চট্টগ্রামে আত্মহত্যার প্রবণতা উদ্বেগ জনকঃপারিবারিক কলহের ঘটনায় বেশী

নিজস্ব প্রতিবেদনঃ২১জুন,চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েকদিনে আত্মহত্যা করে  প্রায়  ৭(সাত)জনের প্রাণ গেছে বলে স্ব স্ব থানা ও চমেক মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক এ.এস আই শীলব্রত বড়ুয়া সূত্রে জানা গেছে।

একটি এনজিও অফিসের গবেষনা ও প্রতিনিধিদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে জানান যে, বিগত কয়েক মাসে চট্টগ্রামে উদ্বেগ জনক হারে আত্ম-হত্যার প্রবণতা বেশী হচ্ছে । এই ঘটনা গুলো একান্তই পারিবারিক ও ব্যক্তিগত আক্রোসের কারণে ঘটেছে  বলে জানা যায়। আবার এসব ঘটনার পুলিশ কৃর্তক রিপোট-প্রতিবেদনে ও আত্ম-হত্যার কারণ দেখা গেছে পারিবারিক ও ব্যক্তিগত (প্রেম ঘটিত) কিংবা পরক্রিয়া /আর্থিক লেনদেন ইত্যাদি ইত্যাদি।

গতকয়েক দিন নগরীর বিভিন্ন থানা ,উপজেলায় আত্ম-হত্যার ঘটনা সম্পর্কে  প্রতিবেদনেও পারিবারিক-ব্যক্তিগত কারণে এসব ঘটনা হয় বলে থানা সূত্রে জানান।

বন্দর থানা এলাকাঃ ২০জুন  থানাধীন (৩৮নং ওয়ার্ড) বরখান পাড়াস্থ  জনৈক   আব্দুস সবুরের ছেলে টমটম চালক মোঃ মফিজুর রহমান (৪৫)     নিজ   ঘরে সিলিং ফ্যানের সাথে ফাঁস দিয়ে আত্ম-হত্যা করেছেন বলে নিকটস্থ পুলিশ ফাঁড়ি সূত্রে জানা গেছে। নিহতের বাবা সবুর জানান,  রোববার দুপুরে দিকে তার ছেলে ঘরের দরজা লক করে সিলিং ফ্যানের সাথে ফাঁস দিয়ে আত্ম-হত্যা করেন। এই বিষয়ে পরিবারের কোন অভিযোগ নেই বলে উপস্থিত  পুলিশের সামনে জানিয়েছেন নিহতের পিতা আঃসবুর।
ঐদিন বন্দর জোনের উপ-সহাকরী পুলিশ কমিশনার এম.তারেক আজীজ উপস্থিত হয়ে বন্দর থানার পুলিশ টিমের   সমন্বয়ে ঝুলন্ত লাশটি নিচে নামান।
পতেঙ্গা থানাঃ ১৯ জুন ,রিফাইনারি গেইট এলাকার  (৪০নং ওয়ার্ডস্থ-হাদি পাড়ায় )একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে মোঃ কাউছার খান জিহাদ(২১) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় রিফাইনারি গেট এলাকার ৫ নং গলির  একটি বাড়িতে থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।নিহত কাউছার ফেনী সদর দৈলিয়া ফজলুল করিম মেম্বার বাড়ি মুস্তাফিজুর রহমানের ছেলে।
চমেক হাসপাতাল’র পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক শীলব্রত বড়ুয়া বলেন,পতেঙ্গায়   ৫নং গলির ভিতর  ১টি বাড়িতে এঙ্গেলের সাথে গলায় রশি দিয়ে ঝুলন্ত কাউছার নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।পরে পুলিশ খবর পেয়ে চমেক হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আকবরশাহ্ থানাঃ ২০ জুন  বেলা ১টায় রেলওয়ে হাউজিং সোসাইটির পাশের রোডে বিষ খাওয়া অজ্ঞাত এক যুবককে পড়ে থাকতে দেখলে স্থানীয়রা ৯৯৯- এ ফোন করে পুলিশকে খবর দেয়। তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় যুবককে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিয়ে যায়।

থানা সহকারী উপ- পরিদর্শক মো. জুবাইয়ের  সেখানে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর মারা যায় যুবক। তবে তার নাম পরিচয় জানা যায়নি।  চ.মে.ক  হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সূত্রে জানা যাই,১৪ নম্বর ওর্য়াডে ভর্তি করানো বিষ পান করার এক অজ্ঞাত যুবককে  হাসপাতালে আনা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে   মৃত্যু ঘোষনা করেন।
কর্ণফুলী উপজেলাঃ ১৬ জুন  চট্টগ্রামের উপজেলা  কর্ণফুলীতে পৃথকভাবে এক যুবক ও এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার রাতে এবং বৃহস্পতিবার দুপুরে আত্মহত্যার ঘটনা দুটি ঘটে।
নিহতরা হলেন-বড়উঠান ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মৌলানা মুহিবুল্লাহ খান বাড়ীর মৃত দুদু মিয়ার ছেলে আবুল কাসেম (২৭) ও জুলধা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের হানিফ তালুকদার বাড়ির ইব্রাহিম খলিলের মেয়ে ইয়াছিন আক্তার মুক্তা (১৪) ।কর্ণফুলী শাহমীরপুর পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মো. নাছির উদ্দিন বলেন, জুলধা ৪নং ওয়ার্ডের হানিফ তালুকদার বাড়ির ইব্রাহিম খলিলের মেয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মাহত্যা করেছেন মেয়েটি পাশের বাড়ির দিদার নামের একটি ছেলের সাথে প্রেম করত। এদিকে গত মঙ্গলবার রাতে কর্ণফুলী এলাকা থেকে বিষপান করা এক যুবককে ভর্তি করা হয় সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে কার মৃত্যু হয় ।  চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির  উপ-পরিদর্শক   শীলব্রত বড়ুয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এছাড়া গত ১সপ্তাহে উপজেলার পটিয়া, আনোয়ারা এবং ইপিজেড থানা এলাকায়(২৩মে) যুবকের আত্মা হত্যার ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনেও উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। 
এ প্রসঙ্গে বন্দর জোনের উপ সহাকরী পুলিশ কমিশনার এম.তারেক আজীজ ২০জুন, রোরবার দুপুরে একটি লাশ নামানো কালে বলেন, দেশে পারিবারিক ও সামাজিক অচেতনতা এবং মনোমালিন্যতা-লেন-দেন সংক্রান্ত বিষয়য গুলো চরম ভাবে  মানবিক বিপর্যয় হওয়াতে জেত বা আক্রোশে আত্ম-হত্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
সমাজ সেবক, সংগঠক ও মনোবিষেজ্ঞ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মতে, চলতি মহামারি করোনায়  কাজ/পেশায় হ্যাম্পার ও আর্থিক দন্যতা ও আত্ম-হত্যার প্রবণতা বাড়তে পারে ধারণা করে বলছেন। আর বেশ কয়েকটি এনজিও প্রতিনিধিরা সে বিষয়ে কিছুটা এক মত পোষন করে পারিবারিক, প্রেম/ বিরহ/ লেনদেন সমিতির লোন বা আক্রোশ বিষয়ে গণ সচেতনা সৃষ্টি সহ আইনী কাঠামো আরো গতিশীল করা উচিত বলে মত প্রকাশ করেন।
যাই হোক  সকল আত্ম-হত্যায় মানিবক বিপর্যয়  রোধ জরুরী বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিক সমাজ ।
ছবি ও তথ্য সংগ্রহেঃ সাংবাদিক মুঃ বাবুল হোসেন বাবলা,চট্টগ্রাম।