা প্রতিনিধি■ (২৬,নভেম্বর) : নড়াইলে ঘন-ঘন দুদকের অভিযোন দুর্নীতি আর দুর্নীতি মধুমতি নদীর তীরে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগে জেলার ঘাঘা গ্রামে ১১কোটি টাকা ব্যয়ে মধুমতি নদীর তীরে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে দীর্ঘস‚ত্রিতা ও অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে দুদকের টীম ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় জানান, দুদকের হটলাইন ১০৬ নম্বরে অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন যশোরের উপ-পরিচালক নাজমুছ সাদাতের নেতৃত্ব একটি টীম টীমের সদস্যবৃন্দ ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে ঘাঘা এলাকার দুটি পয়েন্টে ১১ কোটি ৮৮হাজার ৯শ ৯৭ টাকা ব্যয়ে ৪১০মিটার নদীর তীর সংরক্ষণের কাজ চলতি বছরের ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু, এখন পর্যন্ত মাত্র ৩০% কাজ শেষ হওয়ায় তদন্ত টীম অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এসময় নদীভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থরা কাজের ধীরগতির কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরিদর্শনকালে নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ওয়াজেদ আলী চাকলাদার, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী হাফিজুর রহমান সহ ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিলেন। নড়াইলের ঘাঘা গ্রামে ১১কোটি টাকা ব্যয়ে মধুমতি নদীর তীরে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ।
এর আগে, নড়াইলের মধুমতি-নবগঙ্গা নদীতে মাত্রাতিরিক্ত পানি বেড়েছে ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ায়। নিচু এলাকা যেমন প্লাবিত হচ্ছে, তেমনি তীব্র ভাঙন দেখা গেছে মধুমতি-নবগঙ্গার বিভিন্ন এলাকায়। ভাঙনের কবলে পড়ে কয়েকবছরে মধুমতি নদীর ঘাঘা, মলিকপুর, শিয়েরবর, মাকড়াইল নবগঙ্গা নদীর করগাতি, ছোট কালিয়া, শুক্তগ্রামসহ ১৫টি পয়েন্টে হাজারো বসতঘর জমিসহ নানা স্থাপনা নদীগর্ভে চলে গেছে। ফারাক্কার প্রভাবে নতুন করে ভাঙতে শুরু করেছে নবগঙ্গা নদীর শুক্তগ্রাম-হাচলা আর মধুমতি নদীর তেতুলিয়া এলাকাসহ কয়েকটি এলাকা।
গত ৪/৫ দিনে শুক্রগ্রাম এলাকার বাজার এলাকায় নবগঙ্গা নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। হঠাৎ ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে শতাধিক বাড়িঘর ও ফসলি জমি। ভাঙন অব্যহত থাকলেও ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতায় গৃহহীন হয়েছে কালিয়া উপজেলার কয়েক শ’ বাসিন্দা। এখনও ভাঙন আতঙ্কে এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। গত বছরে নবগঙ্গার তীব্র ভাঙনে বিলীন হয়েছে শুক্তগ্রাম এলাকার পালপাড়া, আশ্রয়ন প্রকল্পসহ কয়েক হাজার একর জমি। প্রতিনিয়ত ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নবগঙ্গা পাড়ের হাজারো মানুষ। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে প্রায় শতাধিক বাড়ি-ঘর গাছপালাসহ ফসলি জমি। ভাঙনের ভয়াবহতায় আশপাশের কয়েক এলাকার মানুষেরা আতঙ্কিত হয়ে ঘরবাড়ি, দালান-কোঠা, গাছপালা কেটে সরাতে শুরু করেছে। শুক্রগ্রামের প্রবীণ ইলিয়াস আলী জানান, গত ৩৫ বছরে নবগঙ্গা নদীতে এমন পানি দেখিনি। এই পানি বাড়ার কারণে
কয়েকদিনে আমাদের বাড়িটি এক রাতেই নদীর মধ্যে চলে যায়। পানি উন্নয়ন বোর্ড এখন যে বালির বস্তা ফেলছে তা নদীতে যাচ্ছে, ভাঙনে কোনো কাজে আসছে না। অভিযোগ আছে নবগঙ্গার বিভিন্ন অংশে চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই ভাঙনের আশঙ্কা থাকলেও স্থানীয়দের কোনো আবেদনে সাড়া দেয়নি জনপ্রতিনিধি কিম্বা পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা। ভাঙনের মধ্যে নদী থেকে বালি তুলে তা ভরে জিও ব্যাগ ফেলায় ব্যস্ত থাকলেও তা পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। ভাঙনের কবলে পড়ে বাস্তুহারা মানুষের শেষ সম্বল বাড়ি সরানোর কাজে ব্যস্ত থাকলেও প্রশাসনের লোকেরা তাদের খবরও নিচ্ছেন না, মানুষের খাবারও জুটছে না ঠিকমতো। নবগঙ্গার ভাঙনে গ্রামটির বহু পরিবার সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। ভাঙনের শিকার অসহায় পরিবারগুলো বাজারে, নদীর পাড়ে, রাস্তার পাশে ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
নদীর পাড়ে খোলা আকাশের নিচে আবার রাস্তার ওপরে ছড়ানো ছিটানো ভাঙনের শিকার লোকদের ভাঙা বাড়ির চাল, আসবাবপত্র। কোথায় গিয়ে আশ্রয় নেবেন এমন জায়গা খুঁজছেন সবাই। ওপরে চাল নেই মাটির ভিটার ওপরেই আশ্রয় নিয়েছে কয়েকটি পরিবার। এদের একজন জলমত শেখ বলেন, আমাদের ঘর ভেঙে ফেলেছি গত ৫ দিন ধরে খোলা আকাশে বসবাস করছি, গ্রাম্য লোকেরা কিছু খাবার দিলে তাই খাচ্ছি, আমাদের আর যাবার কোনো জায়গা নেই। কোথায় যাব, কি খাব বুঝে উঠতে পারছি না।
ভাঙনের শিকার চরপাড়ার ষাটোর্ধ্ব তোবারেক শেখ বলেন, তিনবার নদী ভাঙনে বাড়ি-ঘরসহ ৩৫ একর ফসলি জমি নদীতে গেছে। সর্বশেষ ২ একর ৫৬ শতক জমি ছিল বসতবাড়ি। ভাঙতে ভাঙতে এখন মাত্র ১৫ শতক জমি আছে, এখন আমরা নিঃস্ব। গত বর্ষা মৌসুম থেকে তীব্র ভাঙনে নবগঙ্গা নদী গ্রাস করেছে শুক্তগ্রামের প্রায় দেড় শ’ বসতবাড়ি। এবার মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে প্রায় তিন’শ বছরের পুরনো শুক্তগ্রাম বাজার। যেকোনো মূহুর্তে নদীপাড়ের পাকারাস্তাটি ভেঙে গেলে সরকারি স্থাপনাসহ মসজিদ, মন্দির ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নবগঙ্গা নদীর শুক্তগ্রাম এলাকার ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়সারা কাজে কোনো ফল হয়নি। সময়মতো পদক্ষেপ না নেওয়ায় যেকোনো সময় নদীতে বিলীন হবে শুক্তগ্রাম বাজারসহ হাজারো বাড়িঘর। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষে সাফাই গাইলেন বাবরা-হাচলা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন পিকুল,
তিনি বলেন, এটা একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এবারের হঠাৎ ভাঙনে পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি পদক্ষেপ নিয়েছে, আশা করি এই ভাঙন ঠেকানো যাবে।বর্ষা মৌসুমের শুরুতে কাজ না করে ভাঙনের মধ্যে ফেলা জিও ব্যাগ কোনো কাজে আসছে না। অভিযোগ স্থানীয় ঠিকাদাররা জরুরি কাজের ক্ষেত্রে কাজ করতে আগ্রহী না হওয়ায় সময়মতো কাজ শুরু হয়নি। ঠিকাদারদের অভিযোগ, জরুরি (ইমার্জেন্সী ওয়ার্ক) কাজের ক্ষেত্রে ও পাউবো কমকর্তারা ১০ ভাগ পিসি (ঘুস) নেয় বলেই ঠিকাদাররা কাজ করতে চান না। আর তাই বাধ্য হয়েই নির্বাহী প্রকৌশলী নিজেই চেয়ারম্যানের মাধ্যমে জিও ব্যাগ ফেলার উদ্যোগ নেন।এ সকল বিষয়ে জানার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জুলফিকার আলীর সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি প্রথমবার ‘সাইটে আছি, পরে কথা বলব’ বলে এড়িয়ে যান, পরে ফোন করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তার আগে, সাংবাদিকরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে এবার সন্ধান পেলো এতিমখানা ভুয়া এতিম: যার সভাপতি খোদ নড়াইলের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মহোদয় ছাগলের খামারের দেখাশুনা করে এতিম বালিকারা: ভুয়া এতিম সাজিয়ে সরকারি বরাদ্দ আত্মসাতের জমজমাট ব্যবসা চলছে নড়াইলে। এভাবে বছরের পর বছর এতিমের নামে সরকারি টাকা লুটে খাওয়া হচ্ছে জেলার অনেক এতিমখানায়। নড়াইলের অক্লান্ত পরিশ্রম করে সাংবাদিকর জাতির বিবেকরা এবার এমন এতিমখানার সন্ধান পেয়েছে যার সভাপতি খোদ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মহোদয় আনজুমান আরা।
এভাবে বছরের পর বছর ধরে লুটপাট চললেও খোজ রাখেন না তিনি সরকারি জেলা প্রশাসক জানেন’ই না তিনি আবার ওই এতিমখানার সভাপতি। নড়াইলের জেলা প্রশাসন ও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় দিনের পর দিন মাসের পর মাস বছরের পর বছর এতিমের টাকা লুট পাট হলেও সরকারি এতো বড় বরাদ্দ আত্মসাতের দেখার কেউ নেই। সব কিছুকেই অনিয়মে পরিণত করা হয়েছে। যা আজ নড়াইল সদরের চন্ডিবরপুর ইউনিয়নে ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘সীমানন্দপুর গরীবশাহ এতিমখানা ও লিলাহ বোর্ডিং’। ১৯৮৪-৮৫ অর্থবছরে এতিম খানাটি সমাজ সেবা অধিদফতরের মাধ্যমে সরকারি অনুদান পায়। ১৯৮৫ সালে বেসরকারি সংস্থা কারিতাসের সহায়তাপ্রাপ্ত এই এতিমখানায় জেলা পরিষদ থেকেও অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে। কয়েক দফা সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে বেশিরভাগ সময়ে এতিমখানাটি বন্ধ থাকে।
দুটা বড় টিনশেড ভবন থাকলেও এতিমদের থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ১১৪ জন এতিমের নামে প্রতিষ্ঠানটি মাসে ১ লাখ ১৪ হাজার টাকা হিসেবে বছরে মোট ১৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা বরাদ্দ পায়। কিন্তু সরেজমিনে সেখানে প্রকৃত এতিমের কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রতিষ্টানটিতে ৪/৫ জন থাকলেও তারা নিজেদের টাকায় থাকে, খায়। স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষক বলেন, এখানে (লিলাহ বোর্ডিং) রোজার সময় পাশের মাদরাসার কিছু ছাত্র থাকে, নামাজ পড়ে। তারা নিজেদের টাকায় খায়, আবার বাড়ি চলে যায়। এতিমখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি খোদ জেলা প্রশাসক। এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে পরিচালনা কমিটির সদস্যরা এতিমখানা সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের দাওয়াত করে মেজবনি দেন। সে সময় বিভিন্ন মাদরাসা থেকে ছেলে-মেয়েদের এতিম সাজিয়ে উপস্থাপন করা হয়।
জুন মাসে স্থানীয় সাংবাদিকরা এতিমখানা পরিদর্শন করার পর ৫ আগস্ট যথারীতি জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দাওয়াত করে ভোজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইউপির চেয়ারম্যানের নিজের নামে গড়া জেলার সবচেয়ে বড় বালিকা এতিমখানা ‘আজিজুর রহমান ভুঁইয়া বালিকা সমাজসেবা এতিমখানা’ বাড়ির পাশেই অবস্থিত। এই এতিমখানার সুপার রকিবুলের চাচা কাজী আব্দুল কাদের। ১২৭ জন বালিকা এতিমের জন্য এখানকার বার্ষিক বরাদ্দ ১৫ লাখ ২৪ হাজার টাকা। এই এতিমখানার অবস্থাও প্রায় একই রকম। সরেজমিন গিয়ে ১৪ জন শিশুকে দেখা গেলেও তাদের সবার মুখে চছিল কর্তৃপক্ষের শেখানো মুখস্ত বুলি। তাদের সঙ্গে নানাভাবে কথা বলে জানা গেছে, আশপাশের বিভিন্ন এলাকার মেয়েরা এখানে থাকে আর মাদরাসায় পড়ে। বড়জোর ৪০ জন এতিমের তথ্য দিতে পারে কোমলমতি এসব শিশু। নামে ৪০ জন এতিম বালিকা থাকলেও তার মধ্যে মাত্র ২ জন প্রকৃত এতিমের সন্ধান পাওয়া গেছে।
চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের প্রভাবশালী চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান ভুইয়া নিজ নামে প্রতিষ্ঠিত বালিকা এতিমখানার সভাপতি এবং সীমানন্দপুর গরীবশাহ এতিমখানা ও লিলাহ বোর্ডিয়ের সহ-সভাপতি। ইউপি চেয়ারম্যানের প্রভাব খাটিয়ে ওই দুই এতিমখানার সুপারসহ অন্যরা বছরের পর বছর ধরে এতিমের টাকা লুটেপুটে খাচ্ছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। বালিকা এতিমখানার ব্যাপারে স্থানীয়দের বিস্তর অভিযোগ থাকলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চান না। এতিমখানার টাকায় গড়ে ওঠা ছাগলের খামারের দেখাশুনা করে এতিম বালিকারা। সুপার কাজী আব্দুল কাদের এবং তার স্বজনদের বাড়িতে এতিমদের কাজ করানো হয়। শুধু কাদেরের নিজের কাজেই ব্যবহার করা হয় ৫ এতিম শিশুকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরো কয়েকজন স্বীকার করেন এসব কথা। তারা বলেন, সুপারের বাড়িতে মেহমান আসলে এতিমদের নিয়ে আপ্যায়ন করানো হয়। পাট বাছানো, জমির ফসল উঠলে গৃহস্থালীর কাজ করানো হয় এসব শিশুকে দিয়ে। নড়াইল জেলা সমাজসেবা কার্যালয় স‚ত্রে জানা গেছে, সমাজসেবা অধিদফতরের তত্ত¡াবধানে ৩ উপজেলায় মোট এতিমখানার সংখ্যা ৪৩টি। ছোট-বড় এসব এতিমখানায় মোট ১ হাজার ২৬৪ জন এতিমের জন্য মাসে মোট বরাদ্দ দেয়া হয় ১২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। বাৎসরিক বরাদ্দ দেড় কোটি টাকা। ক্যাপিটেশন গ্রান্ড পাবার শর্ত অনুযায়ী প্রত্যেকটি এতিমখানা নিজস্ব অর্থে যতজন এতিম পালন করে তার দ্বিগুণ এতিম থাকলেই কেবল অর্ধেকের জন্য অনুদান পায়। অনুদান প্রাপ্ত অধিকাংশ এতিমখানায় বছরের পর বছর এতিমদের নামে টাকা তুলে মালিক সেজে সুপার নিজের পকেট ভরছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক স্থানীয় কয়েকজন আলেম বলেন, যারা এতিমদের টাকা তুলে খাচ্ছেন তারা চরম গুনাহের কাজে লিপ্ত হচ্ছেন। সকল ভুয়া এতিখানা বন্ধের তাগিদ দিয়েছেন এই আলেমরা। সীমানন্দপুর গরীবশাহ এতিমখানার সুপার কাজী রাকিবুল ইসলাম বলেন, ভাই যেসব অনিয়ম আছে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সব ঠিক করা হবে। আপনি এরপর আসলে সব ঠিকঠাক দেখতে পাবেন। আর ভুইয়া আজিজুর রহমান বালিকা এতিমখানার সুপার কাজী আব্দুল কাদের বলেন, নিয়ম অনুযায়ী আমাদের এতিমখানা চলছে। তবে শিশুদের বাড়িতে কাজ করানোর বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। অপরদিকে চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান ভুইয়ার সঙ্গে এতিমখানা প্রসঙ্গ কথা বলতে চাইলে তিনি প্রথমে এড়িয়ে যান। পরে কিছু অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, এগুলো সব ঠিক হয়ে যাবে। আর এতিম না থাকা প্রসঙ্গে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, দুইভাই একসঙ্গে বসলে সব ঠিক করা যাবে। নড়াইলের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দুটো এতিমখানা সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না উলেখ করে বলেন, আগের কথা বলতে পারব না। তবে আমি এখানে আসার পর নির্দেশনা দিয়েছি ক্যাপিটেশন গ্রান্ড পেতে গেলে প্রকৃতপক্ষে যে কয়জন এতিম আছে তাদের হিসাব করেই দিতে হবে।