হোসেন বাবলা:: ৩আগস্ট,চট্টগ্রাম
গতকাল ১দিন বৃষ্টির মাত্রা কিছুটা কমলেও আজ (মঙ্গলবার)ভোর ঠিক সাড়ে ৫টা থেকে একটানা সাড়ে ৪ঘন্টার বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রামে শহরের অলিগলি সহ প্রধান প্রধান সড়কে। কোথাও হাটু সমান আবার কোথাও উঠেছে কোমর পর্যন্ত বৃষ্টির পানি।
নগরীর বহদ্দারহাট, ২নং ষোলশহর গেট,ওয়াসা-টাইগারপাস ,দেওয়ানহাট ,আগ্রাবাদ-কাস্টম, বন্দর-সল্টগোলা ক্রসিং থেকে ইপিজেড-পতেঙ্গা স্টিল মিল -কাঠগড় এলাকায় বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে নিচু এলাকার অধিকাংশ ঘর-বাড়ী। এই অসহনীয় জলযটের কারণে শিল্প কলকারখানা,গার্মেন্টেস ফ্যাক্টুরীর অনেক শ্রমিক কাজে যোগদান করতে পারেন নি। আবার অনেকেই ভিজা কাপড় নিয়ে কর্মস্থলে যাওয়ায় মিল কতৃপক্ষ দুপুরের পর ছুটি দিতে দেখা গেছে।
৩ আগষ্ট মঙ্গলবার ভোর-সকালে প্রতিটি অলি-গলিতে গিয়ে দেখা যায় হাটু পরিমান পানির এই দৃশ্য আর নিরীহ জনসাধারণ পানি সেচন/ঘর থেকে পানি পরিস্কার করার কঠিন দৃশ্য। অনেক ভুক্তভোগি বলেন,কোরবানীর ২দিন আগে শুরু হওয়া বৃষ্টি গতকয়েকদিন থেমে আজ ভোর থেকে আবারো একটানা বৃষ্টিতে বাসা-বাড়ী,উঠান পথ-ঘাট সর্বত্রই পানি আর পানি জমে অভাবনীয় দূর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ।
টানা বৃস্টি প্রসঙ্গে পতেঙ্গা আবহাওয়া দপ্তরের অফিসিয়াল জানান, মঙ্গলবার ভোর থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি প্রায় ১৮৮ মিলি. মিটার থেকে ১৯০ মিলি. পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়। এই বৃষ্টি আরো ২/৩দিন থাকতে পারে, সেই সাথে ঝড়ো বাতাস সহ বজ্র বৃষ্টির আশংকা রয়েছে।
এদিকে ঢাকা আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে যে, বৈশ্বিক আবহাওয়া উষ্ঞতা,জলবায়ূর পরিবর্তণ হবার কারণে সারা দেশে ও দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ নিচু এলাকায় মৌসুমী বায়ূর বিরুপ আচারণে প্রবলবেগে ও একটানা কয়েক দিন বৃষ্টি বলয় বা টানাবৃষ্টি সহ বজ্রবৃষ্টি হবার সম্ভবনা রয়েছে। এসময় নদ-নদী,সাগরে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩/৪ফুট পানি-জলাচ্চোস হবার কথাও জানান। এসময় নদী-বন্দর সমূহ কে ২নং সর্তক সংকেত দেখতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবারের টানা বৃষ্টি বন্দর-ইপিজেড-পতেঙ্গা এলাকার অধিকাংশ নিচু এলাকার ঘর-বাড়ী বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে বলে জানা গেছে। এলাকার খেজুরতলা,মুসলিমাবাদ জেলে পাড়া,
ডেইল পাড়া-নাজির পাড়া,মাইজপাড়া, দাইয়া পাড়া, মধ্যমপাড়া, দক্ষিণ পাড়া,সিমেন্ট ক্রসিং পশ্চিমে আলীশাহ রোড়, আকমলআলী রোড়, আলীশাহ খামার বাড়ী, বন্দরটিলা জেলেপাড়া ও আলীশাহ নগর,নিউ মুরিং আংশিক, নয়ারহাট,
৩৮নং ওয়ার্ডের কোরবানী সওঃ আলী পাড়া.কালু সওদাগর পাড়া, এছাক সওঃপাড়া,আলী মাঝির পাড়া,মাইজ পাড়া, ধুম পাড়া,বাকের আলী ফকির টেক(বরখান পাড়া),১নং সাইট,২নং সাইট(হিন্দু পাড়া), সাচি চৌধুরীর পাড়া,মুন্সিপাড়া,আনন্দবাজার রোড়,জেলে পাড়া,৩৭ এর মুনির নগরপাড়া,ব্যারিস্টার সুলতানের বাড়ী এলাকা,ছোট হুজরের মসজিদ সংলগ্ন মাজারবাড়ী এলাকা,এম.এ আজিজের বাড়ী এলাকা
,৩৬এর নিমতলা, কাউন্সিলর মুর্শেদের বাড়ী এলাকা, মহিলা কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়রের বাড়ী এলাকা, পশ্চিম গোসাইলডাঙ্গা,৩নং ফকির হাট গলির মাজার এলাকার নিচু অংশ বৃষ্টি ওজোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশী খারাপ অবস্থা আগ্রাবাদ মা ওশিশু হাসপাতাল এরিয়া, যাহা বিগত৩/৪দিন যাবত হাটু পানিতে তলিয়ে আছে।
এদিকে সিইপিজেড এলাকার আশ-পাশের অংশেম্যাক্স কোম্পানির কাজের কারনে রাস্তার মধ্যে ছোট ছোট গর্ত থাকায় বৃষ্টির পানি জমে এবং ড্রেনের ময়লা স্তপ হয়ে গাড়ী চলাচল করতে পারছে না আর বৃষ্টির পানিগুলো সেই খাদে জমে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে।
এব্যাপারে এলাকাবাসীরা জানান,বর্তমানে রাস্তার নির্মাণ কাজ হচ্ছে,সড়কের দুই পাশে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়াতে পাশের নালাগুলো ঠিক মত পরিস্কার না থাকায় বৃষ্টির পানি নামতে পারছে না। ফলে বেশি ভুগান্তিতে পড়ছে গার্মেন্টস শ্রমিকরা। ইপিজেড পতেঙ্গা কাঠগড় এলাকা সবচেয়ে বেশী পানিতে ডুবে গেছে ।
এসব এলাকার স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধির সাথে কথা হলে, তারা জানাই-লকডাউন আর বৃষ্টির কারণে সেবক কম আর কাজ শেষ করতে না করতেই প্রবল জোয়ার আর বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়াতে বৃষ্টি পানি জমে গেছে। তবে বৃষ্টি কমলে আমরা পুরো সেবক টিম নিয়ে খাল-নালা ড্রেনের ময়লা পরিস্কার করলে পানি কমে যাবে।
এছাড়া কিছু অংশে মানুষের অসেচতনায় খাল-নালা ড্রেনের ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার করতে না পারাতেও বৃষ্টির পানি নামতে পারছে না।ফলে কয়েক ঘন্টার বৃষ্টি হলেই এলাকার নিচু অংশ তলিয়ে যাই।আর খালের পাড়ে অবৈধস্থাপনা উচ্ছেদে কাউন্সিলর টিম সর্বদা সজাগ দৃষ্টি রাখছেন বলে কাউন্সিলর হাজী মোরশেদ আলী জানিয়েছেন।
খবরের ছবি- মোস্তাফিজুর রহমান
Discussion about this post