হুজুর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন বিশ্বমানবতার একমাত্র মুক্তির দূত। প্রত্যেক মুসলমান বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পরিবার-পরিজন, স্ত্রী-সন্তান, মা-বাবা এবং ধন-সম্পদের চেয়েও বেশি ভালোবাসেন। রাসূলুল্লাহ (সা.)কে নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসা মুমিনের একান্ত কর্তব্য।
আল কোরআন ও হাদিসের একাধিক বর্ণনায় মুমিনদের রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি গভীর ভালোবাসা স্থাপনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তায়ালার এরশাদ, ‘নবী মুমিনদের কাছে তাদের নিজেদের চেয়েও অধিক ঘনিষ্ঠ।’ সূরা আহজাব, আয়াত ৬।তিনি আরো বলেন, ‘তোমাদের কাছে যদি তোমাদের পিতা তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভাই, তোমাদের পত্নী, তোমাদের গোত্র তোমাদের অর্জিত ধনসম্পদ, তোমাদের ব্যবসা যা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় কর এবং তোমাদের বাসস্থান- যাকে তোমরা পছন্দ কর- আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও তাঁর রাহে জিহাদ করা থেকে অধিক প্রিয় হয়, তাহলে অপেক্ষা কর আল্লাহর (আজাবের) নির্দেশ আসা পর্যন্ত। আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে হেদায়েত দেন না।’ সূরা তওবা, আয়াত ২৪।প্রত্যেক মুসলমানের অন্তরে নবীর প্রতি গভীর ভালোবাসা থাকা ইমানের দাবি। যার মাঝে নবীপ্রেম নেই তার মধ্যে ইমান নেই। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের কেউ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার পিতা-মাতা, সন্তান ও সব মানুষের চেয়ে বেশি প্রিয় হই।’ বুখারি।রাসূলুল্লাহ (সা.) ছিলেন সাহাবিদের কাছে তাঁদের জীবনের চেয়েও প্রিয়। হজরত ওমর (রা.) রসুল (সা.)-কে বললেন, ‘হে রাসূল! আমি আপনাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি তবে আমার নিজের চেয়ে বেশি নয়। রাসূল (সা.) বললেন, আল্লাহর শপথ! তোমার নিজের চেয়েও আমাকে বেশি ভালোবাসতে হবে। তখন ওমর (রা.) বললেন, এখন আমি আপনাকে নিজের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। অতঃপর রাসূল (সা.) বললেন, হে ওমর! তাহলে এখন ঠিক আছে।’ বুখারি।
নিম্নে আরো পড়ুন: যে স্থানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন মহানবী (সা.)
৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল এই দিনে আরবের মরুর বুকে জন্ম হয়েছিলো ইসলাম ধর্মের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর। ১৪ শত বছর আগের এ দিনে পৃথিবীতে এসেছিলেন মানবতার মুক্তির দূত, সর্বকালের সর্ব শ্রেষ্ঠ মহামানব হজরত মুহাম্মদ। অন্যায়, অবিচার, দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে তার আগমন পৃথিবীকে দেয় মুক্তি ও শান্তির সার্বজনীন বার্তা।তাই সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর কাছে দিনটির গুরুত্ব অপরিসীম। দীর্ঘ ২৩ বছরের সংগ্রামের পর মানবজাতির জন্য রেখে গেলেন মহাগ্রন্থ আল কোরআন। যার মধ্যে রয়েছে মানুষের ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তির পথ নির্দেশিকা। মাত্র ৬৩ বছরে পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেও এখনো তার আদর্শে অনুপ্রাণিত পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তর বিশ্ব মুসলমানদের সবচেয়ে বড় তীর্থস্থান মসজিদুল হারাম থেকে সামান্য দূরেই রাসুল (সা.)-এর পিতা আবদুল্লাহর ঘর অবস্থিত। ‘শিআবে আলী’র প্রবেশমুখ হিসেবে পরিচিত জায়গাটি। তৎকালীন সময়ে বনি হাশেম গোত্রের লোকেরা যে জায়গায় বসবাস করতেন সেটিকেই ‘শিআবে আলী’ বলা হতো।ইতিহাসবিদদের মতে, বাবা আবদুল্লাহর যে ঘরে মহানবী (সা.) জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেটি এই জায়গাতেই ছিলো। মক্কায় অবস্থানকালীন সময়ে রাসুল (সা.) এ ঘরেই বসবাস করতেন বলে জানা যায়। যদিও এ সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য কোনো ঐতিহাসিক তথ্য বা প্রমাণ নেই। তবুও মক্কা নগরীতে এটি রাসুল (সা.)-এর জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত।ওসমানি শাসনামলে এ বাড়িটি মসজিদ হিসেবে ব্যবহৃত হত। পরে এখানে একটি লাইব্রেরি স্থাপন করা হয়। সৌদির বিখ্যাত শায়খ আব্বাস কাত্তান ১৩৭১ হিজরিতে ব্যক্তিগত সম্পদ ব্যয় করে এটি নির্মাণ করেন।
মসজিদুল হারামের নতুন সম্প্রসারণ-কার্যক্রমে এই লাইব্রেরিটি অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়েছে। সম্প্রসারণের নতুন নকশা ও মডেল থেকে যতটুকু জানা যায়, এ স্থানে কোনো স্থাপনা তৈরি না করে খালি ও উন্মুক্ত স্থান হিসেবে রাখা হবে। (তথ্যসূত্র: অনলাইন থেকে সংগৃহীত)
Discussion about this post