বিদেশগামী কর্মীদের সুরক্ষার জন্য বীমা পলিসি কর্মসূচির উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে বাধ্যতামূলক এ বীমা পলিসি উদ্বোধন করেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে প্রবাসীকল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
বিদেশগামী এবং প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের সুরক্ষায় দু’ধরনের বীমা পরিকল্প চালু করে গত ২৫ নভেম্বর পরিপত্র জারি করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৪ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবাসী কর্মী বীমা নীতিমালা জারি করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । নীতিমালা অনুসারে প্রবাসী কর্মীদের লাইফ বীমা সুবিধা দিতে বলা হয়।
প্রবাসী কর্মী বীমা নীতিমালা অনুসারে, বিদেশগামী কর্মীদের এই বীমা পরিকল্পে যেকোন বয়সের ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম হার অভিন্ন রাখা হয়েছে। তবে কর্মীদের প্রয়োজনীয়তা ও আর্থিক সামর্থ বিবেচনায় নিয়ে ৫ লাখ টাকা ও ২ লাখ টাকা বীমা অংকের দু’টি বীমা পরিকল্প চালু করা হয়েছে।
বীমা গ্রহণের বয়স ১৮ থেকে ৫৮ বছর। আর বীমার মেয়াদ ২ বছর। তবে ২ বছর বিদেশে অবস্থানকালে নিজ অর্থায়নে আরো ২ বছরের জন্য বীমা পলিসি নবায়ন করা যাবে। বিদেশগামী সকল কর্মীর জন্য ২ লাখ টাকার বীমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর ৫ লাখ টাকা বীমা অংকের পলিসি গ্রহণ ঐচ্ছিক।
পরিকল্প-১ তথা ২ লাখ টাকা বীমা অংকের পলিসির জন্য প্রিমিয়াম দিতে হবে ৯৯০ টাকা। আর পরিকল্প-২ তথা ৫ লাখ টাকা বীমা অংকের পলিসির জন্য প্রিমিয়াম ২ হাজার ৪৭৫ টাকা। উভয় পরিকল্পের ক্ষেত্রে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তহিবল থেকে কর্মী প্রতি সর্বোচ্চ ৫শ’ টাকা দেয়া হবে। বাকী অর্থ কর্মীকে বহন করতে হবে।
বীমার সুবিধা হিসেবে পলিসির মেয়াদের মধ্যে যেকোন কারণে বীমা গ্রাহক মৃত্যুবরণ করলে বীমাকারী ও ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সাথে চুক্তিতে উল্লিখিত বীমা গ্রহীতার বৈধ উত্তরাধিকারীকে বীমা অংকের ১০০ শতাংশ পরিশোধ করা হবে বলে প্রবাসী কর্মী বীমা নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যদিকে দুর্ঘটনাজনিত স্থায়ী ও সম্পূর্ণ অক্ষমতা বা পিডিএবি’র সুবিধা হিসেবে দুর্ঘটনায় আঘাতের ফলে ৯০ দিনের মধ্যে মৃত্যুসহ অন্যান্য ক্ষতি হলে নির্ধারিত বীমা অংক প্রদান করা হবে। এই সুবিধার জন্য বাৎসরিক প্রিমিয়াম নির্ধারণ করা হয়েছে হাজারে সাড়ে ৩ টাকা। অর্থাৎ দু’বছর মেয়াদী ৫ লাখ টাকা বীমা অংকের পলিসির জন্য প্রিমিয়াম দিতে হবে সাড়ে ৩ হাজার টাকা।
তবে বীমা কভারেজ শুরুর ১২ মাসের মধ্যে আত্মহত্যা করলে, এইডস বা এইচআইভি’তে মৃত্যু হলে, উচ্চ ঝুঁকি যেমন মটর রেসিং, পেশাগত বক্সিং, স্কুবা ডাইভিং, হ্যান্ড গ্লিডিং, প্যারাস্যূটিং, ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতা, পর্বতারোহন ইত্যাদির কারণে মৃত্যু হলে বীমা গ্রহীতা কোন বীমা অংকের অর্থ পাবে না।
এ ছাড়াও বীমা কভারেজ শুরুর পূর্ব থেকে বিদ্যমান শর্তাদীতে উল্লেখিত কারণ, অ্যালকোহল বা মাদকের কারণে মৃত্যু, যুদ্ধ, দাঙ্গা, বেসামরিক আন্দোলন বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে মৃত্যু এবং গুরুতর অপরাধের কারণে আইনে মৃত্যুদণ্ড হলেও বীমা গ্রহীতা কোন বীমা অংকের অর্থ পাবে না।
Discussion about this post