কক্সবাজার শহরে ‘সেবা মেডিকেল হল’ নামের কথিত এক চিকিৎসা কেন্দ্রে অভিযান চালিয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল। এসময় নকল ওষুধ সরবরাহ ও চিকিৎসার নামে প্রতারণার দায়ে চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে ভুয়া কবিরাজসহ পাঁচজনকে আটক করেছে অভিযানকারীরা। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রূদ্ধশ্বাস অভিযানে তাদের আটক করা হলে শনিবার বিকেলে তাদের গণমাধ্যমের কাছে উপস্থাপন করা হয়।
আটকরা হলেন, কক্সবাজার সদরের জালালাবাদ এলাকার মৃত মোজাহের আহম্মেদের ছেলে কথিত ডা. মহিদুল ইসলাম (৩৩), চট্টগ্রামের রাউজান বাগোয়ান এলাকার মো. হানিফের ছেলে বর্তমান কক্সবাজার বাসটার্মিনাল লারপাড়ার এলাকার বাসিন্দা মো. ইয়াছিন (২৫), কক্সবাজার শহরের কালুরদোকান এলাকার রফিক উদ্দীনের ছেলে নাসির উদ্দিন (২৯), উখিয়ার কোটবাজার চৌধুরী পাড়ার শামসুল আলমের ছেলে মো. ওসমান (১৯) এবং বগুড়ার গাবতলী এলাকার মো. জাকিরের ছেরে মো. শাহীন (৩০)। তাদের চেম্বার থেকে বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ জব্দ করা হয়।
কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মানস বড়ুয়া জানান, টেকনাফের হোয়াইক্যং ডেইঙ্গারকাটা এলাকার নাসিমা খাতুন (৪৫) নামে এক নারী ডিবি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন যে, কক্সবাজার শহরের বাজারঘাটা বার্মিজ মার্কেট এলাকার আব্দুল্লাহ গ্যারেজ বিল্ডিং এর ৩য় তলায় ‘সেবা মেডিকেল হল’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা নিতে যান তিনি। তাকে নানাভাবে ভুলিয়ে পরীক্ষা-নিরিক্ষা ও ভেজাল ওষুধ দিয়ে ১৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় ওই প্রতিষ্ঠানের কথিত চিকিৎসক ও কর্মচারীরা। ১৫ হাজার টাকা প্রদানের পরও তারা আরও ১৫ হাজার টাকার জন্য চাপ দেয়। এতে নিরূপায় হয়ে তিনি ডিবি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন।
তিনি আরও জানান, অভিযোগ পেয়ে তার (মানস বড়ুয়া) নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি দল সেবা মেডিকেল হলে অভিযান চালায়। অভিযানে কথিত ডা. মহিদুলসহ ৫ জনকে আটক করা হয়। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ জব্দ করা হয়। অভিযানকালে আরেক কথিত কবিরাজ বাজারঘাটার কসতুরী হার্বাল দাওয়াখানার সোলাইমানসহ আরও কয়েকজন পালিয়ে যায়। তাদের চেম্বার থেকেও বিপুল পরিমাণ ভেজাল ওষুধ জব্দ করা হয়।
বিভিন্ন লোকজনের উদ্ধৃতি দিয়ে মানস বড়ুয়া জানান, সেবা মেডিকেল হল এবং কসতুরী হার্বাল দাওয়াখানার মতো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ভুয়া চিকিৎসা এবং নকল ওষুধ বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। তারা দালাল নিয়োগ করে গ্রাম থেকে শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা নিরক্ষর লোকজনকে প্রলোভনে ফেলে তাদের প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যায়। সেখানে নানাভাবে ভুলিয়ে, ভয়ভীতি দেখিয়ে নকল ওষুধ ও কথিত চিকিৎসসেবার বিনিময়ে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়। কিন্তু ভুক্তভোগীরা কোনো সুফল পায় না। ওইসব প্রতিষ্ঠানের পেশাদার দালালরা কক্সবাজার সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালের আশেপাশে অবস্থান করে নিরীহ এসব লোকজনকে ফাঁদে ফেলেন।
আটক এবং পলাতক কথিত চিকিৎসকসহ প্রতারকদের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়ের করে তাদের থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানান পরিদর্শক মানস বড়ুয়া।
Discussion about this post