বিশেষ প্রতিবেদকঃ১৫জুন
চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়ায় ৭০বছরের পুরানো বড় মৌলভী কবরস্থানে মরদেহ দাফনে চাঁদা আদায়ের প্রতিবাদ এবং চাঁদা ছাড়া মরদেহ দাফন করা হয় সম্বলিত সাইনবোর্ড স্থাপন কালে সশস্ত্র হামলাকারী এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী কুখ্যাত এয়াকুব ও তার বাহিনীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।মঙ্গলবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে বাকলিয়াবাসীর পক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবী জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কবরস্থান প্রতিষ্ঠাতার পুত্র ,ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. ইলিয়াছ বলেন, ১৯৫১সালে বাকলিয়া থানাধীন আব্দুল লতিফ হাটস্থ বড় মৌলভী কবরস্থানটি প্রতিষ্ঠা করেন আমার পিতা । এই কবরস্থানের ভূমিকর আমরাই পরিশোধ করে আসছি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে কবরস্থানটি এলাকার মৃত ব্যক্তিদের দাফনের জন্য উন্মুক্ত ছিল। কিন্তু এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও পুলিশের তালিকাভূক্ত দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী এয়াকুব আলী গত কয়েকমাস ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার এবং উক্ত কবরস্থানে মরদেহ দাফনে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করে আসছিল।
এই জঘন্য কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে পুরো দক্ষিণ বাকলিয়াবাসী প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসী এয়াকুব আলী ও তার দলবল এলাকাবাসীর উপর আরো বেশী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। সর্বেশেষ গত শুক্রবার আমরা এলাকাবাসী মিলে “বড় মৌলভী কবরস্থানে মরদেহ দাফনে টাকার প্রয়োজন নেই” এমন বিজ্ঞপ্তি সম্বলিত একটি সাইনবোর্ড স্থাপন করতে গেলে সন্ত্রাসী এয়াকুব আলী তার সশস্ত্র বাহিনী এলাকাবাসীর উপর শসস্ত্র হামলা চালায়।
সেসময় সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি গুলিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: ইব্রাহীমের ছেলে লিটন সহ ৫জন গুলিবিদ্ধ সহ ২০জন আহত হয়। পরবর্তীতে এ ঘটনায় বাকলিয়া থানায় মামলা দায়ের করা হলেও আসামীরা এখনও ধরাছোয়ার বাইরে রয়েগেছে।
সংবাদ সম্মেলনে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি মো. ইলিয়াছ আরো বলেন, আমার শ্রদ্ধেয় বড় ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইব্রাহীম ছিল বঙ্গবন্ধু হত্যার পরবর্তী প্রথম প্রতিবাদকারী ও কারা নির্যাতিত ব্যক্তি এবং চাকসুর প্রথম ভিপি। গত শুক্রবার সন্ত্রাসী এয়াকুব বাহিনীর হামলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আমার বড়ভাই মো: ইব্রাহীমের ছেলে লিটনও গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে ।
সংবাদ সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মো. ইব্রাহীমের সহধর্মিনী নুর বেগম বলেন, এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী এয়াকুব ও তার দলের সন্ত্রাসীরা সেদিন প্রকাশ্যে গুলি চালিয়েছে। এতে আমার পুত্র লিটনের বুকে গুলিবিদ্ধ হয়। সে এখনও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর সুষ্ঠু বিচার চাই, বলতে বলতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এই বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সন্ত্রাসী এয়াকুব আলী দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা, কিশোর গ্যাং সৃষ্টি, মারামারি, চাঁদাবাজি, কবরস্থানে লাশ দাফনে মোটা অংকের চাঁদা আদায়সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। তার বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। ভয়ে তার বিরুদ্ধে এলাকায় কেউ মুখ খোলার সাহস পায়না বলে জানান তারা। সংবাদ সম্মেলনে অবিলম্বে এয়াকুব আলী গংদের কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্রগুলো উদ্ধার এবং ঐদিন হামলায় জড়িত চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানানো হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড বাকলিয়া থানার আহবায়ক সাইফুল্লাহ মাহমুদ, মহিলা কমিশনার শাহীন আক্তার রুজি, ১৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ইয়াকুব হাজী, আবদুর রহমানসহ প্রমুখ।
Discussion about this post