টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউপি’র খারাংখালী ৮নং ওয়ার্ডে রাখাইন সম্প্রদায়ের মৎস্য ঘেরে স্থানীয় সন্ত্রাসী সৈয়দ করিম, আবুল কালাম, বাদশা মিয়া কর্তৃক ডেইরী ফার্মের বিষাক্ত বর্জ্য ফেলে মৎস্য খামার ধ্বংসের পায়তারায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত ডেইরী খামার উচ্ছেদের দাবী জানিয়েছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও হিউম্যান রাইটস্ ডিফেন্ডার্স ফোরাম কক্সবাজার।
২১ মে শুক্রবার বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার জেলা সভাপতিপ্রবীন সাংবাদিক ফজলুল কাদের চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় পরিদর্শক দলে ছিলেন প্রথম আলো কক্সবাজার অফিস প্রধান সিনিয়র সাংবাদিক আবদুল কুদ্দুস রানা, হিউম্যান রাইটস্
ডিফেন্ডার্স ফোরাম কক্সবাজার এর আহবায়ক এডভোকেট অরূপ বড়ুয়া তপু, যুগ্ম আহবায়ক এডভোকেট আবদুল শুক্কুর, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ, সাংবাদিক অজিত কুমার দাশ হিমু প্রমুখ।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন কালে বাপা ও এইচআরডিএফ নেতৃবৃন্দরা বলেন- গরুর বিষাক্ত বর্জ্য মৎস্য খামারে ফেলে মাছ নিধন একটি জঘন্যতম অপরাধ। তাছাড়া একটি সংখ্যালঘু পরিবারের আয়ের উৎস এই মৎস্য খামার। এই খামার ধ্বংসের চেষ্টা মানে সংখ্যালঘু পরিবারকে নিপিড়নের সামিল। সুতরাং এই অপরাধ পরিবেশ ও মানবাধিকার লংঘনের সামিল। তাই এই অপরাধে সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিৎ। তৎপ্রেক্ষিতে নেতৃবৃন্দরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতি আহবান জানান। পরে নেতৃবৃন্দরা টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমান ও পরিবেশ অধিদপ্তর, কক্সবাজার এর উপপরিচালক শেখ মোঃ নাজমুল হুদার সাথে কথা বলেন ,এবং মৎস্য খামার সংলগ্ন ডেইরী ফার্মটি উচ্ছেদের দাবী জানান।
ওই দুই কর্মকর্তা, নেতৃবৃন্দকে ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। এর আগে ভুক্তভুগি মৎস্য খামারের মালিক মংবুরী রাখাইন ৩জনকে অভিযুক্ত করে টেকনাফ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। মৎস্য খামারের মালিক মংবুরী রাখাইন জানান, বহু অর্থ ব্যয়ে নিজ স্বত্ব
দখলীয় জমি ও সরকার হতে বন্দোবস্তী প্রাপ্ত জমিতে মৎস্য খামার গড়ে তুলি। কিন্তু সংঘবদ্ধ মাস্তান, সন্ত্রাসী প্রতিহিংসা পরায়ন প্রকৃতির হোয়াইক্যং
ইউপি’র পশ্চিম মহেশখালীয়া পাড়া, ৮নং ওয়ার্ডের মৃত বাঁচা মিয়ার ছেলে সৈয়দ করিম (৩০) এর নেতৃত্বে, আবদু শুক্কুরের ছেলে আবুল কালাম (৩৫) ও বাদশা মিয়া (৩২) গং স্বপরিবারে মায়ানমারে চলে যাওয়া জনৈক মং চালু চৌধুরী গং এর জমিতে এস করিম ডেইরী ফার্ম নাম দিয়ে গরুর ফার্ম গড়ে তোলে। ওই গরুর ফার্মের বিষাক্ত বর্জ্য আমার মৎস্য খামারে পড়ে গত বছর প্রায় ১০ লক্ষ
টাকার মাছ মারা যায়।
এই বিষয়ে ভুক্তভুগী মংবুরী রাখাইন কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বরাবরে ওই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে, পরিবেশ
অধিদপ্তর ঘটনার বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারী ১৭১ নং স্মারকে মেসার্স এস করিম ডেইরী ফার্মের মালিক সৈয়দ করিম কে তিনটি নির্দেশনা দিয়ে চলতি বছরের ২২ মার্চ এর মধ্যে গরুর ফার্মের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন করে প্রমানক দাখিল করার জন্য নির্দেশ দেন। এই
নির্দেশনা পত্র পাওয়ার পরও ওই সৈয়দ করিম, আবুল কালাম ও বাদশা মিয়া অবৈধ বেআইনী সন্ত্রাসীর প্রভাবে কোন কার্যকরী বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট তৈরী করে
নাই, শুকনো গোবর সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেন নাই এবং আবদ্ধ ড্রেইন স্থাপন করেন নাই। মংবুরী রাখাইন আরও জানান- চলতি মৌসুমে ঝড় বৃষ্টি শুরু হলে যে কোন সময় বৃষ্টির পানিতে গরুর বিষাক্ত বর্জ্য মৎস্য খামারের পানির সাথে মিশে গেলে গত বছরের মত ১০ লক্ষাধিক টাকার মাছ মরে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
এ অবস্থায় উপরোক্ত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন মংবুরী রাখাইন।
Discussion about this post